ছাগলের কাণ্ড

ছাগলে খায় সকল কিছুই, খাওয়ার আগে ভাবে না

এমন কিছু নাই দুনিয়ায় ছাগলে যা খাবে না।

মামির ছিল ভীষণ সুনাম শাল সোয়েটার বুননে

উলের গোলা সঙ্গে নিয়ে ভাত বসাত উননে।

রান্না এবং বুননকর্ম একই সঙ্গে চালাত

নানান রঙের উলের জন্য মামাকে খুব জ্বালাত।

সোয়েটারের জন্য মামি উলের গোলা আনাল

সকাল থেকে আপন মনে হাফ সোয়েটার বানাল!

কী সুন্দর নকশা আহা লাল নীল আর শাদাতে

এমন সময় একটা ছাগল ঝাম্লা এল বাধাতে।

বইছে বাতাস ঝিরিঝিরি উদাস করা বিকেলে

ভাবল ছাগল বিকেলবেলার নাশতা হবে কী খেলে?

কাঁঠালপাতায় আর রুচি নেই, নেই রুচি আর ঘাসে রে

ছাগল তাকায় এদিক সেদিক, তাকায় আশেপাশে রে...

কী খাওয়া যায়? (খড় বিচালির সেট মেন্যুতে যাবে না)  

বইয়ের পাতা? ব্যাঙের ছাতা?  কিচ্ছু ওসব খাবে না।

ভাল্লাগে না ইলিশ ভাজা ভাল্লাগে না কাতলও

বিস্বাদ লাগে দই চমচম আর হাতুড়ির হাতলও!

ভাল্লাগে না কড়কড়া ভাত ভাল্লাগে না তরকারি

নতুন স্বাদের জন্য একটা নতুন কিছু দরকারি।

মামির পাশে উলের গোলা নানান রঙের, ছড়ানো

ভাবল ছাগল উলের গোলায় পেটটাকে যাক ভরানো।

ছাগল খেলো লাল নীল আর শাদা রঙের গোলা রে!

উলের শোকে মামি কাঁদে মামির দুচোখ ফোলা রে।     

কদিন বাদেই সেই ছাগলের বাচ্চা হলো, চমৎকার!

ছাগলছানার গায় জড়ানো বর্ণালি এক সোয়েটার!  

ছাগলছানার গায়ের পশম লাল-নীল আর শাদা রে

কেমনতরো কাণ্ড এটা! এইটা কেমন ধাঁধা রে!

মামি কাঁদে উলের শোকে ছাগল নাচে তাধিন ধিন

আজ ছাগলের ফুর্তি শুধু আজ ছাগলের স্বাধীন দিন...

[একটি বিদেশি ছড়ার দূরবর্তী ছায়া অবলম্বনে]

অলংকরণ: তুলি