দুষ্টু মাইশার ডায়েরি

অলংকরণ : সব্যসাচী চাকমা

প্রিয় কিআ,

আমি একটা কালো রঙের ডায়েরি। আমি একটু মোটাই, তোমার মতন নই। আমার নাম ‘Diary 2019’।  আমার মালিক হলো, এই তো তোমার নিয়মিত পাঠক (অনেক কিউট, একটু দুষ্টু) মাইশা। ও এক বছর ধরে তোমাকে চিঠি পাঠাবে বলে প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু ভয় ভয় করে আর পাঠাচ্ছে না। তারপর তুমি আবার সেটা ছাপবে কি না, তা নিয়েও ওর মনে যত্তসব দুশ্চিন্তা। ‘তারিখটা হলো ১৪.০৭.২০২১। আজ প্রথম হাতে এল কিআ’। এটা লেখা আছে পেছন থেকে মাঝের দিকের একটা পাতায়। খুব একটা পুরোনো পাঠক নয় মাইশা, তবে ও আমাকে যতটা লেখে না তার চেয়েও বেশি সময় কাটায় তোমাকে পড়ে। আমার তো প্রথম প্রথম অনেক হিংসে হতো, কিন্তু এখন ভালোই লাগে। আমার শুরুর দিকের কিছু পাতায় ওর লেখা নানা গল্প আছে। বেশির ভাগই অনেক মজার (আমার মনে হয়) ও তোমাকে এগুলো পাঠাতে চায়। জানো! ও না নতুন একটা গল্প লিখছে...এটা না ধারাবাহিক। ওর লেখার ভঙ্গি দেখলেই বোঝা যায়, সেটা ও তোমাকে পাঠাতে চায়। তুমি কি সেটা ছাপবে? আচ্ছা এখন আর নয়...ও আসছে, পরে কখনো কথা হবে। বিদায়! ভালো থেকো।

* ‘২৫.০২.২০২৩। কিআতে প্রথম চিঠি পাঠিয়েছি।’

মাইশা মর্তোজা
দশম শ্রেণি, যশোর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, যশোর

কিআ: আরে বাহ। মাইশা গোপনে ডায়েরি লেখে। আবার মাইশার হয়ে গোপনে চিঠি লেখে সেই ডায়েরি। এক কাজ করো ডায়েরি ২০১৯, তুমি ‘আজ প্রথম মাইশার চিঠি কিআতে ছাপা হলো’-এটা তোমার পাতায় লিখে মাইশাকে চমকে দাও। মজা হবে। আর মাইশাকে বলো, ধারাবাহিক না ছাপিয়ে আগে একটা গল্প দিয়ে শুরু করতে। তারপর না হয় ধারাবাহিক নিয়ে ভাবা যাবে। ভালো থেকো তোমরা।

প্রিয় কিআ,

জানো, হ্যারি পটার–এর ড্র্যাকো ম্যালফয়ের পদবি আর আমার নামের মধ্যে কিছু মিল আছে। ইন্টারনেট থেকে পেয়েছি, ম্যালফয় নামটা এসেছে ফ্রেঞ্চ ‘mal foi’ শব্দ দুটি থেকে, যার অর্থ ‘খারাপ বিশ্বাস’; কিন্তু ইংরেজি বানানে সেটা হয়েছে ‘Malfoy’। আমার নাম মনামী। এটাও এসেছে ফ্রেঞ্চ ‘mon amie’ বা ‘mon ami’ থেকে; যার অর্থ ‘আমার বন্ধু’। আমি ইংরেজিতে লিখি ‘Monamy’। দেখেছ, আমাদের দুজনের নাম একই ভাষা থেকে দুটি শব্দ হয়ে এসেছে; আর আমরা দুজনেই সেটি একটি শব্দ করে শেষের বর্ণগুলো পাল্টে দিয়েছি। অদ্ভুত মিল না! ও আরেকটা কথা, আমি কিন্তু তোমার কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই ডুয়োলিঙ্গোতে ফ্রেঞ্চ শেখা শুরু করেছি। আমি অবশ্য জয়নুল আবেদিনের ফ্রান্সে গিয়ে বিপদে পড়ার ঘটনা থেকেও শিক্ষা নিয়েছি। যাহোক আমার আগের চিঠি তুমি ছাপাওনি, ‘আমি ইনফিনিটি রাগ করেছি (এভাবে আমার ছোট ভাই কথা বলে)। আমি অবশ্য ঠাট্টা করছিলাম, আমি একেবারেই রাগ করিনি। কারও কারও চিঠি সপ্তমবারেও ছাপা হয়, আমারটা নাহয় দ্বিতীয়বারেই ছাপালে! আবার লেখা হবে। Au revoir!

মনামী জামান
নবম শ্রেণি, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা

কিআ: Chère Monami, সত্যিই অদ্ভুত মিল তোমাদের নামে। ফরাসি ভাষাটা দ্রুত শিখে ফেলো। ফরাসি সাহিত্যে দারুণ দারুণ গল্প আছে। ভাষা শিখে গেলে তুমি গল্পগুলো অনুবাদ করে আমাদের পাঠাতে পারবে। কী বলো? তোমার আর তোমার ছোট ভাইয়ের জন্য ইনফিনিটি ভালোবাসা। Reste bien toujours.

প্রিয় কিআ,

জানো, তুমি কী করেছ? তুমি আমার কান কেটে দিয়েছ। গত সংখ্যায় চশমা নিয়ে লেখা আমার একটা গল্প তুমি ছেপেছ ঠিকই, কিন্তু আমার স্কুলের নামই ভুল দিয়েছ। ‘বেলফুলিয়া’র জায়গায় তুমি লিখেছ ‘লেফুলিয়া’। হায় রে আমার কপাল! আচ্ছা তুমি কি দিন দিন ভুলোমনা হয়ে যাচ্ছ নাকি? খবরদার...! কবে হয়তো দেখব, বাড়িতে কিআই আসেনি। কেন আসেনি? কারণ, কিআ পথ ভুলে গেছে। সেদিন কপাল চাপড়াতে হবে, কপা‌ল, কপাল। আর নয়তো কিআর পাঠকদের নিজ উদ্যোগে ডাক্তার নিয়ে কিআ কার্যালয়ে হাজির হতে হবে। কারণ, তুমি তো আর নিজে থেকে ডাক্তারখানায় যাবে না, তাই না?

জিয়াদ হোসেন
একাদশ শ্রেণি, খুলনা পাবলিক কলেজ, খুলনা

কিআ: ইশ! কী ভুলটা করলাম, আসলে চশমা নেই তো! তোমাদের লেখা পড়তে পড়তে চোখের অবস্থা হয়েছে খারাপ। মাঝেমধ্যেই ভুল করছি। এ ভুলের ক্ষতিপূরণ হিসেবে তোমার স্কুলের নাম তিনবার লিখলাম—বেলফুলিয়া, বেলফুলিয়া, বেলফুলিয়া। আর ভুল হবে না। আর যদি হয়, কপাল চাপড়ে দিয়ো। তবে তোমার কপাল না, আমার। তাতে যদি কাজ হয়। ভালো থেকো।