সাক্ষাৎকার
প্রকৃতির রহস্য সব সময় আমাকে আকৃষ্ট করেছে — তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী জাহিদ হাসান
১৯৮৬ সালে বাংলাদেশে এক অদ্ভুত হরতাল হয়েছিল। কোনো রাজনৈতিক কারণে নয়, এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর জন্য সেদিন রাস্তায় নেমে এসেছিলেন তাঁর বন্ধু আর শিক্ষকেরা। ওই শিক্ষার্থী মাত্র দুই নম্বর কম পাওয়ায় এ বিক্ষোভে নেমেছিলেন তাঁরা। কারণ, এ দুই নম্বরের জন্য বোর্ডের প্রথম হওয়া থেকে পিছিয়ে পড়েছিলেন ওই শিক্ষার্থী। সবার কথার মান রাখতেই ১৯৮৮ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিকে সারা বাংলাদেশে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম হন তিনি। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের পর স্ট্যানফোর্ড লিনিয়ারের গবেষণাগার পেরিয়ে পৌঁছে গেলেন আইনস্টাইনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রিন্সটনে। এই মানুষটির আবিষ্কৃত কণা ‘ভাইল ফার্মিয়ন’-এর হাত ধরেই শুরু হতে যাচ্ছে ইলেকট্রনিকস জগতের নতুন যুগ—টপো-ইলেকট্রনিকস। আর কেউ নন, বলছি বর্তমান সময়ের আলোচিত বাংলাদেশি তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী জাহিদ হাসানের কথা। তিনি এসেছিলেন বাংলাদেশে। ২০১৫ সালের ২৫ নভেম্বর প্রথম আলো আয়োজিত এক আড্ডায় মুখোমুখি হয়েছিলেন কিশোর আলোর সাক্ষাৎকার দলের। সেই দলে ছিল সরকারি বিজ্ঞান কলেজ সংযুক্ত হাইস্কুলের দেবোপম সূত্রধর ও ধানমন্ডি গভ. বয়েজ হাইস্কুলের আলিমুজ্জামান।
প্রশ্ন :
আপনার স্কুল ছিল ধানমন্ডি গভ. বয়েজ হাইস্কুল। সেই স্কুলের স্মৃতি মনে পড়ে?
স্কুলজীবনের বেশ কিছু স্মৃতি মনে পড়ে। পরীক্ষাভীতি ছাড়া স্কুলজীবনের আর সবকিছুই ছিল নতুন করে চিনে নেওয়ার মতো একটা রোমাঞ্চকর ব্যাপার। স্কুলের সবচেয়ে মজার সময় কেটেছে স্কাউটিংয়ে। স্কাউট ক্যাম্পের জন্যই প্রথম পরিবার ছাড়া ঢাকার বাইরে গিয়েছিলাম। তখন ট্রেনে ময়মনসিংহ গিয়েছিলাম স্কাউট ক্যাম্পে। ট্রেনের সেই সবজির বস্তাবোঝাই বগিতে বন্ধুদের খালি গলার গান আমায় এক অন্য জগতে নিয়ে গিয়েছিল।
প্রশ্ন :
মানুষ একটা কথা বলে, স্কুল পালালেই রবীন্দ্রনাথ হওয়া যায় না। আপনি কি কখনো স্কুল পালিয়েছেন?
ধানমন্ডি গভ. বয়েজে পড়ার সময় আমার টেবিল টেনিসের নেশা হয়ে যায়। তখন ক্লাস বাদ দিয়ে টেবিল টেনিস কয়েক দিন খেলেছিলাম। আসলে এসব নিষিদ্ধ জিনিস থেকেও অনেক কিছু শেখার আছে।
প্রশ্ন :
ধানমন্ডি গভ. বয়েজ হাইস্কুলের পর ঢাকা কলেজ। এরপর অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়। আর এখন প্রিন্সটন। এত বড় রাস্তায় হেঁটে আসার পেছনের গল্প কী? কখন থেকে স্বপ্নের শুরু?
