কীভাবে একজন তুখোড় ছাত্র হওয়া যাবে

উইকিহাউ সাইটে আছে কীভাবে খুব ভালো ছাত্র হওয়া যাবে। অ্যাশলি রিচার্ড নামের একজন স্কুল-কাউন্সেলর বা পরামর্শক সেখানে পরামর্শও দিয়েছেন। উইকি যেহেতু কপিরাইটমুক্ত, তাই ই–সাইটের পরামর্শগুলো আমি আমার নিজের ভাষায় সহজ ও সংক্ষিপ্ত করে তোমাদের জন্য অনুবাদ করে দিচ্ছি।

১. পড়া আর শেখাটা হতে হবে কাজের

ক. পড়ার সময় অন্য সবকিছু থেকে নিজেকে আলাদা করে ফেলো

তুমি যত পড়বে, যত স্টাডি করবে, যত বেশি সময় লেখাপড়ার জন্য ব্যয় করবে, তুমি তত বেশি শিখবে। তাতে তোমার ফল অবশ্যই ভালো হবে। কিন্তু বোকার মতো শুধু পড়ার টেবিলে বসে থাকলেই হবে না। পড়াটা হতে হবে কাজের। সব ধরনের ব্যাঘাত সৃষ্টিকারী জিনিস বা মানুষের কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে। অবশ্যই মুঠোফোন পাশে নিয়ে পড়তে বসা চলবে না। সামনে টেলিভিশন চলতে পারবে না। গান বাজতে থাকবে, তা হবে না। কানের কাছে কেউ সারাক্ষণ ঘ্যানর ঘ্যানর করবে, তা–ও চলবে না। সবকিছু ভুলে শতভাগ মন দিয়ে পড়তে হবে। তোমার পড়ার পরিবেশটা পড়াশোনার উপযুক্ত হতে হবে।

খ. যা তুমি আজ করতে পারো, তা কালকের জন্য ফেলে রেখো না

সব সময় মনে হবে, এই কাজটা পরে করে নেব। এই পড়াটা কঠিন, এটা পরে পড়ব। এই ‘পরে’ আর কোনো দিনও আসবে না। স্কুল থেকে বাসায় এসেছ, দরকারি পড়াটা এখনই সেরে ফেলো।

নিজেকে নিজেই উৎসাহিত করবে। নিজেকে বলবে, আমি পারব। এই অঙ্কটা কঠিন লাগছে, তাহলে এটা শিখেই আমি নিজেকে দেখিয়ে দেব যে কোনো কঠিন জিনিসও আমার কাছে কঠিন নয়।

অ্যাশলে রিচার্ড বলেন, নিজেকে অনুপ্রাণিত রাখার জন্য একটা লক্ষ্য ঠিক করে নেওয়া ভালো। যেমন আমি জিপিএ–৫ পেতে চাই বা আমি এই পরীক্ষায় খুব ভালো করে দেখিয়ে দিতে চাই।

গ. এক ঘণ্টা পড়ার পর দশ মিনিটের বিরতি নাও

আমাদের মস্তিষ্ক একটু বিশ্রাম চায়। এক ঘণ্টা পড়াশোনা করার পর মাথাটাকে একটুখানি বিরাম দেওয়া ভালো। ১০ মিনিটের বিরতি নাও। আকাশের দিকে একটুখানি তাকাও। একটুখানি চেয়ার ছেড়ে ওঠো। হাঁটো। হাত-পা নাড়াচাড়া করো। শরীরটাকে একটুখানি টানটান করো। কোমরের ব্যায়াম করো। পানি খাও। বাথরুমে যাও। আবার ১০ মিনিটের মধ্যেই পড়ায় ফিরে এসো। এই ১০ মিনিটের বিরতিকে আবার আজ আর না, আজ যথেষ্ট হয়েছে, আবার আগামীকাল পড়তে বসলেই হবে, এই কথা বলার জন্য ব্যবহার কোরো না। ১০ মিনিট পর ফিরে এসো।

