একবার না পারিলে দেখো শতবার

অলংকরণ: সব্যসাচী চাকমা

প্রিয় কিআ,

গতবারের কিআতে সবার চিঠির মধ্যে আমার নামটা দেখে প্রায় বিস্মিত হয়েছিলাম। কিন্তু চিঠিটা পড়ার পর আমি নিজের কথার সঙ্গে একটুও মিল পাইনি। আরেকটু খেয়াল করতেই নামের পাশে দেখলাম রংপুর বিভাগ। তখন আর বুঝতে বাকি রইল না যে চিঠিটা আমার নয়। অন্য কারও। খুবই হতাশ হলাম। ইস! কত আগ্রহ নিয়ে চিঠিটা লিখেছিলাম। সেদিনের পর থেকে প্রায় সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছিলাম যে, আর চিঠি লিখব না। কিন্তু ঠিক ওই মুহূর্তে মনে হলো একবার না পারিলে দেখো শতবার। এটা মনে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও একটি চিঠি লিখে ফেললাম। আমি জানি, তুমি এই চিঠিটা পড়বে। তোমার পড়াটাই আমার কাছে অনেক কিছু। ভালো থেকো কিআ।

মায়মুনা আনজুম
অষ্টম শ্রেণি, জয়দেবপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, গাজীপুর

কিআ: একবার না পারিলে দেখো শতবার—কথাটি কিন্তু একদম সত্যি। তোমার কী মনে হয়? ভালো থেকো মায়মুনা। আরও অনেক অনেক চিঠি লেখো।

দুষ্টু কিআ,

তোমার ওপর আমি ভীষণ রেগে আছি। বড্ড আলসে হয়ে গেছো তুমি। জানো, আমার এলাকায় হকার চাচাদের কাছে আমি প্রায়ই তোমার কথা জিজ্ঞেস করি। তাঁরা তোমার খবর দেবেন কি, তাঁরা নাকি কোনো দিন তোমার নামই শোনেনি! আমাদের এখানে ছোটখাটো একটা লাইব্রেরি আছে, সেখানেও তোমার খোঁজ করেছি আমি। তাঁদেরও একই জবাব। বইয়ের দোকানগুলোতেও সহজে তোমার দেখা মেলে না। বিশ্বাস করো, সেদিন স্কুলের নাম করে বাসা থেকে আগে আগে বেরিয়ে শহরের সব ক’টা বইয়ের দোকান খুঁজেছি, কোথাও আমাদের কিআ মহাশয় নেই! তোমায় প্রথম পেয়েছিলাম আমার ছোট আপুর বাসায়, সে আবার থাকে ঢাকায়। ওই একটাই কপি আমার কাছে, ডিসেম্বর ২০১৭–এর সংখ্যা! ধরেই নিলাম, অহংকারী কিআর হয়তো আমার এই ছোট্ট শহরে আসার কথা মাথায়ই আসেনি। একদিন ঘটনাক্রমে আমার আরেক বইপ্রেমী বন্ধুর কাছে তোমার খবর পেলাম। ও বলল, মাসের ১৫-১৬ তারিখের আগে নাকি তোমাকে বইয়ের দোকানগুলোয় পাওয়াই যায় না! সেই থেকে শুরু করলাম দিন গোনা আর প্রতিদিনের রিকশাভাড়া থেকে ৫ টাকা জমানো ( কারণ বাসা থেকে বাজে কাজের জন্য টাকা দেবে না!)

এ তো গেল ভূমিকা। জানো, আমার শহরে একটা কিআ বুক ক্লাবও নেই। যখন দেখি, বিভিন্ন অঞ্চলে কিআ বুক ক্লাবের কত কার্যক্রম, কত কর্মশালা, মাসিক সভা হচ্ছে; তখন যে আমার কী রকম লাগে, তুমি তা বুঝবে না... আমার সমবয়সী ছেলেমেয়েদের স্বেচ্ছাসেবা কার্যক্রম, পিকনিক কতকিছু হয়, সেসব দেখলে কী মনে হয় জানো, আমাদের দেশটা বুঝি কেবলই রাজধানীকেন্দ্রিক...।