(একটু চিন্তিত) ভাবতে গেলে আসলে প্রতিটি ধাপই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃতির রহস্য সব সময় আমাকে আকৃষ্ট করেছে। আমার কাছে প্রকৃতির আশ্চর্যজনক সবকিছুই ছিল জানার এক বিশাল জগৎ। আমার ইচ্ছা ছিল এমন এক গল্প বলা, যা সবার কাছে নির্দ্বিধায় সত্য হবে। এখন আমি গল্প বলতে পারি। আমার গল্পের ভাষা হয়তো অনেকে সহজে বুঝতে পারে না, কিংবা গল্পের চরিত্রগুলোকে সামনাসামনি দেখতে পায় না। তবু তাদের অস্তিত্বকে আমি প্রমাণ করতে পারি। কারণ, আমি তাদের প্রকৃতির রহস্যের গল্প বলি। ছোট্ট এক টুকরো চুম্বক সব সময় উত্তর-দক্ষিণ বরাবর থাকে দেখে মনে হতেই পারে, এখানে একটা ভূত আছে, যে সব সময় উত্তর-দক্ষিণ দিকে থাকতে ভালোবাসে। কিন্তু আমি সেই ভূতের পরিচয়কে সবার সামনে যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারি। আমার দীর্ঘ ২০ বছরের শিক্ষকজীবনে শুধু গল্পই বলে গেছি। আর তারা কোনো প্রশ্ন ছাড়াই আমার গল্প বিশ্বাস করেছে (তৃপ্তির হাসি)। আমি ছোটবেলা থেকে জাদুর প্রচণ্ড ভক্ত ছিলাম। তাই মানুষকে সৃষ্টিরহস্যের জাদুর গল্প বলা আর তাদের সহজেই বিশ্বাস করাতে পারাটা আমার জন্য একটা বড় পাওয়া। আর এর শুরু আমার মাধ্যমিক স্কুলজীবন থেকেই।
প্রশ্ন :
পদার্থবিজ্ঞান একটি বিস্তৃত বিষয়। মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল, অ্যাস্ট্র-ফিজিকস ছেড়ে কেন তাত্ত্বিক গবেষণাধর্মী পদার্থবিদ্যার দিকে ঝুঁকলেন?
আগ্রহের শুরুটা ছিল সবকিছুর রহস্য জানা নিয়ে। আমাদের এই বিশাল মহাবিশ্বের সূচনারহস্য থেকে শুরু করে শেষ পরিণতি নিয়েই অনেক তর্ক। প্রকৃতির এসব গোপন রহস্য উন্মোচনের একমাত্র উপায় হচ্ছে পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে কাজ করা। কারণ, একমাত্র পদার্থবিজ্ঞানই পারে আমাদের মহাজগতের সব গোপন রহস্য সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে। আমাদের জীবনের প্রতিটি অংশে এ অজানা রহস্যে ঘেরা প্রশ্ন লুকিয়ে আছে। আমার মনে হয়েছিল, একমাত্র পদার্থবিজ্ঞান দিয়েই এসব প্রশ্নের উত্তর বের করা সম্ভব। পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে যখন প্রাথমিকভাবে পড়াশোনা শুরু করেছিলাম, তখন বুঝতে পেরেছি যে বিষয়গুলো আলাদা হতে শুরু করেছে। তাত্ত্বিক গবেষণাধর্মী পদার্থবিজ্ঞান মূলত মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল কিংবা অ্যাস্ট্র-ফিজিকসের তত্ত্বগুলোকে সংঘবদ্ধভাবে ব্যাখ্যা করে।
প্রশ্ন :
প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার নিজের একটি গবেষণা দল আছে। ভবিষ্যতে আপনাদের কি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো যৌথ গবেষণা করার পরিকল্পনা আছে?
