কিআর পক্ষ থেকে কেক

অলংকরণ: রেহনুমা প্রসূন

প্রিয় কিআ,

প্রথমেই নববর্ষের শুভেচ্ছা। একটা মজার বিষয় শোনো, আমার, আমার ভাই, আমার চাচাতো বোন ও ছোট খালামণির জন্মদিন একই মাসে। মানে জানুয়ারিতে। এর মধ্যেও একটি মজার বিষয় রয়েছে। আমার চাচাতো বোনের জন্মদিন ১২ জানুয়ারি। তার ঠিক আট দিন পর মানে ২০ জানুয়ারি আমার ছোট ভাইয়ের জন্মদিন। আবার তার ঠিক ছয় দিন পর ২৬ জানুয়ারি আমার ছোট খালামণির জন্মদিন। তার ঠিক চার দিন পর ৩০ জানুয়ারি আমার জন্মদিন। আমি চাই তুমি আমাদের সবাইকে উইশ করো। আমি কিন্তু সবাইকে বলে ফেলেছি, তুমি আমাদের সবাইকে উইশ করবে এবং সবাই অনেক আশা নিয়ে আছে যে তুমি সবার আগে আমাদের উইশ করবে। এদিকে আমাদের স্কুলের রেজাল্ট দিয়েছে। আমাদের সবার জন্মদিনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখো তো আমার রোল কত হতে পারে? একটা ক্লু দিয়ে রাখি, ওপরের সব তারিখের মধ্যকার পার্থক্য কিন্তু দুই। এবার তুমি একটু চিন্তা করো আর মাথা খাটাও। ভালো থেকো। আর হ্যাঁ, যদি উত্তরটা পারো, তাহলে কিন্তু বলো। আর না পারলে আমি বলে দেব।

ফাতিহা মুহ্সানাত
চতুর্থ শ্রেণি, পুলিশ লাইনস মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যশোর

কিআ: ফাতিহা, তুমি বোধ হয় ভুলে গেছ যে আমি গণিতে কাঁচা। প্রায়ই খেয়াল করবে, গণিতের ধাঁধা মেলাতে পারি না। এরপর আবার তোমার ধাঁধা। তুমিই বলে দাও সমাধান। আমি বরং তোমাদের সবাইকে জানাই শুভ জন্মদিন। কিআর পক্ষ থেকে এই কেকটি নাও। সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

প্রিয় কিআ,

জানো, এখন না আগের মতো আর বই উৎসবের অংশ হতে পারি না! নতুন বইয়ের গন্ধ নিতে পারি না! কী যে খারাপ লাগে! তবে প্রতি মাসে নতুন কিআ পেয়ে সেই দুঃখটুকু ভুলে যাই অনেকটাই! আমার প্রথম কাজ হচ্ছে কিআটা নিয়ে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ওলটানো। আমার দেখাদেখি আমার ছোট বোনেরও কিআর প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। এটা দেখে খুবই ভালো লাগে। বর্তমানে তো সবাই ছোট্ট স্মার্টফোনে বন্দী! মুহূর্তের মধ্যেই বার্তা পৌঁছে যায় অপর প্রান্তে। তোমাকে অনেক ধন্যবাদ এই কারণে যে চিঠি লেখার প্রচলনটা তুমি এখনো বহাল রেখেছ! আগের দিনগুলো কী সুন্দরই না ছিল, তাই না? সবাই চিঠিতে নতুন সংবাদের আশায় অপেক্ষায় থাকত! আমিও আজ অপেক্ষায় থেকে তোমাকে বিদায় জানাচ্ছি! ভালো থেকো!

মেহের নিগার
এইচএসসি পরীক্ষার্থী, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা

কিআ: ঠিকই বলেছ। আজকাল চিঠি লেখার প্রচলন উঠেই গেছে বলা যায়। তবে চিন্তা কোরো না, আমাদের চিঠিপত্তর বিভাগ থাকবেই। আমরা খুবই উপভোগ করি তোমাদের চিঠিগুলো। অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করি তোমাদের চিঠির জন্য। সব হয়তো ছাপতে পারি না, তবে প্রতিটি চিঠিই পড়ি। তোমরা আরও বেশি করে চিঠি পাঠাতে থাকো। শুধু কিআকেই না, পাঠাতে পারো তোমার বন্ধুদেরও। চিঠির একটা আলাদা মজা আছে। কী বলো?

