কোকিল ও মেয়ে

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

ডাকছে কোকিল গভীর রাতে
ছোট্ট মেয়েকে গান শোনাতে
লাফিয়ে ওঠে, ডাক শুনে সে
বেরোয় একা, একটু হেসে।

‘এই পাখি শোন—কেমন করে
উঠব আমি ওই ওপরে’
কুঁচকে ভুরু ছোট্ট মেয়েটা
কোকিলটাকে শুধায় সেটা।

‘কথা শোনো’, বলল পাখি;
‘আঁধার দেখো, নেভাও আঁখি।’
ছোট্ট মেয়ে সে, দুচোখ বুজে,
চোখটা বোজার কারণ খোঁজে।

‘এবার তাকাও’ কোকিল বলে,
ছোট্ট মণি চক্ষু খোলো।
গাছের ওপর মগডালে সে
আছে কেমন দিব্যি বসে!

‘দুষ্টু পাখি, ভয় দেখাতে
ডাকলি আমায় এই বেলাতে?’
বলল রেগে মেয়েটা যখন,
কোকিল হাসে মুচকি তখন।

হেসেই বলে, ‘পাগল নাকি?
এ কারণে তোমায় ডাকি?
একদম নয়! গান শোনাতে
ডেকেছি তোমায় এমন রাতে।’

‘গাইব বলে, ভীষণ ভোরে
উঠতে যে হয়, এই আমারে
সবাই তো বেশ শুনেই সারা,
শোনাবে কেউ, নেই তো তারা।’

‘শুনতে যে গান, ইচ্ছে করে!’
বলল কোকিল করুণ স্বরে
ছোট্ট মেয়ে সে একটু পরে,
গাইতে গান এক শুরু করে।

কোকিলটাকে আঁধার ভোলায়,
আদরস্বরে সেই সে গান-ই
নিমপাতাও মিষ্টতা পায়
বরফ গলে হয় যে পানি।

‘কী মিষ্টি সুর, কণ্ঠে তোমার!
ঠিক তোমারই মতো,
ভুলিয়ে দিল দুঃখ শোক
আর দুশ্চিন্তা যত।’