হ্যাঁ, ইতিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে আমার এ বিষয়ে আলাপ হয়েছে। তাঁদের প্রশ্নটি ছিল এ রকম, ‘আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা কীভাবে এই গবেষণায় অংশ নিতে পারি?’ আমি নিজে এই বিষয়ে অনেক আশাবাদী। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা প্রচণ্ড মেধাবী। তাদের সঙ্গে এক হয়ে গবেষণা করলে উভয় পক্ষই উপকৃত হবে। এখন বিষয়টি শুধু সময়ের ব্যাপার, যা দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু মতামতের জন্য অপেক্ষা করছে। তা ছাড়া বাংলাদেশে বিজ্ঞান নিয়ে কিছু করার পরিকল্পনা আছে আমার। আমাদের দেশের মানুষের কাছে বিজ্ঞান-বিষয়ক চ্যানেল বলতেই শুধু ডিসকভারি কিংবা ন্যাশনাল জিওগ্রাফি বোঝায়। মূলত সেগুলোর একটিও কোনো গবেষণাধর্মী বিজ্ঞান প্রচারণা করে না; বরং তা শুধুই পপ-সায়েন্স। বাংলাদেশে আমরা এমন একটি বিজ্ঞান চ্যানেল প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যারা মূলত তাত্ত্বিক ও গবেষণাধর্মী বিজ্ঞানের এক সমন্বিত রূপ মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে। একজন গবেষক কীভাবে গবেষণা করেন, জটিল প্রযুক্তির পেছনের গবেষণা, বাঙালি বিজ্ঞানীদের জীবনকাহিনি, পৃথিবীর কোন বিজ্ঞানী কোন গবেষণা করছেন—এসব নিয়েই সাজানো হবে চ্যানেলটি। মূলত বিজ্ঞান শিক্ষার্থী এবং প্রকৃত বিজ্ঞানী ও গবেষকদের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে তাঁদের মধ্যে দৃঢ় সংযোগ তৈরি করতে চাই। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি যত দ্রুত সম্ভব চ্যানেল চালুর ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন।
প্রশ্ন :
আপনার সম্প্রতি আবিষ্কৃত কণার নাম ভাইল ফার্মিয়ন। এর সূত্র ধরে আপনার নোবেল পাওয়ার আশা কতটুকু?
আসলে আমরা বিজ্ঞানীরা কিংবা গবেষকেরা এসব পুরস্কারের জন্য কাজ করি না। আমাদের কাজের মূল লক্ষ্য ও বিষয়বস্তু থাকে নতুন আঙ্গিকে কিছু ভাবার। সবাই যে চিন্তাভাবনা করে, তার বাইরে গিয়ে কিছু করতে পারাই আসলে মূল ব্যাপার। বাদবাকি যেসব পুরস্কার আর সম্মাননা দেওয়া হয়, তার সবই উপরি পাওনা। সব ক্ষেত্রেই তুমি ব্যাপারটি লক্ষ করবে। তুমি শুধু তোমার কাজ মন দিয়ে করে যাও। তুমি তোমার কাজ ঠিকভাবে করতে পেরেছ কি না, সেটাই মূল বিষয়। নিজের কাজে সফলতা পেলে তুমি বাকিটুকু এমনিতেই পাবে। উদাহরণস্বরূপ সত্যেন বোস, মহাত্মা গান্ধী তাঁরা কেউ কিন্তু নোবেল পাননি। কিন্তু তাঁরা তাঁদের কাজ দিয়েই নিজেদের অমর করে গেছেন। আর নোবেল পুরস্কার তো ঠিক অর্জন করা যায় না, এটা দেওয়া হয়। বিজ্ঞানের নোবেলগুলো আবিষ্কারের দীর্ঘ সময় পরে ঘোষণা করা হয়। কারণ, এই সম্মাননার জন্য আবিষ্কারটিকে পৃথিবীর আরও অনেক দক্ষ বিজ্ঞানী-গবেষকেরা মিলে যাচাই-বাছাই করেন, যা অনেক দীর্ঘ প্রক্রিয়া। তাই নিজের ভিন্ন ভাবনাকে দিয়ে যদি জগৎ পাল্টে দিতে পারো, তার থেকে বড় অর্জন আর কিছু নেই।
প্রশ্ন :
এই কণা গবেষণাগারে বানাতে হলো কেন? এটি কি পৃথিবীতে প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া যায় না?
