সুখী বাংলা পরিবার

অলংকরণ: সাদমান মুন্তাসির

ওই...ওই...গুরাগারা পোলাপান সবগুলারে ডাকো
বায়োস্কোপের ভেতর দিয়া সকলে চোখ রাখো।
কী চমৎকার দেখা গেল...ছায়াছবি আইসা গেল
শোনো দিয়া মন,
একটা দেশে ছিল রে ভাই একটা বাংলা সন।
বাংলা সনের পরিবারে ছয়টা ছেলেমেয়ে
বাংলা সনের দিন কেটে যায় হেসে-খেলে-গেয়ে।
কী? কথা শুনে সবাই বুঝি অবাক হয়ে গেলে!
এদের ভেতর দুইটা মেয়ে, বাকিরা সব ছেলে।

কী চমৎকার দেখা গেল...বড় ছেলে আইসা গেল
ছেলের অনেক রাগ,
এই ছেলেটার মেজাজ গরম এক শত এক ভাগ।
সারাক্ষণই ঘেমে নেয়ে অস্থিরতায় থাকে
ছেলেটাকে সবাই শুনি ‘গ্রীষ্ম’ বলে ডাকে।

গ্রীষ্মের পরে এল মেয়ে বাংলা পরিবারে
ছিঁচকাঁদুনে এই মেয়েটা এত কাঁদতে পারে!
অপেক্ষাতে থাকি রে ভাই কান্না কখন থামে
এই মেয়েকে সবাই শুনি ডাকে ‘বর্ষা’ নামে।

কী চমৎকার দেখা গেল...আবার ছেলে আইসা গেল
ছেলের ‘শরৎ’ নাম
গ্রীষ্ম-বর্ষার মতন ছেলের নাই কোনো বদনাম।
এই ছেলেটা কবি কবি, প্রচণ্ড আবেগে
ঘুরে বেড়ায় কাশের বনে কিংবা সাদা মেঘে।

ছেলের পরে আবার ছেলে, ছেলেটা ফুটফুটে
ফসল খেতে এই ছেলেটা বেড়ায় ছুটে ছুটে।
উচ্ছলতায় ভরা এমন ছেলে পাওয়া ভার
সবাই তাকে ভালোবাসে, ‘হেমন্ত’ নাম তার।

কী চমৎকার দেখা গেল...ছোট ছেলে আইসা গেল
ছেলে উপস্থিত
বাংলা সনের এই ছেলেকে ডাকে সবাই ‘শীত’।
কেউ জানে না দোষটা যে কার, কিসের অভিশাপে
বাংলা সনের এই ছেলেটা ঠকঠকিয়ে কাঁপে।
দেখে মনে হবে বুঝি এর বয়সই বেশি
গ্রীষ্ম যদি এ দেশি হয়, এই ছেলে বিদেশি!

বাংলা সনের ছোট মেয়ে এল সবার মাঝে
এই মেয়েটা ফুলে ফুলে সাজে শুধু সাজে!
রঙে রঙে রঙিন হয়ে এই মেয়েটা হাসে
ভাইবোনেরা এই মেয়েকে খুবই ভালোবাসে।
মিষ্টি মেয়ে, লক্ষ্মী মেয়ে, গোছানো ছিমছাম
ঠিক বলেছ, ঠিক বলেছ ‘বসন্ত’-এর নাম।

কী চমৎকার দেখা গেল...দেখবাটা কী আর!
ছেলেমেয়ে নিয়া বাংলার সুখী পরিবার।