ঘ. ক্লাসের পড়া আগেই পড়ে রাখো

তোমাদের ক্লাসে শিক্ষক কোন অধ্যায় আগামীকাল পড়াবেন, সেটা তুমি আজই পড়ে ফেলো। তাতে পরের দিন শিক্ষকের পড়ানো বিষয়টা বুঝতে তোমার সুবিধা হবে। যা তুমি বুঝতে পারছ না, সে বিষয়ে শিক্ষককে প্রশ্ন করতে পারবে। একটা হলুদ মার্কার দিয়ে না বোঝা অংশটা দাগ দিয়ে নিয়ে যেতে পারো। তাহলে ক্লাসে প্রশ্ন করতে সুবিধা হবে।

ঙ. পরীক্ষা বা ক্লাস টেস্টের জন্য আগে থেকে প্রস্তুতি নাও

ধরো, সামনে তোমাদের একটা পরীক্ষা আছে। সেটা ক্লাস টেস্টও হতে পারে, ত্রৈমাসিক পরীক্ষা হতে পারে, ফাইনাল পরীক্ষাও হতে পারে। সে জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নাও। একটা রুটিন বানিয়ে ফেলো। কী করে পরীক্ষার বিভিন্ন বিষয়ে তুমি আগেভাগে প্রস্তুতি নেবে। ধরা যাক, তুমি গান শেখো বা বাস্কেটবল খেলো। পরীক্ষার আগে গানের শিক্ষককে, বাস্কেটবল কোচকে বলে ছুটি নিয়ে নাও। পরীক্ষার পর আবার গান আর খেলায় সময় দেওয়া যাবে।

পরীক্ষার আগের রাতে পড়ে ফেলব বলে পড়া ফেলো রেখো না। আগের রাতে মগজের ওপর বাড়তি চাপ দেওয়া ঠিক নয়।

চ. নিজে নিজে পরীক্ষা দাও

এটা সবচেয়ে কার্যকর একটা উপায়। তোমার ভাই–বোন, মামা-খালা কাউকে বলো, তোমার জন্য একটা প্রশ্নপত্র বানিয়ে দিতে। তারপর তাঁদের সামনেই তুমি পরীক্ষা দাও। দেখবে, তুমি অনেক কিছু পারছ, আবার কিছু জিনিস পারছ না। যা পারছ না, তা তুমি শিখে নাও। নিজে না পারলে বড়দের সাহায্য নাও। তা না হলে যে বন্ধু পারে, তার কাছ থেকে সঠিক উত্তর জেনে নাও। নাহলে তোমার শিক্ষককে বলো, তুমি এই জিনিসটা বোঝ না।

আমার নিজের বেলায় এটা হয়েছিল। দশমিকের বিভিন্ন সংখ্যার যোগ-বিয়োগ যে আমি পারি না, সেটা আমি জানতাম না। একদিন আমার ভাই আমাকে কতগুলো যোগ আর বিয়োগের অঙ্ক কষতে দিলেন। আমি একটা ছোট্ট জিনিস জানতাম না যে দশমিকগুলো ওপরে–নিচে একটা কলামে বসিয়ে যোগ বা বিয়োগ করতে হয়।

মানে ধরো ৭.৫+১০.৩৭=? এই অঙ্কটা করতে হবে।

তাহলে এটাকে এভাবে লিখতে হবে

০৭.৫০
১০.৩৭
---------
১৭.৮৭

এই জিনিসটা আমি জানতাম না। আমি ৫ আর ৭ যোগ করে দিচ্ছিলাম। আমার ভাই তখন আমাকে শেখালেন এই অঙ্ক কীভাবে কষতে হয়।

এই জন্য পরীক্ষার একটা মহড়া হয়ে যাওয়া ভালো। বারবার পরীক্ষায় অবতীর্ণ হওয়া আরও ভালো। এটাকে বোধ হয় আজকাল মক টেস্ট বলে।

