এই চিঠি তোমাদের জন্য

সব সময় তোমরা চিঠি লেখো কিআর কাছে। কিআতে কী দেখতে চাও কী চাও না, আম্মু কেন বকা দিল, ছোট বোন কেন দুষ্টুমি করল—এমন কত কী লেখো তোমরা! তোমাদের যা মনে আসে তা–ই লিখে পাঠাও কিআর কাছে। কিআর একেবারে প্রথম সংখ্যা থেকে চলছে এই চিঠিপত্তর বিভাগ। রোজ চিঠি আসত। কয়েক সপ্তাহ পর ভরে যেত চিঠির বাক্স, তারপর বস্তা। তারপর কিআবাহিনী এসে খুলত সব খাম। আমাদের হাতে চলে আসত তোমাদের পাঠানো সুন্দর সুন্দর সব চিঠি।

এটা আমাদের খুব প্রিয় একটা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমরা কোনো দিন ভাবিনি, তোমাদের ছোট্ট হাতের গোটা গোটা অক্ষরে লেখা চিঠি, স্কেল ধরে মাত্রা ঠিক করে লেখা চিঠি কিংবা নানা রঙের কলমে আঁকা রঙিন ছবি ভর্তি চিঠিগুলো আমাদের হাতে আসবে না। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সেটা হয়েছে। দুই মাস ধরে তোমাদের চিঠি ছুঁয়ে দেখতে পারছি না, কারণ আমরা কাজ করছি যার যার বাসা থেকে। এ কদিনে আরও ভালোভাবে টের পেলাম, ছোট্ট সাদা কাগজে লেখা সেই চিঠিগুলো আমাদের কাছে কতটা মূল্যবান। আমরা জানি, এগুলো শুধুই হাতে লেখা চিঠি নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে তোমাদের আবেগ, ভালোবাসা।

চিঠি আমরা ই–মেইলেও পেয়েছি। কিন্তু ই–মেইলে তো তোমাদের হাতের লেখা বোঝা যায় না, ছোঁয়া যায় না। সবার লেখার একই ফন্ট। হাতের লেখার যে বৈচিত্র্য, সেটা কি ই–মেইলে পাওয়া যায় কখনো? তবু করোনার কারণে এখন আমাদের ই–মেইলেই কাজ চালাতে হচ্ছে। হয়তো এভাবে চলবে আরও কিছুদিন। তারপর আবার সব ঠিক হয়ে যাবে। আগের মতো হাসি–আনন্দে মেতে উঠব সবাই। আবার তোমাদের চিঠিতে ভরে উঠবে কিআ কক্ষ। তোমাদের পাঠানো খাম খুলতে খুলতে হাত ব্যথা হয়ে যাবে কিআবাহিনীর। কারণ, জানি এ দুই মাসে কী কী ঘটেছে, সেগুলো কিআকে জানাতে তোমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছ। ঠিক যেমন আমরা অপেক্ষা করছি তোমাদের রঙিন সব চিঠির। আমাদের কাছে তোমাদের প্রতিটি চিঠিই রঙিন। প্রতিটি চিঠিই অনেক প্রিয়। আমরা জানি, আগের চেয়ে দ্বিগুণ–তিন গুণ বেশি চিঠি পাঠাবে তোমরা। সবাই নিরাপদে থেকো। ভালো থেকো।

তোমাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।

তোমাদের কিআ ভাইয়া।