পুরানো স্কুলকে বিদায়

অলংকরণ: নাইমুর রহমান

প্রিয় কিআ,
২০২০ সালে আচমকা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সবকিছু। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল স্কুলও। তারপর অপেক্ষা আর অপেক্ষা। একদিন হঠাৎ করেই আম্মু স্কুল পাল্টে অন্য স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিল আমাকে। বিদায় দিতে বা নিতে পারলাম না কারও কাছ থেকেই। তাই তোমার মাধ্যমেই আমার কেন্দ্রীয় উচ্চবিদ্যালয়ের কিআ–পাগল বান্ধবীরাসহ সব বান্ধবীকে বলছি, তোদের অনেক মিস করছি। পুরোনো মজা, দুষ্টুমিগুলো খুব মনে পড়ে। তোদের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। সঙ্গে কিআর জন্যও শুভকামনা (নতুন করে আবার ‘অয়ন-জিমি’র গল্প দেওয়ার জন্য)। নববর্ষের শুভেচ্ছা।

রোকাইয়া জাহীন
অষ্টম শ্রেণি, চকরিয়া গ্রামার স্কুল, কক্সবাজার

কিআ: আহা, সত্যিই তোমার জন্য খারাপ লাগছে। ওরাও নিশ্চয়ই মিস করছে তোমাকে। তবে চিন্তা কোরো না, মহামারি কেটে গেলে একদিন না হয় আগের স্কুল থেকে ঘুরে আসবে। তবে আপাতত সবাই বাসায় থাকো। তোমাদের সবাইকেই নববর্ষের শুভেচ্ছা। ভালো থেকো সবাই।

প্রিয় বন্ধু কিআ,
একটা সময় তোমাকে আমি চিনতামই না। হঠাৎ একদিন হাতে পেলাম তোমাকে। একটু পড়েই উৎসাহ পেলাম। এখন আমি তোমার নিয়মিত পাঠক। জানো? আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি মাত্র ১৫ বছর বয়সে যুদ্ধে গিয়েছিলেন। ছোটবেলা থেকেই মুক্তিযুদ্ধের কাহিনি শুনেছি বাবার মুখে। গত ১১ জুন ২০১৯-এ আমি তাঁকে হারিয়ে ফেলেছি। আমি আমার বাবার জন্য অনেক গর্ব বোধ করি।

ভালো থাকবে কিআ, তোমার সঙ্গে আমার বাবাকে নিয়ে গল্প করে ভালো লাগল।

তাহ্‌মিনা আরিয়া
নবম শ্রেণি, নেত্রকোনা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, নেত্রকোনা

কিআ: গর্বিত হওয়ারই কথা। কত অল্প বয়সে দেশ রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তোমার বাবা। এমন সাহসী মানুষদের অবদানেই তো আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। দেশকে এগিয়ে নেওয়ার কাজটা এখন তোমাকে–আমাকেই করতে হবে। বাংলাদেশ ভালো থাকলে ভালো থাকবেন তোমার বাবার মতো মুক্তিযোদ্ধারা। অনেক অনেক ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা তোমার বাবার জন্য। তুমিও ভালো থেকো। নিয়মিত চিঠি লিখো।

প্রিয় কিআ,
তুমি আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। আমি ২০১৮ সাল থেকে কিশোর আলো পড়ি। তুমি একটি কার্টুন–সংখ্যা করো। কার্টুন নিয়ে ফিচার তুমি ছাপো ঠিকই, কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কোনো সংখ্যা করোনি। আগে কার্টুনের মান খুবই ভালো ছিল, কিন্তু আজকালকার কার্টুন সে রকম ভালো লাগে না। তাই আমি চাই তুমি কার্টুনের একটি সংখ্যা করো। আর তুমি কি করোনার ভ্যাকসিন নিয়েছ? আর এখন তো করোনা নেই, তাই এখন একটু মোটাসোটা হয়ো। বিদায়।

সৈয়দ সাজিদ হোসাইন
দশম শ্রেণি, মাসকট ইনোভেটিভ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা

কিআ: করোনা নেই? কে বলেছে? করোনায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। তাই ভুলেও ‘করোনা আর নেই’ ভেবে লাফিয়ে বাইরে চলে যেয়ো না। এত দিন যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেছ, সেভাবেই মানতে থাকো। আমি তো ভ্যাকসিন নিইনি এখনো। কী করে নেব বলো, আমি তো ছোট! কার্টুন নিয়ে একটা সংখ্যা করার পরিকল্পনা আমাদের আছে। ভেবেছিলাম সারপ্রাইজ দেব, তুমি আগেই বলে দিলে! কী আর করা! ও, ভালো কথা, তুমি কিন্তু কার্টুন নিয়ে লেখা পাঠাতে পারো। পাঠাবে?

প্রিয় কিআ,
আজ আমার মন ভালো নেই। সেই জন্যই তো আমি তোমার কাছে লিখছি। কিছুদিন হলো আমার বন্ধুদের খুব মিস করছি। আচ্ছা, তুমিও তো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড, তোমার কাছে আমার একটা অনুরোধ আছে। তুমি আমার জন্য ‘বারমুডা ট্রায়াঙ্গল’ সম্পর্কে একটা ফিচার ছাপবে। প্লিজ প্লিজ প্লিজ, আমাকে নিরাশ কোরো না।

তালুকদার নূসরাত
সপ্তম শ্রেণি, ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রংপুর

কিআ: মন খারাপ নিয়ে একটা অনুরোধ করেছ, ফেলি কী করে? তোমার কথামতো ‘বারমুডা ট্রায়াঙ্গল’ নিয়ে একটা ফিচার ছাপব। অপেক্ষা করো। আশা করি মন ভালো হয়ে যাবে।

প্রিয় কিআ,
তোমার আমার বন্ধুত্বের সম্পর্ক খুব বেশি দিনের নয়। ২০১৭ সালের জুন মাসে প্রথম আলো পত্রিকায় তোমার ছবি দেখে কৌতূহলী হয়ে উঠলাম তোমার সঙ্গে আলাপ করার জন্য। আলাপ হলো, বন্ধুত্বও হলো। সেই থেকে তুমি আমার প্রিয় বন্ধু হয়ে গেলে। যখনই আমার মন খারাপ হয়, তোমার সঙ্গে কথা বললেই যেন মনটা ভালো হয়ে যায়। যখন পড়ালেখায় মন বসে না, তোমার সঙ্গে কথা বললে যেন নতুন উদ্যমে পড়ালেখা করতে পারি। ভালো থেকো বন্ধু। এভাবেই যেন আমরা সব সময় বন্ধু হয়ে থাকতে পারি। আর আমার জন্যও দোয়া কোরো, যেন জীবনে একজন ভালো মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারি।

আহনাফ রহমান
একাদশ শ্রেণি, নটর ডেম কলেজ, ঢাকা

কিআ: ধন্যবাদ বন্ধু। শুভকামনা রইল তোমার জন্য। ভালো থেকো।