ভূতও ভয় পাই না, প্রেতও ভয় পাই না — জয়া আহসান

চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বর্তমানে নিয়মিত অভিনয় করছেন বিভিন্ন ধারাবাহিক এবং এক পর্বের নাটকেও। ব্যতিক্রমী নানা চরিত্রে অভিনয় করে তাঁর বহুমুখী প্রতিভার ছাপ রাখার মাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছেন ভক্তদের হৃদয়ে। শুধু তা-ই নয়, অর্জন করে নিয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ আরও অজস্র পুরস্কার। মডেলিংয়ের মাধ্যমে মিডিয়া জগতে আসা জয়া তাঁর কর্মজীবনের উষালগ্নে একটি সংগীত স্কুল পরিচালনা করেছিলেন। একটা সময় সংবাদপত্রের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। এখন পুরোদস্তুর অভিনেত্রী বনে গেলেও একই সঙ্গে একটি অনলাইন পত্রিকার পরিচালকের ভূমিকা পালন করছেন। মায়ের ভাষ্যমতে, গুনিন এই অভিনেত্রী ছোটবেলায় ছিলেন বেশ শান্ত। বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে দুষ্টুমির মাত্রাটাও বাড়ছিল বলে ঢাকার লিটল অ্যাঞ্জেলস স্কুলে পড়ার পর মা-বাবা পাঠিয়ে দেন টাঙ্গাইলের ভারতেশ্বরী হোমসে। সেখানে প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শেষ করে ভর্তি হন ঢাকার অগ্রণী স্কুলে। সেখান থেকে এসএসসির পাট চুকিয়ে উইমেন্স ফেডারেশন কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ইডেন কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনার ওপর স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়া শেষ করেন। কোলাহল খুব একটা পছন্দ নয় বলে প্রায়ই একা থাকেন। তাঁর জীবনের নানা মজার মজার তথ্য-ঘটনা জানাতে জয়া আহসান মুখোমুখি হয়েছিলেন কিশোর আলোর সাক্ষাৎকার দলের। সে দলে ছিল বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজের মাশায়েখ হাসান, ঢাকা কমার্স কলেজের আশরাফী রাইসা, হলিক্রস কলেজের সামিয়া শারমিন, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের বিভা মোশাররফ ও সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জয়তসিংহ
আম্মু বলেন, আমি নাকি অনেক শান্ত, একদম বোকা এবং চুপচাপ ছিলাম।
ছবি : কবীর শাহরীয়ার
প্রশ্ন:

জয়া কি ছোটবেলা থেকেই জয়া? ছোটবেলা থেকেই সবকিছু জয় করতে করতে তাঁর এ পর্যন্ত আসা?

একেবারেই না। আমি কখনোই মেধাবী ছিলাম না। এসএসসিতে অঙ্কে ৩৫ পেয়েছিলাম আমি। ছাত্রজীবনের বিভিন্ন পরীক্ষায় খারাপ ফল দেখে বাবা-মা আমাকে ভারতেশ্বরী হোমসে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। আমার মতে, পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। আজকের এই জয়ার ভিত্তি পরিশ্রম, মেধা নয়। আমার মতে, সেই মেধার কোনো মূল্য নেই, যদি তা বাস্তবে প্রয়োগ করতে না পারি। আমি যা কিছু আজ পর্যন্ত পেরেছি, তা আমি অর্জন করে নিয়েছি। জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, শর্টকাট পন্থায় পাওয়া কিছুর প্রতি কখনোই প্রেম থাকে না। আর কোনো কিছুর প্রতি প্রেম না থাকলে তা কখনোই দীর্ঘস্থায়ী হয় না। জীবনে এখানে আসা সম্ভব হয়েছে লক্ষ্য ঠিক রেখে, সঠিক রাস্তা বেছে নিয়ে তার একেকটি সিঁড়ির ধাপ পার হয়ে।

প্রশ্ন:

সিনেমা, নাটকে আপনি কখনো শান্ত, কখনো চঞ্চল, কখনো প্রতিবাদী, কখনো ভিতু। ছোটবেলায় আপনি আসলে কোনটা ছিলেন?

আম্মু বলেন, আমি নাকি অনেক শান্ত, একদম বোকা এবং চুপচাপ ছিলাম।

প্রশ্ন:

আর এখন?

আমি যে ধরনের কাজ করি, তাতে অনেক লোকের সঙ্গে মিশতে হয়, কথা বলতে হয়। তবে আমি মূলত আত্মকেন্দ্রিক। নিজের সঙ্গে থাকতে পছন্দ করি। চুপচাপ থাকি। খুব বেশি হল্লাতে আমি যাই না। এসব যে খুব অপছন্দ করি তা নয়। তবু একটু এড়িয়ে চলি।

প্রশ্ন:

স্কুলের দিনগুলো কেমন ছিল? কোনো মজার ঘটনা কি মনে পড়ে?