ভাষা, সাহিত্য, ইতিহাস এই সব বিষয় নিয়ে শুধু পড়লে চলবে না। লিখতে হবে। গণিতের নিয়মের অংশ বা ব্যাখ্যা পড়বে! তারপর প্রাকটিস করবে। গণিতের সমস্যা লিখে লিখে সমাধান করবে। রচনা লিখবে। আমাদের দেশে রচনা বই থেকে রচনা মুখস্থ করা শেখানো হয়। এটা খুবই খারাপ একটা ব্যাপার। অন্যের লেখা নিজের নামে চালাতে হয় না। আমরা অন্যের রচনা কেন মুখস্থ করে নিজে লিখব? যা লেখার, বানিয়ে লিখতে হবে। মুখস্থ করতে হলে নিজে আগে বানিয়ে নিজের খাতায় লিখব। পরে সেটা পড়ে রপ্ত করে নেব, যাতে পরীক্ষার হলে বেশি সময় ধরে ভাবতে না হয়।

ছ. বাইরের বই বেশি করে পড়ো

যত পারো, বেশি করে বাইরের বই পড়ো। তাতে তোমার শব্দভান্ডার বাড়বে। আবার তোমার কোনো কিছু পড়ে তা বোঝার ক্ষমতাও বাড়বে।

তোমার যা পড়তে ভালো লাগে, তা-ই পড়বে। বাংলা–ইংরেজি সব ধরনের বই পড়বে। খবরের কাগজ পড়বে। ম্যাগাজিন পড়বে। কিশোর আলো পড়তে বলব, তাতে মজার মজার লেখা থাকে।

ইংরেজি শেখার জন্য ইংরেজি সিনেমা, ইংরেজি ধারাবাহিক, ইংরেজি কার্টুন অ্যানিমেশন দেখতে পারো।

২. গুছিয়ে চলতে শেখো

ক. আগের রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে স্কুলের ব্যাগ গুছিয়ে নাও। ক্লাস রুটিন তোমার টেবিলের সামনে দেয়ালে টাঙিয়ে রাখবে। নিজের ব্যাগ নিজে গোছাবে। কোন কোন বই নিতে হবে, কোন কোন খাতা নিতে হবে, পেনসিল, ইরেজার, কলম, জ্যামিতি বক্স বা আর কী কী লাগতে পারে, সব গুছিয়ে রাখবে নিজেই।

খ. প্রতিটি বিষয়ের জন্য আলাদা আলাদা ফাইল বা ফোল্ডার রাখতে পারো। তাহলে স্কুলের অ্যাসাইনমেন্ট পেপার বা পরীক্ষার প্রশ্ন সেই ফোল্ডারে গুছিয়ে রাখতে পারবে।

গ. একটা ডেস্ক ক্যালেন্ডার টেবিলে রেখে দিতে পারো। তারপর মার্কার দিয়ে ক্যালেন্ডারে আগামী সপ্তাহে বা মাসে কোন দিন কী করতে হবে, তা লিখে রাখতে পারবে। সেটা চোখের সামনে থাকলে প্রস্তুতি নিতে অনেক সুবিধা হবে।

ঘ. সবকিছু সুন্দর করে গুছিয়ে রাখবে। সে জন্য ছোট বাক্স, ড্রয়ার, র‌্যাক ব্যবহার করতে পারো। কোন জিনিস কোথায় রাখছ, নিজেই একটা ভাগ বানিয়ে ফেলো।

এই সব করতে গিয়ে আবার আসল কাজটাকেই কম গুরুত্ব দিয়ো না। তা হলো, শেখা। আমরা পড়ি, লিখি, অনুশীলন করি কিন্তু শেখার জন্য। শুধু লাল–নীল ফাইল বানালাম, লাল–নীল স্টিকার দিয়ে বই ভরে ফেললাম, কিন্তু পড়া বা লেখা বা মনে রাখার দিকে যত্ন নিলাম না, তাহলে চলবে না।

এইখানে আমরা শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা থেকে একটুখানি উদ্ধৃতি দেব:

