কখনো ভাবিনি বড় হয়ে তিন গোয়েন্দা লিখব — কাজী শাহনূর হোসেন

কাজী শাহনূর হোসেন
সেবা প্রকাশনী থেকে এখন যে তিন গোয়েন্দা সিরিজ প্রকাশিত হচ্ছে, সেটি লিখছেন শামসুদ্দীন নওয়াব। এটি মূলত কাজী আনোয়ার হোসেনেরই আরেকটি ছদ্মনাম। তবে কাজী আনোয়ার হোসেন ছাড়াও রকিব হাসান, কাজী শাহনূর হোসেন ও কাজী মায়মুর হোসেনের লেখা বই এই ছদ্মনামে প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে তিন গোয়েন্দা সিরিজ শামসুদ্দীন নওয়াব ছদ্মনামে লিখছেন কাজী আনোয়ার হোসেনেরই বড় ছেলে কাজী শাহনূর হোসেন। কথা হলো তাঁর সঙ্গে—

প্রশ্ন :

কখন থেকে আপনি তিন গোয়েন্দা লিখছেন?

তিন গোয়েন্দা এখন ভলিউম আকারে প্রকাশিত হয়। একেকটা ভলিউমে নানা আকারের তিনটি গল্প থাকে। আমি মূলত ভলিউম ৫৯ থেকে লেখা শুরু করেছি। শিগগিরই আসছে ১৩৬ নম্বর ভলিউম। তবে এর মধ্যে বেশ কিছু আছে রকিব চাচার (রকিব হাসান) লেখা।

প্রশ্ন :

তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান তো এখনো তিন গোয়েন্দা লিখছেন?

হ্যাঁ। তিনিই তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা। আমি যখন ছোট, তখন রকিব চাচার তিন গোয়েন্দা পড়েই বড় হয়েছি। শুরুটা হলো ১৯৮৫ সালে। আমি তখন দশম শ্রেণিতে পড়ি। কখনো ভাবিনি বড় হয়ে তিন গোয়েন্দা লিখব। তবে রকিব চাচা এখনো প্রায়ই সেবা প্রকাশনীর জন্য তিন গোয়েন্দা লেখেন। আর ‘কিশোর মুসা রবিন সিরিজ’ নামে অন্য প্রকাশনী থেকে তো লিখছেনই।

প্রশ্ন :

রকিব হাসানের তৈরি তিন গোয়েন্দা আপনি কন্টিনিউ করছেন এখন সেবা প্রকাশনী থেকে। চরিত্রগুলোয় কি কোনো পরিবর্তন এসেছে?

না, একদমই না। তারা আগে যেমন ছিল, এখনো তেমনই আছে। এখনো কিশোর নিচের ঠোঁটে চিমটি কাটে, মুসা খাইছে বলে ওঠে।

প্রশ্ন :

আপনার প্রথম লেখা তিন গোয়েন্দা কোনটি?

ড্রাকুলা-দুর্গে তিন গোয়েন্দা। এটা লিখেছিলাম ২০০৩ সালে। তবে সেটা প্রকাশিত হয়েছিল রকিব হাসান নামে। আর শামসুদ্দীন নওয়াব নামে আমার লেখা প্রথম প্রকাশিত বই নিশির ডাক। ২০০৪ সালে প্রকাশিত।

প্রশ্ন :

বড় হয়ে কি আপনি লেখকই হতে চেয়েছিলেন?

লেখক হতে চাইনি এটা নিশ্চিত। আমার বাবা কাজী আনোয়ার হোসেনের কারণেই আমার লেখালেখিতে আসা। কোনো একটা লেখা লিখে তাঁকে দিতাম। তিনি এডিট করে ঠিকঠাক করে দিতেন। তবে আমি সম্ভবত শুধুই ব্যবসায়ী হতে চেয়েছিলাম। আর আছে না, পাইলট, বিজ্ঞানী—এসবে আমার কোনো আগ্রহ ছিল না কখনোই। আমি ঘরকুনো স্বভাবের মানুষ। ঘরের বাইরে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা ছিল না, এখনো নেই।

প্রশ্ন :

তিন গোয়েন্দা যেখান থেকে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করে, আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেসের কাল্পনিক রকি বিচ। সেখানে কি যাওয়ার ইচ্ছে হয়েছে কখনো?

না, একদমই না। ওই যে বললাম না আমি ঘরকুনো মানুষ। দেশের বাইরে যাওয়ার আমার কোনো ইচ্ছা নেই।

প্রশ্ন :

তিন গোয়েন্দা নিয়ে কিশোর-কিশোরীদের পাগলামি...

প্রতিদিন প্রচুর ফোন পাই। এই যে দেখেন এই মেয়েটা (সামনে লাল কালিতে কাগজে লেখা একটা নাম দেখিয়ে)—মৌরী নামের এক কিশোরী, সে একটু আগে ফোন দিয়েছে। তার নাম যেকোনোভাবেই হোক আগামী কোনো এক তিন গোয়েন্দায় কিশোর, মুসা বা রবিনের বন্ধু হিসেবে দিতে হবে বা অন্য কোনোভাবে থাকতে হবে। পাঠকদের আরও কত আবদার!

প্রশ্ন :

আপনার প্রিয় তিন গোয়েন্দা...

১৩৪ নম্বর ভলিউমের রাজা আর্থারের গুপ্তধন। দারুণ একটা কাহিনি।

প্রশ্ন :

তিনটি চরিত্রের মধ্যে কি আলাদা করে কোনো চরিত্রের প্রতি আপনার দুর্বলতা আছে?

হ্যাঁ। রবিন আমার সবচেয়ে প্রিয়। আমাকে যদি বলা হতো আমি কী হতে চাই, তাহলে বলতাম, আমি তার মতো পড়ুয়া আর গবেষকই হতে চাই।

(কিশোর আলোর আগস্ট ২০১৫ সংখ্যায় প্রকাশিত)