স্কুলজীবন তো অনেক মজার ছিল। অনেক কিছু কল্পনা করতাম। স্কুল থেকে একবার আমরা সবাই একটা আইসক্রিম কোম্পানির ফ্যাক্টরি পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। ছোট বাচ্চা... কোক আইসক্রিমের ফ্যাক্টরিতে যাওয়া... কোক কী করে বানাচ্ছে...আইসক্রিম কী করে বানাচ্ছে...আমি যেন পুরো রাজা! ওই বয়সটায় তো চকলেট-আইসক্রিম-কোক আমাদের জন্য নিষেধ ছিল, তাই সে রকম একটা ফ্যাক্টরিতে যাওয়ার ঘটনাটা আমাকে অনেক নাড়া দেয়। এ ছাড়া ভারতেশ্বরী হোমসে যখন ছিলাম, আমি তখন ভোলানাথ টাইপের ছিলাম। কান্নাকাটি করতাম না, বাড়ির জন্য মন খারাপ করতাম না। এমনি সবাই খুব কান্নাকাটি করত। কারণ , ক্লাস টু-থ্রি-ফোরের বাচ্চার পক্ষে তো বাবা-মা ছেড়ে, পরিবার ছেড়ে হোস্টেলে থাকা অনেক কষ্টের বিষয়। তো ওখানকার পূজাগুলোর কথা খুব মনে পড়ে। যারা সিনিয়র ছিল ওরা জুনিয়রদের ‘চ্যালা’ বলত। তো আমিও একটা গ্রুপের চ্যালা ছিলাম। ওরা হয়তো ক্লাস এইটে বা টেনে পড়ত আর আমরা তখন ফোর-ফাইভে পড়তাম। ওদের আলাদা পোশাক ছিল। সে ড্রেসগুলো পড়ার জন্য অস্থির লাগত। কখন বড় হব! আমরা ছোট ছোট হাফ হাতা ফ্রক পরতাম। মির্জাপুর-টাঙ্গাইলে খুব বড় পূজা হয়। ওখানে অনেক প্রসাদ থাকত। তো রাতের বেলা আমার মতো দু-একটা চ্যালাকে নিয়ে বড়রা বলত, যাও খাবারগুলো চুরি করে নিয়ে এসো। আমরা রাতের বেলা প্রসাদগুলো চুরি করে নিয়ে আসতাম। অনেক রকম ফলমূল, অনেক রকম মিষ্টি চুরি করে নিয়ে আসতাম। তারপর সবাই মিলে সেগুলো খেতাম। এভাবে অনেক মজা করেছি। ১৬ ডিসেম্বরের ডিসপ্লে হয় যে সেখানে আমি সব থেকে ছোট ছিলাম বলে আমাকে দোয়েল পাখির চোখ বানানো হতো। বাবা-মা আমাকে দেখতে আসত, বাবা-মাকে আমি তখন চিনতামই না। আমি খুবই চোখ লুকানো টাইপের ছিলাম। বন্ধুদের পেলে আমার ফ্যামিলির দরকার হতো না, এ রকম আরকি! তারপরে বাবা-মা একসময় আমাকে মিস করত বলে ঢাকায় নিয়ে আসে। আমাকে রেখে তারা থাকতে পারছিল না। আর আমি ওখানে যেয়ে খুব চাপাবাজ হয়ে গেলাম। মিথ্যা কথা বলতাম প্রচণ্ড। বানিয়ে কথা বলতাম। কাজিনদের ওখানে যখন ঘুরতে আসতাম, তখন তো আমি হিরো একদম। আমি একমাত্র কাজিন, যে কিনা ঢাকার বাইরে ফ্যামিলি ছাড়া একা থাকে। আমার দাম-ই আলাদা! সবাই গোল হয়ে বলত, গল্প বলো জয়া আপু, আমি ভূতের গল্প শুনিয়ে ভয় দেখাতাম। এত বিশ্বাসযোগ্যভাবে বলতাম, সেদিন খাবার টেবিলে আমার ছোট বোন, কাজিন সবাইকে এ ঘটনা বলছি, তখন ওরা অবাক হয়ে আমাকে বলল, ‘জয়া আপু, তুমি এগুলো বানায় বানায় বলতে?’

প্রশ্ন:

তাহলে কি অভিনয়ের হাতেখড়িটা তখন থেকেই শুরু হয়েছিল?

হয়তো-বা। কারণ, গল্প বলার বা কল্পনা করার ক্ষমতাটা তখন ছিল। কারণ , প্রচুর গল্পের বই পড়তাম। গল্পের বই পড়ার জন্য প্রচুর মারও খেয়েছি। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাতে তো খেয়েছিই। বাবা-মায়ের হাতেও খেয়েছি।

প্রশ্ন:

কাকে সবচেয়ে বেশি ভয় পেতেন ছোটবেলায়?

