কাজ

অলংকরণ: সব্যসাচী মিস্ত্রী

মা-ও বলেন, বাবা-ও বলেন
অভিযোগের সুরে
আমি নাকি আলসে এবং কুঁড়ে
কাজ করি না মোটে
মিনু যেমন করে
সারাটা দিন ধরে।
তাই তো মিনু সবার কাছে লক্ষ্মীসোনা মেয়ে
বায়না যখন যা ধরে তা-ই তক্ষুনি যায় পেয়ে।

সত্য বটে, মিনুসোনা অনেক কাজই করে
এসব করেও নিয়মিত নিজের পড়া পড়ে।
কখনো-বা মসলাপাতি বাটে
এঁটো থালাবাসন নিয়ে যায় কখনো ঘাটে।
আনাজ কোটে, কাপড় কাচে, ঘরদোর দেয় ঝাড়
সবাই বলে, মিনুর মতো নেই তো মেয়ে আর।

আমিও কাজ কম করি না
সারাটা দিন ধরে
কিন্তু সেটা কেউ বলে না
ভুলেও ঘুণাক্ষরে।

কালবোশেখির ঝড়
ভাঙলে পরে গাছের ডানা
পাখির বাসা, ঘর—
আমি যে যাই ছুটে
অনেক খেটেখুটে
জোগাড় করি খড়কুটো, তারপর—
ওদের জন্য যত্ন করে
দিই বানিয়ে ঘর।

এগুলো নয় কাজ?
মা-বাবাকে বলব গিয়ে আজ।

কাকলিদের খুড়ো
বড্ড যে থুত্থুড়ো
শ্বাস নেন খুব ঘনঘন
পথ চলতে গেলে
থমকে দাঁড়ান বাঁশের তৈরি
সাঁকোর ধারে এলে।
পারাপারের হয় না সাহস তাঁর
আমিই তাঁকে হাতটি ধরে
করাই সাঁকো পার।

এগুলো নয় কাজ?
মা-বাবাকে বলব গিয়ে আজ।

আকাশভরা ঝমঝমানো ভরবর্ষা শেষে
শীতের দেশের রংবেরঙের পাখিরা সব এসে
শালুকবিলে বসায় যখন মেলা
কেবল করে খেলা
শুনতে পেয়ে তাদের সে গান
হরেক রকম ডাক
ছুটে আসে শিকারিদের ঝাঁক।
আমি তখন পাখির দিকে
ঢিলটি ছুড়ে ছুড়ে
শিকারিদের নাগাল থেকে
দিই পাঠিয়ে দূরে।

এগুলো নয় কাজ?
মা-বাবাকে বলব গিয়ে আজ।