ঘোড়ারোগ

অলংকরণ: এস এম রাকিব

আংশিক নয় তার ছিল আগাগোড়া রোগ
কোন রোগ? গরিবের থাকে যেটা—ঘোড়ারোগ
কিছুতেই মানত না কিছু সে
ঘোড়া পেলে ছুটে যেত পিছু সে।

এভাবেই বেশ ভালো যাচ্ছিল দিন তার
অবশেষে ব্যাপারটা হলো খুব চিন্তার।
আজকাল ঘোড়া কই পাড়াগাঁয়, গঞ্জে?
ঘোড়া খুঁজে পেরেশান লোকটার মন যে!
টাকাকড়ি ধার দেনা করে সে
ছুটে এল হঠাৎ শহরে সে
পায়ে হেঁটে চলে এল আরমানিটোলাতে
সতর্ক দৃষ্টিটা বোলাতে বোলাতে-

দেখে খালি টমটম খাড়া আছে রাস্তায়
একছুটে পৌঁছাল সে গাড়ির পাশটায়
তড়িঘড়ি উঠে বসে চালকের আসনে
না না করে কোচোয়ান, সে কি আর তা শোনে!
একলাফে চড়ে বসে সে ঘোড়ার পৃষ্ঠে
ভাবে তা-ই ঘটবে যা রয়েছে অদৃষ্টে।

বোঝা পিঠে ছুটে ঘোড়া ভয়ানক ঘাবড়ে
মজা পায় লোকটাও ওই ঘোড়া দাবড়ে...
পথচারী হতবাক—কী আজব ব্যাপার-এ
লোকটা কি নির্বোধ নাকি খুব খ্যাপা রে!
আসনে না বসে কেন চেপেছে সে ঘোড়াতে?
নির্ঘাত গলদটা ও ব্যাটার গোড়াতে!

দিশাহারা ঘোড়া শেষে ভয়ে আর শঙ্কায়
ঝাঁপ দেয় গাড়ি ফেলে সোজা বুড়িগঙ্গায়;
দ্রুত নদী পার হয়ে ওঠে জিঞ্জিরাতে
তবু ভয় ছুটে তার ধমনি ও শিরাতে।

পাড়ে উঠে লোকটাও বলে ওঠে কাতরে-
হায় হায় নেই দেখি গোটা দুই দাত রে!
ঠিক নয় ঘোড়ারোগ মনে পুষে রাখাটা
দরকার ছিল আগে ডাক্তার ডাকাটা।