বাবাকে।

প্রশ্ন:

আর এখন?

কাউকে না (হাসি)। আমি তেলাপোকা খুব ভালোবাসি, মাকড়সাও খুব ভালোবাসি, আমার কোনো ভয় নেই। আগে, আমি সাপ খুব ভয় পেতাম। কিন্তু কদিন আগে আমি একটা অনুষ্ঠানে খুব কাছ থেকে সাপ দেখেছি, এরপর ভয়টা কেটে গেছে। এখন আমার একটাই সমস্যা যে আমি কিছুই ভয় পাই না। ভূতও ভয় পাই না, প্রেতও ভয় পাই না (হাসি)। এটা মোটেই ভালো না। ভয় পেতে হয়।

উমম..এ প্রশ্নের উত্তর কী হতে পারে, ভালো মুশকিলে ফেললে দেখছি!
ছবি : কবীর শাহরীয়ার
প্রশ্ন:

রবীন্দ্রসংগীতের ওপর ডিপ্লোমা আর আধুনিক সংগীতের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। এরপর ভোরের কাগজ-এ কাজ করলেও পরে অভিনয় জগতে এলেন। এর পেছনে কী কারণ ছিল?

নির্দিষ্ট কোনো কারণ ছিল না। আমার কাছে অনেকে জানতে চায় যে অভিনয় না করলে কী করতাম। আমি শিল্পের কোনো একটা শাখাতেই হয়তো থাকতাম। আমি ছবিও আঁকতাম একসময়। স্কুলে গানের ক্লাসে পচা গাইতাম বলে মামণি গানের স্কুলে ভর্তি করাল। বাংলাদেশের মানচিত্র আঁকতে গিয়ে ব্যাঙের মতো হয়ে যেত বলে আর্ট স্কুলে ভর্তি করাল। আমার শুরু কিন্তু এ রকম করেই। আমার আঁকা ছবির ওপর একক প্রদর্শনীও হয়েছে জাদুঘরে। শিল্পের সব শাখা সম্পর্কেই আসলে আমার মোটামুটি একটা ধারণা আছে। কিন্তু যেটা ভাবিওনি , সেই অভিনয়েই আসলে ফোকাস করে আমার ক্যারিয়ার তৈরি করে ফেললাম। প্যাশনটা সেখানেই হয়ে গেল।

প্রশ্ন:

এখনো কি গান গাওয়া হয়?

মাঝে মাঝে একেবারে নিজের জন্য গাই। কিন্তু অন্যের জন্য সেভাবে গাওয়া হয় না। চর্চা বা প্রশিক্ষণও এখন আর চলছে না। এ কারণে ভীষণ খারাপ লাগে। আমার কাছে মনে হয়, গান শিল্পের সব কটি শাখার মধ্যে সবচেয়ে ওপরে। আমার এখনো প্রথম ভালোবাসা সংগীত।

প্রশ্ন:

আপনি তো অভিনয়শিল্পী। আপনার কাছে ‘অভিনয়’ আসলে কী? মানে অভিনয়ের মজাটা কী?

অভিনয়ের আসলে নানান রকম মজা আছে। একেকজন একেকভাবে বলে। কিন্তু আমার কাছে অভিনয় হচ্ছে আমি যে মানুষটা না, সেই মানুষ হয়ে তার জীবনধারার ভেতর দিয়ে যাওয়া।

প্রশ্ন:

নাটক-সিনেমায় তো কত অভিনয়ই করলেন, বাস্তব জীবনেও কি অভিনয়টা করতে হয় প্রায়ই?

বাস্তব জীবনে আমি খুব খারাপ অভিনেতা। সবাই ধরে ফেলে আমার অভিনয়। আসলেই খারাপ। তবে একটু-আধটু অভিনয় তো সবার করতেই হয়, সেটা তোমরাও করো। ক্যামেরা-রোল ফাইভ-ফোর-থ্রি-টু-ওয়ান-জিরো-অ্যাকশন বললেই অভিনয়টা আসে। এ ছাড়া আসে না। তবে অভিনয় দিয়ে বাস্তবে কোনো কাজ উদ্ধার করিনি। সেটা না করাই ভালো।

প্রশ্ন:

অনেকেই বলে থাকেন, অভিনয় মানে তো ‘মিথ্যা’। তাহলে কি দিনের পর দিন আপনি মিথ্যার সঙ্গেই বাস করে যাচ্ছেন?

