আজগুবি স্বপ্ন

সময়টা ঠিক মনে নেই। তবে সেদিন ছিল প্রচণ্ড বৃষ্টি। আকাশে ঘন কালো মেঘের অবিরাম ছোটাছুটি। মাঝেমধ্যে গুড়গুড় শব্দ শোনা যায়। বাতাসে ভেজা গন্ধ। থেমে থেমে হালকা বাতাস বইছে। আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে সন্ধ্যার পশ্চিম আকাশ দেখছিলাম। ডুবন্ত সূর্যের লাল আভায় আকাশ নতুন সাজে সেজেছে। বৃষ্টির ফোঁটায় টবে রাখা গাছগুলো সতেজ দেখাচ্ছে। শরীরে লাগছিল বৃষ্টির ছাট। কী আরামদায়ক শীতল অনুভূতি! সঙ্গে সঙ্গে চোখ দুটো ঘুমে জড়িয়ে আসে। জেগে থাকতে পারছিলাম না। বারান্দার চেয়ারটায় বসে পড়লাম। তারপর নিজের অজান্তেই হারিয়ে গেলাম ঘুমের রাজ্যে।

চারদিকে পানি আর পানি। একটু পরপর নীল রঙের বিশাল ঢেউ ভেসে আসছে। আমি পানিতে কোনোরকমে ভেসে আছি। পানি অসম্ভব ঠান্ডা। হাত-পা ক্রমেই অসাড় হয়ে যাচ্ছে। কোনো চিন্তা করতে পারছিলাম না। দূরে দেখা যাচ্ছে বিশাল জাহাজ। আমি প্রাণপণ চিৎকার করছি...বাঁচাও, বাঁচাও, আমাকে বাঁচাও। জাহাজটা এদিকেই এগিয়ে আসছে। হঠাৎ আমার চোখে কে যেন টর্চের আলো ফেলল। চোখ ভয়ানক জ্বালা করছিল।

কেউ একজন বলল, ‘তাড়াতাড়ি ওঠো। কুইক। আমরা বেশিক্ষণ থাকতে পারব না।’

আমি জাহাজটায় ওঠার চেষ্টা করছি। পারছি না। উত্তাল ঢেউয়ে ভেসে যাচ্ছি। হঠাৎ আমার ঘুম ভাঙল। দেখি আম্মু রাগী রাগী চোখে সামনে দাঁড়িয়ে। প্রায় ধমকের সুরে আম্মু বলল, ‘এই অসময়ে ঘুমাচ্ছিস কেন? কখন থেকে ডাকছি, কোনো সাড়াশব্দ নেই। কেউ এমন মরার মতো ঘুমায়?’

আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। তাই আম্মুকে বললাম, ‘ওই জাহাজটা কই?’

আম্মু আবারও বলল, ‘এই, বাজে না বকে বাথরুমে যা। বৃষ্টি তোর শরীর ভিজিয়ে ফেলেছে। ফ্রেশ হয়ে পড়তে বস।’

আমি আর কোনো কথা বললাম না। অবাক চোখে তাকিয়ে রইলাম।