নয়নতারা গ্রামে

অলংকরণ: সারা তৌফিকা

নয়নতারা গ্রামের লোকের দুঃখে জীবন ভরা
তাদের কথা বলব বলে লিখছি এমন ছড়া।

দিনগুলো যায় মোটামুটি, রাতটা যখন নামে
মন খারাপের কাণ্ড ঘটে নয়নতারা গ্রামে।
প্রতি রাতেই কারও বাড়ি চুরি হবেই হবে
পুরো গ্রামের নিদ্রা হারাম চোরের উপদ্রবে।

চোরের এলেম অনেক বেশি, বুদ্ধি অনেক পেটে
ঘরে ঢোকে চুপিসারে গ্রিল কেটে, সিঁধ কেটে,
সকল কিছুই চোর নিয়ে যায়, যাচ্ছে না চোর ধরা।
ব্যর্থ পুলিশ, পাহারাদার, চোর নিয়ে কী করা!
গ্রামের সবাই দেয় পাহারা রাত জেগে, দল বেঁধে
তবু গ্রামের দিন শুরু হয় চোরের জ্বালায় কেঁদে।

নিদ্রাবিহীন থেকে থেকে চোখ গিয়েছে দেবে
কাটল অনেক সপ্তাহ-মাস বাঁচার উপায় ভেবে।
অবশেষে ঠিক হয়েছে চোরকে ফেলো ফাঁদে
চোর ঠেকানোর দায়িত্ব দাও বিশেষ গ্রুপের কাঁধে।

চুক্তি হলো দুই পক্ষে, এমনিতে হয় যা যা
বেতন হলো নির্ধারিত—বড় মাছের ভাজা।
সকল কিছুই নগদ নগদ, থাকবে না কেউ ঋণে
চোর ঠেকানোর চাকরিটাতে দিনের বেতন দিনে।

পাহারাদার কেমন ভালো?—চমক প্রথম রাতে
চোর বুঝল নয়নতারায় পড়েছে কার হাতে!
গ্রামের লোকে দেখল ভোরে সব কটি চোখ খুলে
দশ-বারোটা চোর রয়েছে গাছের ডালে ঝুলে।

কয়েক চোরের দাঁতকপাটি, সটান শুয়ে আছে
কয়েকটা চোর পা ধরতে আসছে পায়ের কাছে।
ভয়ের চোটে কয়েক চোরের বন্ধ নড়াচড়া
খুশির হাওয়া লাগল গ্রামে, চোর পড়েছে ধরা।

চোর ঠেকানোয় পাহারাদার খেল দেখাল কাজে
রান্নাঘরে গিন্নিরা তাই খুশিতে মাছ ভাজে।

চোর নেই তাই চিরচেনা নয়নতারা গ্রামে
দুচোখ ভরা নিদ্রা নিয়ে সন্ধ্যা বা রাত নামে।
তৃপ্তি নিয়ে গ্রামবাসী যায় নিশ্চিন্তে শুতে
চোর ঠেকানোর চাকরি করে পেতনি এবং ভূতে।