ভাববাচক কথাবার্তা! (হাসি) অভিনয় মানে আসলে আমরা যে জীবনটা যাপন করি না, সেটাকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে উপস্থাপন করা। আমাকে যদি তোমার চরিত্রে অভিনয় করতে হয়, তাহলে তুমি যা কিছু করো , সেগুলো খুব ভালোভাবে নিজে বিশ্বাস করব এবং সেটাই করার চেষ্টা করব এবং তখনই সেটা বিশ্বাসযোগ্য হবে। অভিনয় মানে মিথ্যার সঙ্গে বসবাস বা সে রকম কিছু, সে কথা ঠিক না।

প্রশ্ন:

নিজের অভিনীত চরিত্রগুলোর মধ্যে কোনটি আপনার কাছে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো লেগেছে?

ডুবসাঁতার ছবির রেণু চরিত্র, গেরিলা ছবির বিলকিস। আসলে প্রত্যেকটা চরিত্রই খুব পছন্দের।

জয়ার মুখ হাসি হাসি হলেও তিনি মনে হয় মনে মনে ভাবছেন, এ কি বিচ্ছুদের পাল্লায় পড়লাম!
ছবি : কবীর শাহরীয়ার
প্রশ্ন:

এমনটা কি কখনো হয়েছে যে স্ক্রিপ্ট হাতে পেয়ে কিংবা অভিনয় করার পর আবিষ্কার করলেন, আরে , এই চরিত্রটা তো আমি... অর্থাৎ কোনো চরিত্রের সঙ্গে নিজের কখনো মিল পেয়েছেন?

নিজের চরিত্রের সঙ্গে অনেক মিল পাই। অনেক চরিত্র যখন পড়া হয়, তখন চরিত্রের মানসিক অবস্থার সঙ্গে আমার নিজের মানসিক অবস্থার মিল পাই। যেমন ‘ডুবসাঁতার’ করতে গিয়ে রেণুর চরিত্রটিকে আমার অনেক কাছাকাছি একটা চরিত্র মনে হয়েছে। ওর কষ্ট-দুঃখ, ওর ভালো লাগা, অনুভূতিগুলো মনে হয়েছে আমার সঙ্গে অনেক মেলে। আসলে আমরা অভিনেত্রীরা স্ক্রিপ্ট হাতে পাওয়ার পর মিলগুলোই আগে খোঁজার চেষ্টা করি। আর তখনি চরিত্রটা জীবন্ত হয়ে উঠে।

প্রশ্ন:

'এনেছি সূর্যের হাসি' ধারাবাহিক নাটকে অভিনয়ের জন্য জাতিসংঘের নারী ও শিশু সহায়তা বিভাগের শুভেচ্ছাদূত হয়েছিলেন। এই দূত হিসেবে আপনার কাজটা মূলত কী ছিল?

কাজটা মূলত ছিল হতদরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মানুষদের মধ্যে স্বাস্থ্যসম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা। আমি-তুমি, আমরা তো সব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকি। কিন্তু যারা এসব সুবিধাবঞ্চিত, তাদের ন্যায্য অধিকার পেতে সাহায্য করা। উৎসাহ দেওয়া। ভালো একটা রাস্তা দেখিয়ে দেওয়া। প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাচ্চাদের টিকা দেওয়া নিয়ে কথা বলতে হতো। টিকা না দেওয়ার অসুবিধাগুলোর কথা বলতে হতো। তারা কোথায় গেলে কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবে , তা নিয়ে কথা বলতাম। ফ্যামিলি প্ল্যানিং নিয়ে, ঘন ঘন বাচ্চা হলে মহিলাদের কী কী সমস্যা হয়, ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা তৈরি করা। আমি টিকাও দিয়েছি।

একবার এক হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখানে এক মহিলা বললেন, তিনি আমার অভিনীত আয়েশা চরিত্রের নামে তার বাচ্চার নাম রেখেছেন। আসলে এই ব্যাপার হলো, খুব ভালো লাগে। কেননা তাদের সঙ্গে আসলে আমাদের তেমন একটা যোগাযোগ হয় না। এই যে এখন এসি রুমে বসে কথা বলছি, এরপর এসি গাড়িতে গিয়ে উঠব, থাকি গুলশান বা ধানমন্ডিতে। এটা তো আসলে বাংলাদেশ না। আসল বাংলাদেশ ওখানে। ওদের কাছে যেতে পেরেছি, একসঙ্গে কাজ করতে পেরেছি। এটা অনেক মূল্যবান একটি অভিজ্ঞতা।

প্রশ্ন:

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে অনেকগুলো পুরস্কার পেয়েছেন। কোন পুরস্কারটি পেয়ে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পেয়েছিলেন?

জাতীয় পুরস্কার নিঃসন্দেহে অনেক সম্মানের। দেশের বাইরেও অনেক পুরস্কার পেয়েছি। কলকাতায় ইউপ্যাক বা অন্য যে পুরস্কারগুলো পেয়েছি , সেগুলো নিঃসন্দেহে অনেক সম্মানের। এ ছাড়া আমি মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার কয়েকবার পেয়েছি। এটাও যথেষ্ট সম্মানের। পুরস্কার পেতে আসলেই অনেক ভালো লাগে।

প্রশ্ন:

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপনি কতটা নিয়মিত? এ মাধ্যমগুলো কাজের ক্ষেত্রে কোনো বা অপকার কি বয়ে আনে?

