এত বড় চিঠি

প্রিয় কিআ,

সেদিন অঙ্ক করছিলাম। তখন কিছু একটা আঁকতে ইচ্ছে হলো। তাই কলম দিয়েই শুরু করে দিলাম আঁকিবুঁকি!

প্রথমে এঁকে ফেললাম একটা সি-হর্স। তারপর মনে হলো আরও কিছু আঁকি (শুধু সমুদ্রের কিছু)! তারপর আঁকলাম অক্টোপাস, স্টারফিস, তিমি, স্টিংরে ফিশ! (শুধু আঁকতেই ইচ্ছে হচ্ছিল)

তখন মনে হলো, যদি সমুদ্রের প্রাণী সম্পর্কে আরও জানতে পারতাম, জানতে পারতাম সমুদ্রের অতল গভীরের রহস্য সম্পর্কে! কত ভালো হতো! তখনই আবার মনে হলো, আরে কিআ তো আছেই, ওর কাছে আবদার করলে ও হয়তো আমার আবদার রাখতে পারে। ও হয়তো একটা সংখ্যা ছাপাতে পারে, ‌‘সমুদ্রের রহস্য’ বা ‘সামুদ্রিক প্রাণী’, তাই লিখেই ফেললাম চিঠি। আর আমার কলম দিয়ে আঁকা সামুদ্রিক প্রাণীগুলো কেমন হয়েছে? বলবে কিন্তু। কিন্তু জানো, আমার মন বারবার বলছিল, ‘কিআ তোমার চিঠিই ছাপবে না। কিন্তু আবদার মতো সংখ্যা ছাপবে!’

আমি বললাম, ‘সে পরে দেখা যাবে।’ বলে তো ফেললাম জোর গলা দিয়ে। কিন্তু আমি নিজেই তো জানি না তুমি আমার চিঠি ছাপবে কিনা! তা–ও তোমার ওপর অনেক বেশি বিশ্বাস নিয়ে এই এত বড় চিঠিটা লিখেই ফেললাম। এখন দেখি কার কথা ঠিক হয়—মনের কথা না আমার!

অনিক বিশ্বাস
নবম শ্রেণি, মাধবপুর পাইলট উচ্চবিদ্যালয়, হবিগঞ্জ

কিআ: তো কী বুঝলে? কার কথা ঠিক হলো?

প্রিয় কিআ,

এটা কেমন সংখ্যা? আমি ভাবতেও পারিনি চিঠিপত্তর বিভাগ ছাড়া কোনো সংখ্যা হতে পারে। আমি ভাবতাম তুমি এই বিভাগটা ছাড়া কোনো সংখ্যাই বের করবে না। কিন্তু আমার ভাবনাকে ভুল প্রমাণ করে চিঠিপত্তর বিভাগ ছাড়াই সংখ্যা ছাপলে। যাই হোক, অভিনন্দন! ফাটাফাটি একটা সংখ্যা। অসম্ভব ভালো ছিল। আর একটা কথা। কিআর পৃষ্ঠা সংখ্যা বাড়াও। ভালো থেকো। জানি, এই সাদামাটা চিঠি তুমি কখনোই ছাপাবে না। কিন্তু, তা–ও পাঠাই। জানি, না ছাপালেও একবার পড়বে। এই মেয়েটার চিঠিটা তুমি একবার পড়বে এটাইবা কম কী এই মেয়েটার জন্য। তা–ই না? তাই পাঠালাম।

নিনিতা রহমান
সপ্তম শ্রেণি, সাবেরা সোবহান সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

কিআ: আমরাও কখনো ভাবিনি যে চিঠিপত্তর ছাড়া কিআ বের হবে। কিন্তু এ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না। ১০০টি গল্প তো ছিলই, সঙ্গে আবার দুটো উপন্যাস। তাই বাধ্য হয়ে চিঠিপত্তর বাদ দিতে হয়েছে। খেলায় যেমন টিম কম্বিনেশনের জন্য ফর্মে থাকা খেলোয়াড়কে বাদ দিতে হয়, অনেকটা ওই রকম।

প্রিয় কিআ,

আমি বেশি ভালো নেই। পড়ার চাপে খাটো হয়ে যাচ্ছি। ভেবেছিলাম নীরব পাঠক হয়ে থাকব। গতকাল বাসায় একটা পাখি ঢুকে গিয়েছিল। ভাবলাম, তোমাকে কথাটা জানিয়ে দিই। ছোট থেকে ভাবতাম, একটা পাখি পুষব। ইচ্ছেটা মনে হয় সত্যি হলো। কিন্তু পাখিটারও তো স্বাধীনতা আছে। পাখিটা খুব ভয় পেয়েছিল। ভয়ে দরজা–জানালা কিছুই দেখছে না, তাই বাইরেও যেতে পারছে না। দেখো কাণ্ড। তিন ঘণ্টা অভিযান চালানোর পর পাখিটাকে মুক্ত করা গেল। পাখিটার হয়তো আমাদের বাসা ভালো লেগেছিল, তাই তো তিনবার বাইরে গিয়ে আবার ফিরে এসেছিল বাসায়। চতুর্থবারের সময় উড়ে গেল। একটু দুঃখ লেগেছিল, আবার ভালোও লেগেছিল। আমি আবার একটু বেশিই কথা বলি। দেখো, চিঠি লিখতে গিয়ে আস্ত রচনা লিখে ফেললাম। ভালো থেকো। বেশি বেশি করে খেয়ে মোটা হও। নাহলে পৃথিবীর সবচেয়ে চিকন হিসাবে গিনেস বুকে নাম উঠে যাবে। আরে, একটা কথা বলতে তো ভুলেই গিয়েছি, পাখিটার ছবিও পাঠিয়ে দিচ্ছি। বিদায় তোমাকে খুব ভালোবাসি।

উম্মে ফৌজিয়া আফরোজ
অষ্টম শ্রেণি, আলহাজ এয়াকুব আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ, চট্টগ্রাম

কিআ: বাহ, খুব সুন্দর পাখি তো। কী পাখি এটা? তুমি পাখিটাকে আটকে না রেখে যে স্বাধীনভাবে যেতে দিয়েছ, এ জন্য তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। আমার মনে হয়, পাখিটাও তোমাকে ধন্যবাদ দেওয়ার জন্যই বারবার ফিরে আসছিল। ভালো থেকো।

প্রিয় কিআ,

আমি আমার মা–বাবা আর ছোট বোনকে নিয়ে রংপুরে এসেছি। এখানে আমার বড় বোনের বাসা। আমরা একসঙ্গে খুব মজা করেছি। সঙ্গে কিশোর আলো পড়ে খুব ভালো লাগছে। ভালো থেকো। নতুন বছরের শুভেচ্ছা নিও।

আদিত্য দেব সরকার
দ্বিতীয় শ্রেণি, সামারফিল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ঢাকা

কিআ: আরে বাহ, তুমি তো খুব সুন্দর গুছিয়ে লেখা শিখেছ। কী কী মজা করলে তা তো বললে না। আবার চিঠি লিখে জানাবে, ঠিক আছে? তোমাদের সবাইকে নতুন বছরের অনেক শুভেচ্ছা।