বাক্স

অলংকরণ: নাইমুর রহমান

সময়টা ২১১৭ সাল।

বাংলাদেশি জামশেদ আনোয়ার আর আমেরিকান ড্যানি উইলসন; দুজনেই এসেছে একটা গুরুত্বপূর্ণ মিশনে। এখন তাদের অবস্থান সৌরজগতের সীমা থেকেও দেড় শ আলোকবর্ষ দূরে টিপি-১৯৮ নামের একটা গ্রহের কক্ষপথে।

সবকিছুই ঠিক ছিল। এখানে কাজ করার পরিবেশও চমৎকার। খাদ্য-রসদ রয়েছে পর্যাপ্ত। সপ্তাহে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থাও আছে।

অভিযানের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি রাখা আছে মালামাল কক্ষে। তবে সমস্যাটা হলো, পৃথিবী থেকে প্রতিটি যন্ত্রই আলাদা আলাদা পার্টস হিসেবে পাঠানো হয়েছে। আর সেগুলো জোড়া লাগানোর নিয়মাবলি হিসেবে রয়েছে কিছু বিদঘুটে ক্যাটালগ।

ড্যানি বলল, ‘হায় হায়! দেখেছ জামশেদ, প্রতিটা যন্ত্র একদম খুলে খুলে পাঠানো হয়েছে? আর ক্যাটালগটা কোন গাধা লিখেছে, কে জানে!’

জামশেদ মাথা নাড়ল, ‘কিন্তু এ ছাড়া অবশ্য আর কিছু করারও ছিল না। এত দূর থেকে সবকিছু জোড়া লাগিয়ে পাঠানোটাও তো সহজ নয়, তাই না? তা ছাড়া জায়গাও বেশি লাগে এ ক্ষেত্রে। তাই না?’

‘হুঁ,’ বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল ড্যানি। ‘তা ভুল বলোনি। এ ছাড়া হয়তো আর কোনো উপায়ও ছিল না।’

‘তবে ড্যানি, সুখবর আছে একটা।’

‘কী?’

‘এইমাত্র পৃথিবী থেকে একটা বার্তা পেলাম। এসব খুচরা যন্ত্রপাতি জোড়া লাগানোর জন্য একটা রোবট পাঠানো হবে। সব ধরনের লেটেস্ট প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি পজিট্রনিক রোবট ।’

‘কবে?’

‘আসতে আসতে তো আরও দুই সপ্তাহ লেগে যাবে।’

দুই সপ্তাহ পরের কথা

মালামাল কক্ষে অদ্ভুত স্পেসস্যুট পরে দাঁড়িয়ে আছে জামশেদ আর ড্যানি। দুজনই খানিকটা উদ্বিগ্ন। উত্তেজনায় বুক ঢিপঢিপ করছে। একটা বাক্স বেরোচ্ছে কার্গো যান থেকে। খুব ধীরে ধীরে। এই বাক্সের মধ্যেই আছে সেই পজিট্রনিক রোবট।

পুরো বাক্সটা কক্ষেঢোকার পরে হামলে পড়ল ওরা দুজনেই। প্রয়োজনীয় পাসওয়ার্ড দিয়ে বাক্সটা খোলার পরে দুজনের চোখই ছানাবড়া...

সাত শ একান্নটি পার্টস পাঠিয়েছে বাক্সে। সেগুলো জোড়া লাগিয়ে বানাতে হবে পজিট্রনিক রোবট। আর... সঙ্গে দুই শ পৃষ্ঠার একটি ক্যাটালগ।

(আইজ্যাক আজিমভের ইনসার্ট নব ‘এ’ ইন হোল ‘বি’-এর ছায়া অবলম্বনে)