আমি আসলে এসবে খুব বেশি নিয়মিত নই। একটা এসএমএস সার্ভিস আছে আমার। প্রতিদিন আমার এসএমএসগুলো পাওয়া যায়। কেউ যদি সেটায় লগইন করে, আমার সঙ্গে কানেক্টেড থাকে আরকি। এই মাধ্যমগুলো কাজের ক্ষেত্রে অবশ্যই উপকার করে। সবকিছুরই ভালো-খারাপ দুটোই আছে। এটা অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু আমি একটু প্রযুক্তিবিরাগ। এ কারণেই যে প্রযুক্তি মানুষকে খুব অস্থির করে তোলে। আর এই অস্থিরতা আমি যে ধরনের কাজ করি , সেটার জন্য মোটেই ভালো জিনিস নয়। কোনো সৃজনশীল মানুষের জন্য অস্থিরতা মোটেই ভালো জিনিস নয়। তার ‘রুট’ অনেক গভীর যেতে হবে। তো সে ক্ষেত্রে আসলে এটা সমস্যাই করে। আমি ফোনও সব সময় কাছে রাখি না। আমার মনে হয় , এটা আমার মনোযোগ কাজ থেকে অন্যদিকে নিয়ে যায়। বা তুমি পড়াশোনা করো বা যে কাজই করো, এগুলো কিন্তু এক ধরনের বাধাই। না পারতে ব্যবহার করাটাই ভালো।

ছবি : কবীর শাহরীয়ার
প্রশ্ন:

জীবনের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে কোন সময়টাকে দেখেন?

যখন আমি কমার্সে পড়তাম, সেই পড়াগুলোর সঙ্গে সংগতি না রেখে একেবারেই স্রোতের বিপরীতে মিডিয়াতে এসে কাজ করলাম। সেটাকে ঠিক টার্নিং পয়েন্ট বলা যায় না। সেটা একধরনের ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত।

প্রশ্ন:

আপনি তো কান চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সেই উৎসব থেকে কি কিছু শেখার ছিল? সেখানকার অভিজ্ঞতাটা কেমন?

দারুণ অভিজ্ঞতা! পুরো পৃথিবীর সিনেমাপ্রেমীরা সেখানে। বিশ্ব চলচ্চিত্রের সব গুরুত্বপূর্ণ লোকজনকে আমি দেখেছি। এটা দারুণ না! সেখানে কোনো বিভেদ নেই। আমি বাংলাদেশি। ভারতীয় , নাকি ইরানের, সেটা বড় না; বরং আমরা সিনেমাপ্রেমী , সেটাই বড়। আমি যে শুধু অভিনয়টা ভালোবাসি, তা কিন্তু নয়। পুরো সিনেমা তৈরির প্রক্রিয়া অর্থাৎ শুরু থেকে বাজারজাত—পুরোটাই আমার কাছে অনেক আকর্ষণীয় বলে মনে হয়।

প্রশ্ন:

কানের স্মরণীয় মুহূর্ত?

অনেক অনেক। বিশেষ করে যখন অস্কার বিজয়ীদের সিনেমা দেখাচ্ছে এবং ওনাদের সঙ্গে একসঙ্গে বসেই সে সিনেমা দেখছি। বড় বড় বিখ্যাত সব অভিনেতা-অভিনেত্রী তোমার চারপাশে দিয়ে ঘোরাঘুরি করছে। একবার শ্যারন স্টোন তাঁর দুটো কুকুর নিয়ে আমার সামনে দিয়ে হেঁটে গেলেন আর আমি পাশে ক্যাফেতে বসে যা খাচ্ছি। ওখানে এত এত বিখ্যাত মানুষের ভিড়েও কখনো নিজেকে ছোট মনে হয় না। আমি যে কারও কোনো আত্মীয় না, সেটা কখনো অনুভব করিনি। ওখানে সবাই তোমাকে খুব বেশি দাম দিয়ে কথা বলবে। তোমার কথার মূল্য দেবে। যখন শুনেছে যে আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি , তখন আমার কাছে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পের কী অবস্থা, ভবিষ্যৎ কেমন—এসব জিজ্ঞেস করেছে। আমি অনেক সেমিনারে অংশ নিয়েছি, অনেক কথা বলেছি, দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছি। তো তখন মনে হয় যে, তৃতীয় বিশ্বের দেশকে ওরা দাম দেয় না বলে যে কথাটা প্রচলিত আছে , সেটা ঠিক নয়। ওখানে যারা আর্টের, কালচারের লোকজন, তারা আসলেই সবকিছুকে অন্যভাবে দেখে। ওরা ছবির মাধ্যমে জানতে চায়, চিনতে চায়।

প্রশ্ন:

একটা অনুষ্ঠানের জন্য আপনাকে জেলে যেতে হয়েছিল। সে সময়ের পরিস্থিতিটা যদি একটু বলতেন...