তোমার কাছে আমার একটা অনুরোধ, প্লিইইইইইজ কিআ, তুমি আমাদের শহরে বেড়াতে আসো। জানো, আমি একা নই, আমার আরও অনেক বন্ধু তোমার ভক্ত এবং একই সঙ্গে তোমার কুঁড়েমির কারণে ভীষণ হতাশ। আমি আমাদের সবার পক্ষ থেকে এই প্রথম তোমার কাছে চিঠি পাঠাচ্ছি। প্লিজ কিআ, আমাদেরকে হতাশ কোরো না… আতিথেয়তা নিয়ে তোমায় চিন্তা করতে হবে না, আমরা তোমার আপ্যায়নে কোনো রকমের ত্রুটি রাখব না। একবার এসে দেখো, আমরা তোমায় আর যেতে দেব না।

সায়েরীন আদৃতা
দশম শ্রেণি, পটুয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পটুয়াখালী

কিআ: তুমি কিআ–তে প্রকাশিত চিঠিগুলো একবার দেখলেই বুঝবে দেশের সব অঞ্চল থেকেই চিঠি আসছে। তোমার এলাকায় কিআ পাওয়া না গেলে ০১৭০৮৪১১৯৯৬ এই নাম্বারে কল দিয়ে অর্ডার করতে পারো। করোনার কারণে আমাদের অনেক কার্যক্রমই বন্ধ আছে। ফলে তোমরা হয়তো ভাবছ আমরা অলস হয়ে গেছি। পরিস্থিতি ভালো হলেই আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করব। ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করো। ভালো থেকো।

প্রিয় কিআ,

তুমি কেমন আছো? আমি ভালো আছি। এই চিঠি তোমাকে লেখা আমার প্রথম চিঠি। আমি তোমাকে প্রথম চিনি আমার খালাতো ভাইয়ের বুকশেলফ থেকে। এরপর থেকে তোমার ভক্ত হয়ে গিয়েছি। তুমি কি জানো, আমি ক্রিকেট দেখতে ও খেলতে কত্ত পছন্দ করি? আমাকে না দেখলে বোঝা যাবে না। তুমি কিন্তু বেশি বেশি করে ক্রিকেট নিয়ে লেখা ছাপাবে। তুমি জানো, আমার সবচেয়ে পছন্দের ক্রিকেটার মোস্তাফিজুর রহমান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আমি ক্রিকেট নিয়ে একটি ডায়েরি বানাচ্ছি। সেটার জন্য আমার ক্রিকেটের অনেক ছবি প্রয়োজন। তুমি আমার চিঠি ছাপাতে থাকো আর আমি ছবি সংগ্রহ করি।

ইউশায়রাহ মোবাশ্বির
পঞ্চম শ্রেণি, শহিদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজ, ঢাকা

কিআ: সেটাই ভালো। তোমার শখটা আমার খুব ভালো লেগেছে। ডায়েরি বানানো হয়ে গেলে ছবি তুলে পাঠাবে কিন্তু। তুমিও কি ক্রিকেট খেলো? ব্যাটার না বোলার? লিখে জানাও। ভালো থেকো।

প্রিয় কিআ,

চিঠির শুরুতেই তোমাকে জানাই একটা আবদার, যেটা তোমাকে পূরণ করতেই হবে। তুমি ক্রিকেটার নিগার সুলতানা জ্যোতির সাক্ষাৎকার ছাপাও। ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাঘিনীরা প্রথমবার সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু তারপরও তাদের কথা কেউ বলছে না। তাই এই কাজটা তুমিই শুরু করো। আর সাক্ষাৎকার দলের সঙ্গে আমাকে নিয়ো কিন্তু।

নাফিজা মাহাবুবা
দশম শ্রেণি, সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা

কিআ: খুব ভালো বুদ্ধি। সুযোগ হলে অবশ্যই তাঁর সাক্ষাৎকার নিতে যাব আমরা। তোমাকেও নেব সঙ্গে। তুমি প্রশ্ন তৈরি করো। ভালো থেকো।