শৈশবকে অর্থবহ করে তুলছে কিশোর আলো
প্রিয় কিআ,
গুনে গুনে দ্বাদশে তোমার পদার্পণ। তোমায় যে শুভেচ্ছা জানাব, সে ফুরসত কই? সময়সীমা শেষ হওয়ায় চিঠি পাঠাতেই পারিনি। সে যাকগে, কয়েক দিন ধরেই তোমার শেষ সংখ্যা নিয়ে ভাবছি। ভাবতেই কেমন যেন ম্রিয়মাণ লাগে। আমি চাই আরও অনেক বারো পেরিয়ে, প্রজন্মের পর প্রজন্মকে ছাপিয়ে তুমি অক্ষয়িষ্ণু রয়ে যাও। কোনোকালে হয়তো প্রবীণ আমরা নবীনদের বলব, ‘এই যে দেখতে পাচ্ছিস কিশোর আলো নামক একটা রঙিন কাগজের স্তূপ, এটা কিন্তু আমাদের নিছকই একটা বিনোদনের মাধ্যম ছিল না। এটা ছিল একান্তই আমাদের একটা রঙিন জগৎ। যার একেক পৃষ্ঠার একেক রং ছুঁয়ে দিত আমাদের মনঃকোকনদ। এই রঙিন জগতেই আমরা করতাম কত আবদার, রাগ, অভিমান। কত খুশি, আনন্দ-আহ্লাদে ভরপুর ছিলাম আমরা। কতশত প্রতিপাদ্যে মুখর ছিলাম। আমরা কখনোই কিশোর আলোকে “ম্যাগাজিন, ম্যাগাজিন” বলে চড়াও করতাম না। কিশোর আলো দিন শেষে কিশোর আলোই। ইশ্! একবার যদি আবার সেই মোহময় জগতে অনুপ্রবেশের সুযোগ পেতাম।’ ভবিষ্যতে এই আফসোসই আমি করতে চাই না। প্রকৃতপক্ষে, কতখানি ধন্যবাদ তোমায় দিলে যে যৌক্তিক হবে, তা আমার অজানা। আমাদের এই শ্বাপদসংকুল সমাজে একঘেয়ে শৈশবগুলোকে ‘আকাশের মতো বাধাহীন’ করার মতো দুঃসাহসিক এক প্রতিপাদ্যে তুমি প্রত্যয়ী, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমাদের শৈশবটাকে কত নিঃশব্দভাবেই না তুমি অর্থবহ করে তুলছ। তুমি সত্যিই অদৃষ্টপূর্ব। আগামী দিনে তোমার প্রত্যুদ্গমন আরও শুভ হোক। শেষে বরাবরের মতোই একটা চাওয়া, কিআ, ভালো থেকো। অনেক এবং অনেক বেশি। কারণ, তুমি ক্লান্ত হয়ে পড়লে হৃতসর্বস্বতাগুলো যে আমাদের জেঁকে ধরবে!
ইচ্ছা
কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, কুড়িগ্রাম
কিআ: কেমন আছ? তোমার সঙ্গে আমাদের দেখা হয়েছিল রংপুরে, বিজ্ঞানচিন্তার অনুষ্ঠানে। মনে আছে? খুব সুন্দর লিখেছ তুমি। ‘মনঃকোকনদ’ শব্দটা বোধ হয় সর্বশেষ পড়েছিলাম মাইকেল মধুসূদনের কবিতায়। চমৎকার তোমার বাংলা শব্দচয়ন। নিয়মিত লেখা চাই তোমার কাছ থেকে। তোমার ইচ্ছা পূরণ হোক। ভালো থেকো।