‘ঘটনার আড়ালে’ বলে একটা অনুষ্ঠানের জন্য একবার জেলে যেতে হয়েছিল। ওটা আমার প্রথম দিককার একটা কাজ। জেলখানার ভেতরে যারা থাকে তারা আসলে অনেক দিন বাইরের মানুষ দেখে না। বিশেষ করে মহিলাদের ওরা একেবারেই দেখে না। খুব ভয়াবহ, দুর্বিষহ জীবনযাপনও ওখানে করতে হয়। সেটা আসলে আর একটা জীবন, আর একটা অভিজ্ঞতা। এটা বলতে গেলে অনেক সময়ের প্রয়োজন। একটা পর্যায়ে আমি খুব ধীরে ধীরে এগোছিলাম। একটা পর্যায়ে একদম পেছনে পড়ে যাই। ওখানে যে কয়েদিরা ছিল, তারা আমাকে আটকে ফেলল। তারপর যারা আমাকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল, তাদের পুরো দল এসে আমাকে সেখান থেকে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ওরা আমাকে যেতে দিতে চাচ্ছিল না। আমার সঙ্গে কথা বলতে চাচ্ছিল। সেখানে নানান মানসিকতার মানুষ থাকে। খুব অদ্ভুত একটা জায়গা।

প্রশ্ন:

নিজেকে এককথায় কীভাবে প্রকাশ করবেন? জয়া আহসান মানে?

নিজেকে চিনিই না। কী বলব বলো! নিজেকে কী প্রকাশ করব। কোনো স্টেটমেন্ট নাই আমার ওভাবে।

প্রশ্ন:

দীর্ঘদিন একটা কাজ করলে অনেক ক্ষেত্রেই বিরক্তি এসে যায়। অভিনয়ের প্রতি কখনো বিরক্তি এসেছে?

যখন বিরক্তি এসেছিল তখন কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আবার এখন আগ্রহ ফিরে পেয়েছি।

প্রশ্ন:

অভিনয়ের প্রতি এই ভালোবাসার কারণটা কী?

এই যে, এক জীবনে বহু জীবন যাপন করা যায়।

প্রশ্ন:

হলিউড থেকে যদি অফার দেওয়া হয়, আপনি সেখানকার ছবিতে নিয়মিত অভিনয় করবেন, তবে এ জন্য আর কখনো বাংলা ছবিতে অভিনয় করতে পারবেন না। আপনি তখন কী করবেন?

(হাসি) তাহলে হলিউডের ছবিতে অভিনয় করব না। কোনো রেসট্রিকশনের ভেতর আমি যাব না।

প্রশ্ন:

সমাজব্যবস্থাটাই এমন যে, একটা মেয়ের চেহারা ভালো হলে সে অপেক্ষাকৃত খারাপ চেহারার একটা মেয়ের চেয়ে প্রায় সবকিছুতেই এগিয়ে থাকে, কিন্তু কেন? সৌন্দর্য কি খুব বড় কোনো গুণ?

আমি এই কথার বিশ্বাসী না। আমার মতে, ব্যক্তিত্বের সৌন্দর্যই একজন মানুষের সত্যিকার সৌন্দর্য। আর প্রশ্নে যে বাহ্যিক সৌন্দর্যের কথা বলা হয়েছে, তাকে বোনাস হিসেবে ধরা যায়।

প্রশ্ন:

সাধারণ অর্থে সুন্দরী বলতে যা বোঝায়, আপনি তার চেয়ে অনেক বেশি সুন্দর। আপনার সৌন্দর্য কি জীবনে চলার পথে আপনাকে অন্যের চেয়ে কখনো এগিয়ে রেখেছে?

আমি সুন্দর? কী বলো! তবে এ ক্ষেত্রে অসুবিধা ও সুবিধা উভয়ই রয়েছে। আমার জীবনের ক্ষেত্রে দেখা যায় , এ কারণে আমার বেশি অসুবিধা হয়েছে এগিয়ে যাওয়ার। যেমন কারও যদি কোনো জায়গায় পৌঁছতে ১০ মাইল ছুটতে হয়েছে, সে ক্ষেত্রে দেখা যায় , আমার ১০০ মাইল ছুটতে হয়েছে।

প্রশ্ন:

তাহলে টেলিভিশনে ফরসা চেহারার নায়িকাদের এত প্রাধান্য কেন?