কণাটি প্রকৃতপক্ষে অতীতে অবস্থান করত। ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক ফোর্সের প্রভাবে তখন সব কণাই ছিল ভরহীন, যেগুলোকে ভাইল কণা বলে। কিন্তু হিগস-বোসন কণা আবিষ্কারের পর সব কণা হিগস কণার সঙ্গে ধাক্কা লেগে ভরযুক্ত হয়ে গেছে। আর এই কণা তখন পাওয়া যেত, যখন পৃথিবীর তাপমাত্রা অনেক বেশি ছিল। আর এখন এটি পাওয়া যায়নি, কারণ সব কণা হিগস কণার সঙ্গে ধাক্কা লেগে ভরযুক্ত হয়ে গিয়েছে। তখন আমরা চিন্তা করলাম, অনেক ছোট জিনিস আবার বড় জিনিসের মধ্যে থাকতে পারে। ক্রিস্টাল একটি বড় জিনিস আর এখানে সেই তরঙ্গ তৈরি করা সম্ভব, যা ভাইল তৈরি করতে পারে। কিন্তু কথা হলো ক্রিস্টাল থেকে আমরা এই ভরবিহীন কণা বানাব কীভাবে? একটি কণাকে তখন সেই বিকিরিত তরঙ্গ থেকে মুক্ত রেখে সেটাকে ভরবিহীন করা যায়। অর্থাৎ, সেখানে বিচ্ছিন্ন ওই কণায় কোনো রকম ধাক্কা লাগবে না। এভাবেই কৃত্রিম এই কণা বানানো হয়েছে।
প্রশ্ন :
আপনার আবিষ্কৃত কণা ভাইল ফার্মিয়ন আসলে কী কাজে লাগবে?
আমরা ইলেকট্রনিকস ডিভাইসে তথ্য ও শক্তি সরবরাহের জন্য ইলেকট্রন কণা ব্যবহার করি। যার ফলে ডিভাইসগুলো দ্রুত গরম হয়, কিন্তু তথ্য দ্রুত যায় না। ফার্মিয়ন কণার ভর আসলে অন্যান্য কণার তুলনায় অনেক কম। ফলে এর মাধ্যমে তথ্য দ্রুত প্রেরণ করা সম্ভব। অন্যদিকে ভর কম হওয়ার ফলে রোধের মান কম। তাই ডিভাইস গরম হবে তুলনামূলক কম। সব মিলিয়ে নতুন ধারার এক ইলেকট্রনিকস জগতে প্রবেশ করব আমরা। ফার্মিয়ন কণার উপযোগী ডিভাইস বানাতে প্রয়োজন টপো-ইলেকট্রনিকস, যার গবেষণার জন্য ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ৫০ মিলিয়ন অর্থ বিনিয়োগ করেছে। হয়তো আগামী ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে আমাদের হাতে টপো-ইলেকট্রনিকস প্রযুক্তিতে তৈরি ডিভাইস থাকবে।
প্রশ্ন :
বাংলা ভাষায় লেখা আপনার প্রথম বই ‘এসো ধূমকেতুর রাজ্যে’। আপনার পরবর্তী বাংলা বই কবে পাচ্ছি আমরা?
