ভাঙাস্বর

অলংকরণ: সারা তৌফিকা

দুচোখে দেয়াল নামে, তাকাই উদাস
কো-থা-ও কো-থা-ও নেই এক ছড়া ঘাস!

বাবা গেছে ব্যবসায়, মায়েরও আপিস
রান্নার পাশে বুয়া ধোয় থালা-ডিশ
আন্টিরা হ্যালো বলে থেকে মোবাইল
ডেস্কে ফ্যাকাশে বই-খাতা-পেনসিল!
টেবিলে পাস্তা-রোল-পিৎজা থোক থোক
আমি কি এগুলো চাই? ক্ষুধিত দুচোখ!

দরজা বন্ধ কেন? কেঁদে ওঠে মন
শিরীষ কাগজ যেন বুয়ার শাসন!
মা কেন আপিস ভেঙে আসে না দ্রুতই
কাজপোকা বাবাটির আমি কেউ নই?

কবে যেন হবে এক সোনালি দুপুর—
কাঁঠালিচাঁপায়, পরে সুমিহি নূপুর
নেচে ছিল ছায়ানীল উতলা ফড়িং...
দূর ছাই! টেলিফোন বাজে ক্রিং ক্রিং!

কেন যে এমন টানা ছুটি ইশকুল—
কোথায় বন্ধু শুভ, টেরিজা, মিতুল
আয় না রে মতিয়ুর, স্বাতী ও সোহানা
আমি যে বন্দী! একা বেরুনোও মানা!

বাইরে চপল রোদ, পা খোলা বাতাস
ওদের না জানি কত তাজা নিশ্বাস!
ড্রাইভার কাকু যদি হয়ে জাদুকর
আমাকে বাইরে নিয়ে চুপে অতঃপর
শহরে বেড়াত আজ, বলতাম, ‘নাও
দুধ-কলা-পিৎজা-রোল সব তুমি খাও।’

বকুলের পাতা নাচে ঝোড়ো হাওয়া বয়
আমি কী যে খুঁজে মরি সারা ঘরময়!
পড়ে আছে এক্স বক্স, কিন্ডেল, ট্যাব
নারকেলগাছে ডাব চেয়ে ড্যাব ড্যাব
কার্নিশে কাক ডাকে, আমি গাই গান
জানালার গ্রিল যেন ভেঙে খানখান!