সেটা আমাদের সমাজব্যবস্থার কারণে। এখনো আমাদের সমাজের কিছু কিছু মানুষের মানসিকতা ও রকম রয়েছে। এটা ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে। সে জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন।

ছবি : কবীর শাহরীয়ার
প্রশ্ন:

আপনার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং আপনি নিজে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র গেরিলাতে অভিনয়ের মাধ্যমে আমাদের জন্য অনেক সম্মানজনক স্বীকৃতি বা পুরস্কার পেয়েছেন। আপনার ভেতরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কী ধরনের রোমাঞ্চ কাজ করে?

যেহেতু আমি মুক্তিযুদ্ধের অনেক পরবর্তী প্রজন্ম; বাবা-মায়ের কাছে যা শুনেছি সেটা আসলে পুরোটাই ফ্যান্টাসি ছিল। কিন্তু আসলে এই ছবিটা করতে গিয়ে আমার মনে হয়েছে, আমি দেশের জন্য হয়তো কিছুটা করতে পেরেছি। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের শিকড়, আসলে এটাই আমাদের ‘প্ল্যাটফর্ম’। এই জায়গাটা অবশ্যই ভুলে যাবার নয়, ভুলে যাওয়া উচিত নয়। ঠিকভাবে প্রতিটি প্রজন্মের মধ্য দিয়ে, এমনকি তোমাদের মধ্য দিয়েও এটাকে প্রতিফলিত করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের প্রতিফলনটা আমাদের কাজে, আমাদের সবকিছুতে রাখতে হবে।

প্রশ্ন:

আপনি একটা অনলাইন পত্রিকার পরিচালক। বাংলাদেশের অনেক পত্রিকাই, বিশেষ করে অনলাইন পত্রিকাগুলো, অনেক সময়ই সত্যতা যাচাই না করেই কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবেই ভুল সংবাদ পরিবেশন করে। একটা পত্রিকার পরিচালক হিসেবে এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?

আসলে আমিই এর ভুক্তভোগী। এটার বিষয়ে খুব সচেতন হওয়া উচিত। বাংলাদেশের মানুষ ছাপার অক্ষরকে খুব বেশি বিশ্বাস করে। তারা সত্যতা যাচাইয়ে যায় না, এটা তাদের দায়ও পড়েনি। পত্রিকায় যারা কাজ করে বা সেটা যারা চালায়, তাদের অবশ্যই যথেষ্ট দায়িত্ব রয়েছে। সে জন্য নিরপেক্ষভাবে সংবাদ প্রচার প্রয়োজন।

প্রশ্ন:

‘আমি নিঃস্ব হয়ে যাব, জানো না...’ এই গানের মত জীবনে কী না পেলে বা কী না থাকলে সত্যিই নিঃস্ব হয়ে যাবেন?

কাজ না থাকলে নিঃস্ব হয়ে যাব। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজ করে যেতে চাই। কাজ মানুষের জীবনের সঞ্জীবনী।

ছবি : কবীর শাহরীয়ার
প্রশ্ন:

মিডিয়া সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মাঝে অনেক নেতিবাচক ধারণা আছে। ফলে তাঁরা তাঁদের সন্তানদের, বিশেষ করে মেয়েদের মিডিয়ায় আসতে দিতে চান না। এ সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কী?

আসলে আমরা দেশের মানুষ সবাই এমনিতেই একটা অনিশ্চয়তার ভেতরে থাকি। মেয়ে বা ছেলে বলে কথা না। বাইরে বেরোই, ঠিকভাবে ঘরে ফিরি, এটাই একটা বোনাস লাইফ নিয়ে বেঁচে আছি আমরা। আর এই ক্ষেত্রে কাজ করার জন্য আমাদের এই জনগোষ্ঠী, এই সমাজব্যবস্থা আমাদের খুব একটা সাহায্য করে না। আমার নিজেরও স্রোতের বিপরীতে গিয়ে কাজ করতে হয়েছে। সে জন্য পরিবারের মানাও অমূলক নয়। কিন্তু ছেলেমেয়েকেও একটা পর্যায় পর্যন্ত পরিবারের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। তারপরে বেছে নিতে হবে যে সে কী করতে চায়। একটা পর্যায় পর্যন্ত পুঁথিগত বিদ্যা তোমায় পড়তেই হবে। তারপর তুমি অভিনয়ে আসবে। না হলে অভিনয় করতে পারবে না। অভিনয়ের জন্য জীবনের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন আছে। তা ছাড়া হয়তো একটা-দুটো অভিনয় করবে, নাটকে রঙিন কাপড় পরে হাঁটবে, বন্ধুদের মাঝে তুমি নায়ক হয়ে থাকবে এইটুকুই! কিন্তু এটা দিয়ে কী লাভ?

প্রশ্ন:

জীবনের কোনো হতাশা থেকে থাকলে তা কীভাবে কাটিয়ে উঠেছেন?