এ ব্যাপারে ঠিক বলতে পারছি না। কারণ, গবেষকদের জন্য ৩০ থেকে ৪৫ বছর বয়স হচ্ছে কাজ করার সময়, নতুন কিছু আবিষ্কারের সময়। তা ছাড়া বই তখন লেখা যায়, যখন মনে হয় আমার কাছে এমন কিছু আছে, যা মানুষের জন্য উপকারী। তাই আমি আমার এই সময়ে নিজের গবেষণা নিয়ে থাকতে চাই। এরপর যদি বুঝতে পারি যে অন্যদের জানানোর জন্য আমার কাছে পর্যাপ্ত জ্ঞান আছে, তবেই হয়তো আবার কলম ধরব।
প্রশ্ন :
আপনি কী খেতে ভালবাসেন?
পুরানো ঢাকার হাজীর বিরিয়ানি।
প্রশ্ন :
আপনি আপনার গবেষণায় কখনো বাঁধার সম্মুখীন হয়েছেন? হলে কীভাবে সেটা সমাধান করতেন?
হয়েছি। এখনো হই। বিজ্ঞানীরা প্রতিটি গবেষণা করতেই প্রথমবার ব্যর্থ হন। কিন্তু তাই বলে হাল ছেড়ে দিল চলবে না। একাগ্রতার সঙ্গে ওই বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে হবে। তুমি কিছু নিয়ে গভীরভাবে ভাবলে, তার সমাধান যেকোনোভাবে পাবেই। সেটা ঈশ্বরপ্রদত্ত হোক কিংবা তোমার দক্ষতা। শুধু একাগ্রতার সঙ্গে লেগে থাকো, অপেক্ষা করো সেই মুহূর্তের জন্য। নিজের চারপাশের সাধারণ ছবিই তোমাকে নতুন কিছুর অনুভব করাবে।
প্রশ্ন :
কখন আপনার মাথায় চিন্তা এল যে আপনি একজন বিজ্ঞানীই হবেন?
ছোটবেলা থেকেই আমার ভূতের গল্পের প্রতি আকর্ষণ বেশি ছিল। আর ভূতের গল্প যারা বলে, তাদের প্রতিও আকর্ষণ ছিল। কিন্তু আবার যৌক্তিকতারও একটা ব্যাপার আছে। কারণ, ভূতের অস্তিত্বের এখনো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু আমার কাছে এসব কেমন যেন ভুতুড়ে লাগত। যেমন ম্যাগনেটিক ফিল্ড। ম্যাগনেট যেদিকেই রাখা যায় না কেন উত্তর-দক্ষিণ দিক ঘুরেই থাকবে। দুটোকে আলাদা করে ফেললেও তারা উত্তর-দক্ষিণ দিকে থাকবে। ব্যপারটা সুপারন্যাচারাল পাওয়ারের মতনই বলা যায়। আমাদের সময় তো অনেক ভালো মানের মানুষের সান্নিধ্য লাভ করাটা এত সহজ ছিল না। তবে আব্দুল্লাহ আল মুতি ও হারুন অর রশিদ স্যারের বই বেশি ভালো লাগত।
প্রশ্ন :
বাংলাদেশে যেসব কিশোর পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী, তাদের কী পরামর্শ দেবেন?
একটাই কথা বলব, নিজের সৃজনশীলতাকে ছড়িয়ে দাও। বিভিন্ন রকম কাজে নিজেদের মেধাকে ব্যবহার করো। সেখান থেকে নিজের পছন্দের এবং নিজের দক্ষতার বিচারে কাজের প্রকৃতি বেছে নাও। নিজের সৃজনশীলতা দিয়ে বদলে দিতে পারবে সবকিছু। পদার্থবিজ্ঞান দিয়ে চারপাশের জগৎকে বুঝতে চেষ্টা করো। তোমার জ্ঞানের পরিধি বাড়াও, যা তোমাকে নতুন কিছু বিশ্লেষণের ক্ষমতা জোগাবে। পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে কাজ করতে হলে এ ব্যাপারটি অত্যন্ত জরুরি। আর সততার সঙ্গে পরিশ্রম করো। সবার থেকে নতুন করে ভাবতে পারাই আসলে সবচেয়ে বেশি জরুরি।