চিঠি

অলংকরণ: আরাফাত করিম

লাল, বেগুনি, নীল, গোলাপি, সাদা
হলদে সবুজ কত্ত খামে বাঁধা!
থাকত খামে নাম-ঠিকানা লেখা
উড়ত চিঠি ঘুরত টেনে রেখা।
দরজা পেয়ে ঢুকত চিঠি ঘরে
হাসিয়ে দিত কাঁদিয়ে দিত পড়ে।
চিকন–মোটা হাতের লেখা দেখে
পড়ার আগেই বুঝত লিখেছে কে।
চিঠি তুমি কত্ত ছবি আঁকো
এমন চিঠি আজকে কোথায় থাকো?

এক চিঠিতে চাইত ছেলে টাকা
এক চিঠিতে মেয়ের বিয়ে পাকা।
একটা চিঠি মায়ের অশ্রু ঝরা
ভাইবোনেরা লিখত চিঠি কড়া।
ধার চেয়ে কেউ লিখত নরম সুরে
ঋণ শোধেরও আসত চিঠি ঘুরে।
কোনো চিঠি হয়তো ফুলের বোঁটা
পড়ত ঝরে মনের রঙের ফোঁটা।
চিঠি তুমি এত্ত আবেগ মাখো
মিষ্টি-টকের সেই চিঠি কই থাকো?

চিঠির ভেতর কত্ত লেখাজোখা
স্বপ্ন ঝরে পড়ত থোকা থোকা।
মিলত কত নতুন পথের দেখা
জুটত কারও কত্ত কিছু শেখা।
একটা চিঠি আনত আলো বয়ে
কেউ চিঠিতে উঠত নতুন হয়ে।
একাত্তরের চিঠির কথা জানি
ইতিহাসের অংশ বলে মানি।
চিঠি তুমি সময় ধরে রাখো
সেই সে চিঠি আজকে কোথায় থাকো?
মানতে হবে বিবর্তনের ধারায়
দিনবদলে কত্ত কিছু হারায়!
চিঠিও এমন পড়ল মাটিচাপা?
সত্যি কঠিন চিঠির ওজন মাপা।
যন্ত্র এসে সবটা নিল কেড়ে;
থাকতে হবে চিঠির আশা ছেড়ে?
ভাবতে যেন মনটা কেমন করে!
জাদুর চিঠি আসবে না আর ঘরে?

চিঠি তুমি আজ যেখানেই থাকো
তুমি ছিলে উড়ন্ত এক সাঁকো।