হতাশা আসলে কখনোই আমাকে সেভাবে ভর করেনি। কিন্তু মাঝে মাঝে যখন কোনো কিছু সামলে উঠতে পারি না, তখন নিজের ওপর বিশ্বাস রাখি। কারণ, মানুষের চেয়ে শক্তিশালী আর কেউ নেই। যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকলে আর নিজ লক্ষ্যচ্যুত হয়ে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি না করলে জীবনে হতাশা কখনোই গ্রাস করার কথা নয়।

প্রশ্ন:

রোদ না বৃষ্টি—কোনটা বেশি প্রিয়?

বৃষ্টি ভালো লাগে। বৃষ্টি খুব আনন্দের। কিন্তু বিকেলবেলা যে কমলা রঙের রোদ, সেটাও আমার খুব পছন্দের।

প্রশ্ন:

আপনি অনেকেরই প্রিয় শিল্পী। আপনার অভিনীত চরিত্রগুলো বাস্তবেও অনেকের ওপর প্রভাব ফেলে। তাই কোনো চরিত্রে অভিনয়ের ক্ষেত্রে আপনি কি কোনো সতর্কতা অবলম্বন করেন?

আমি যখন চরিত্রাভিনয় করি , সেটা সমাজের নেতিবাচক চরিত্রই হোক বা ইতিবাচক চরিত্রই হোক না কেন , আমি সেটা তুলে ধরতে চাই। কিন্তু নেতিবাচক যে চরিত্রটি, তার ভেতরেও ইতিবাচক বিষয় আছে। সেগুলোকে ঠিকভাবে চিত্রায়ণ করতে হবে। ধরো, একটা চোরের দর্শন, তা থেকে যেন বেরিয়ে না যাই, সেটি খেয়াল রাখতে হবে। তারও একটা দর্শন আছে। তার দর্শনটাকে ধরতে পারতে হবে এবং সেভাবে চিত্রায়ণ করতে হবে।

প্রশ্ন:

আপনি তো কর্কট রাশির জাতিকা। বলা হয়ে থাকে, এই রাশি যাঁদের, তাঁরা নাকি সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না। কিন্তু দীর্ঘ ক্যারিয়ারে স্বাভাবিকভাবেই আপনাকে অনেক সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। সেগুলো কীভাবে নেন?

সমালোচনা তো ভালো। সম-আলোচনা। ভালো-খারাপ দুটোই। তুমি একজন সেলিব্রিটি হবে, আর সমালোচনা নেবে না, তা হতে পারে না। আমি খুব ভালোভাবে নিই।

প্রশ্ন:

কিশোর যারা অভিনয়ে আগ্রহী, তাদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী?

আগে পড়াশোনা তারপর কাজ। অভিনয়ে যদি নিজেকে দেখতে চাও, তবে তোমাকে অবশ্যই শিক্ষিত হতে হবে। সুশিক্ষিত ও স্বশিক্ষিত। পড়াশোনা করলে তুমি নিজেই অনেক আত্মবিশ্বাসী হয়ে যাবে, যা অভিনয়ের ক্ষেত্রে অনেক কাজে দেয়। পড়াশোনা না করে এসে যখন কেউ আত্মবিশ্বাস ছাড়া দাঁড়ায়, সে স্রোতের সঙ্গে ভেসে যায়। আর পারিবারিক জীবনটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। মা-বাবাকে উপেক্ষা করে কোনো কাজ করা যাবে না। তাঁদের রাজি করিয়ে কাজটা করতে হবে। 

সাক্ষাৎকার দলের পাঁচজন ছাড়াও আরও যাদের প্রশ্ন নির্বাচিত হয়েছিল

আদিবা কামরুল, আহমেদ রাইয়ান, আনোয়ারা বেগম, আসিফ আরফিন, ফাবিহা হোসেন, ফাইজা ইমাম, ফয়সাল আলম, হুমাম সালওয়া সালভীন, ইসতিয়াক হোসেন, খন্দকার রবিউল ইসলাম, লামিয়া হাসান, মারিয়া ফেরদৌস, মো. আরিফ বিল্লাহ, মো. ইমরান হাসান, মো. জাহিদ হাসান, মো. রাকিবুজ্জামান শাফি, মেহেদী হাসান, মুত্তাকীন রশিদ, নওশীন ইবনাত, নুরুল করিম, প্রত্যয় ঘোষ, রাবেয়া সুলতানা, রাশিক হাসান, এক কে শাহরিয়ার, এস এম শাহরিয়ার, সাহিব নিহাল, সালিহা কবির, সামিয়া শারমিন, শাকিল মোর্শেদ, শারমিন জাহান, সুমাইয়া সুলতানা, সৈয়দা তাসনিম ইসলাম, তাহমিদ উল ইসলাম, তাহমিদ জামান খান, তাজরি জাহান, তাসফিয়া তাবাসসুম ও ওয়াজিয়া স্নেহা।