লিচুগাছের নিচে

অলংকরণ: সব্যসাচী চাকমা

২০২৩ সালের প্রথম দিকে আমাদের স্কুলে শুরু হয় প্যারেড ও ডিসপ্লে। ভয়াবহ কোভিড মহামারির কারণে আমাদের স্কুল বন্ধ ছিল। তাই সবকিছু আগের মতো হতে বাংলাদেশের সব স্কুলেরই সময় লেগেছিল পুরো এক বছর। আমাদের স্কুলের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল। ২০২৩ সালে সব কিছু স্বাভাবিক হওয়ায় আমাদের স্কুলেও পুরো দমে প্যারেড আর ডিসপ্লে শুরু হয়। আমিও খুব উৎসাহী ছিলাম প্যারেড নিয়ে। তাই খুব চেষ্টাও করেছিলাম। কিন্তু আমি এই প্রথম যেহেতু প্যারেডে নাম দিয়েছিলাম, তাই আমার শিখতে সময় লাগছিল। ফাইনাল সিলেকশনের দিন আমাকে বাদ দিয়ে দিল। প্রথমে খুব মন খারাপ হলেও পরে দেখি আমার বান্ধবীদেরও বাদ দিয়ে দিয়েছে। তাই আমরা সবাই মন ভরা বেদনা নিয়ে মাঠের সামনে যে লিচুগাছ ছিল সেই লিচুগাছের নিচে গিয়ে বসে থাকি। যেহেতু বছরের প্রথম দিক ছিল, তাই নতুন অনেকের সঙ্গে আমার পরিচয় হয় ওই লিচুগাছের নিচে। তারাও আমাদের মতো বেদনা নিয়ে ওখানে বসেছিল। এই লিচুগাছের নিচে বসে আমরা সবাই বিভিন্ন গল্প, নিজেদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ভৌতিক ঘটনা ও বিভিন্ন মুভি নিয়ে কথা বলতাম। বিশেষ করে ভূত নিয়ে বেশি আগ্রহ ছিল স্নেহার। ওর সঙ্গে ঘটা বিভিন্ন ভৌতিক অভিজ্ঞতার কথা আমাদের বলল। মাসুমা, অর্থি আর রুকাইয়া হলো মুভিবিশেষজ্ঞ। তাদের ব্যাখ্যা শুনেই আমাদের বেশির ভাগ সময় পার হয়েছে। সুবহা আর কোয়েলের কথা না বললেই নয়। তারা আমার গল্পের বই পড়ার সাথি। ওরাও লিচুগাছের নিচে ছিল তখন। আমরা এবার অষ্টম শ্রেণিতে উঠলাম। আমাদের শাখাও এখন বদলেছে। কিন্তু ওই লিচুগাছ এখনো সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে।

তাসফিয়া রহমান

অষ্টম শ্রেণি, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, লালমনিরহাট