প্রিয় কিআ,

তোমাকে কি দিনে–রাতে যখন খুশি, তখন চিঠি পাঠাতে পারব? মানে রাতের ১২টা–১টায় চিঠি পাঠালে কোনো সমস্যা নেই তো? তখন সাধারণত আমাকে ফোন ধরতে দেয় না আম্মু। তারপরও যদি তোমাকে লিখব বলে ফোন ধরতে পারি। আসলে এটা জিজ্ঞেস করার কারণ হচ্ছে, আমিও ইদানীং তোমার মতো সবকিছু ভুলে যাচ্ছি। তবে রাতের ১২টা–১টার দিকে মোটামুটি সবকিছু মনে আসে আমার। তখন আমি তোমাকে কী কী লিখব, সব গুছিয়ে নিতে পারি। কিন্তু যা যা গুছিয়ে রাখি, সকালে সব ভুলে যাই। কী এক কাণ্ড! এই দেখো, কাল যেন কী কী গুছিয়ে রেখেছিলাম আর এখন সব ভুলে গিয়ে সব আবোলতাবোল লিখছি। তুমিও তো আবার সবকিছু ভুলে যাও। আমার প্রশ্নের উত্তরটা দিতে ভুলে যেয়ো না আবার। উত্তরটা জানা অনেক প্রয়োজন। আর আমার কাছে তোমার জন্য অনেক ভালোবাসা জমা আছে। সেখান থেকে এক বাক্স ভালোবাসা পাঠিয়ে দিলাম নিউ ইয়ারের গিফট হিসেবে।

নাফিসা তাবাসসুম
নবম শ্রেণি, দরবেশপুর উচ্চবিদ্যালয়, লক্ষ্মীপুর

কিআ: নাফিসা, তুমি যখন ইচ্ছা তখন চিঠি পাঠাতে পারো। কোনো সমস্যা নেই। এমনকি রাত ১২টায় পাঠালেও আমরা খুশিই হব। তবে তোমার যেহেতু ১২টার দিকে সব মনে পড়ে, তুমি এক কাজ করো—পরীক্ষাগুলো রাত ১২টার পর দেওয়া যায় কি না দেখো, তাহলে আর তোমার ভালো রেজাল্ট কেউ আটকাতে পারবে না। তোমার উপহার খুবই সুন্দর। অনেক ধন্যবাদ। ভালো থেকো।

প্রিয় বন্ধু কিআ,

জীবনে প্রথম তোমাকে কিনলাম। আমাদের গ্রামের লাইব্রেরিতে তোমাকে পাচ্ছি না। তাই তোমাকে কিনতেও পারছি না। প্রতি মাসে ব্যক্তিগত কাজে জেলা সদরে এলে তোমার সঙ্গে দেখা হয়। তোমাকে ফেসবুক জগতে অনেক জানলাম। কিন্তু প্রথম সরাসরি দেখা হলো সেপ্টেম্বরে। লাইব্রেরিতে দাঁড়িয়ে পড়লাম কিছুক্ষণ। ততক্ষণে তোমার প্রতি ভালোবাসা জন্মে গেল। কিন্তু টাকার জন্য কিনতে পারিনি। অক্টোবরে আর জেলা সদরে আসা হলো না। তাই মিস করলাম। আবার নভেম্বরে কাজে এসে জেলা সদরের লাইব্রেরিতে তোমার সঙ্গে দেখা। তাও কী যেন সমস্যার কারণে কেনা হয়নি। অবশেষে ডিসেম্বরের ১১ তারিখ তৃতীয়বারের মতো জেলা সদরের লাইব্রেরিতে তোমার সঙ্গে দেখা। এবার আর তোমাকে ছেড়ে যেতে মন চাচ্ছিল না। তাই নাশতার টাকায় তোমায় কিনলাম। তোমাকে কেনায় তুমি কি খুশি হওনি? তোমার কাছে অনুরোধ সব উপজেলা পর্যায়ের লাইব্রেরিতে পৌঁছাও। তাহলে আমার মতো অনেক বন্ধু তোমাকে ভালোবাসবে।

মো. আবদুল ওহাব
দশম শ্রেণি, চর কৈলাস হাদিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, নোয়াখালী

কিআ: এত কষ্ট করে তোমাকে কিআ সংগ্রহ করতে হয় জেনে খারাপই লাগছে। আমরা চেষ্টা করছি তোমাদের আরও কাছে পৌঁছানোর। তারপরও যদি কেউ কিআ না পাও, ০১৭০৮৪১১৯৯৬ (সার্কুলেশন) এই নম্বরে যোগাযোগ কোরো। অনেক ধন্যবাদ তোমার চিঠির জন্য। ভালো থেকো।