‘ভিতরে আমরা তিন ভাই, মেজদার কঠোর তত্ত্বাবধানে নিঃশব্দে বিদ্যাভ্যাস করিতেছি। ছোড়দা, যতীনদা ও আমি তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ি এবং গম্ভীর-প্রকৃতির মেজদা বার দুই এনট্রান্স ফেল করিবার পর গভীর মনোযোগের সহিত তৃতীয়বারের জন্য প্রস্তুত হইতেছেন। তাঁহার প্রচণ্ড শাসনে একমুহূর্ত কাহারও সময় নষ্ট করিবার জো ছিল না। আমাদের পড়ার সময় ছিল সাড়ে সাতটা হইতে নয়টা। এই সময়টুকুর মধ্যে কথাবার্তা কহিয়া মেজদার ‘পাশের পড়া’র বিঘ্ন না করি, এই জন্য তিনি নিজে প্রত্যহ পড়িতে বসিয়াই কাঁচি দিয়া কাগজ কাটিয়া বিশ-ত্রিশখানি টিকিটের মতো করিতেন। তাহার কোনোটাতে লেখা থাকিত ‘বাইরে’, কোনোটাতে ‘থুথু ফেলা’, কোনোটাতে ‘নাক ঝাড়া’, কোনোটাতে ‘তেষ্টা পাওয়া’ ইত্যাদি।

যতীনদা একটা ‘নাক ঝাড়া’ টিকিট লইয়া মেজদার সুমুখে ধরিয়া দিলেন। মেজদা তাহাতে স্বাক্ষর করিয়া লিখিয়া দিলেন—হুঁ, আটটা তেত্রিশ মিনিট হইতে আটটা সাড়ে চৌত্রিশ মিনিট পর্যন্ত, অর্থাৎ এই সময়টুকুর জন্য সে নাক ঝাড়িতে যাইতে পারে। ছুটি পাইয়া যতীনদা টিকিট হাতে উঠিয়া যাইতেই ছোড়দা ‘থুথু ফেলা’ টিকিট পেশ করিলেন। মেজদা ‘না’ লিখিয়া দিলেন। কাজেই ছোড়দা মুখ ভারী করিয়া মিনিট দুই বসিয়া থাকিয়া ‘তেষ্টা পাওয়া’ আর্জি দাখিল করিয়া দিলেন। এবার মঞ্জুর হইল। মেজদা সই করিয়া লিখিলেন—হুঁ, আটটা একচল্লিশ মিনিট হইতে আটটা সাতচল্লিশ মিনিট পর্যন্ত। পরওয়ানা লইয়া ছোড়দা হাসিমুখে বাহির হইতেই যতীনদা ফিরিয়া আসিয়া হাতের টিকিট দাখিল করিলেন। মেজদা ঘড়ি দেখিয়া সময় মিলাইয়া একটা খাতা বাহির করিয়া সেই টিকিট গঁদ দিয়া আঁটিয়া রাখিলেন। সমস্ত সাজসরঞ্জাম তাঁহার হাতের কাছেই মজুত থাকিত। সপ্তাহ পরে এই সব টিকিটের সময় ধরিয়া কৈফিয়ৎ তলব করা হইত।

এইরূপে মেজদার অত্যন্ত সতর্কতায় এবং সুশৃঙ্খলায় আমাদের এবং তাঁহার নিজের কাহারও এতটুকু সময় নষ্ট হইতে পাইত না। প্রত্যহ এই দেড় ঘণ্টা কাল অতিশয় বিদ্যাভ্যাস করিয়া রাত্রি নয়টার সময় আমরা যখন বাড়ির ভিতরে শুইতে আসিতাম, তখন মা সরস্বতী নিশ্চয়ই ঘরের চৌকাঠ পর্যন্ত আমাদিগকে আগাইয়া দিয়া যাইতেন; এবং পরদিন ইস্কুলে ক্লাসের মধ্যে যে সকল সম্মান-সৌভাগ্য লাভ করিয়া ঘরে ফিরিতাম, সে তো আপনারা বুঝিতেই পারিতেছেন। কিন্তু মেজদার দুর্ভাগ্য, তাঁহার নির্বোধ পরীক্ষকগুলা তাহাকে কোনো দিন চিনিতেই পারিল না। নিজের এবং পরের বিদ্যাশিক্ষার প্রতি এরূপ প্রবল অনুরাগ, সময়ের মূল্য সম্বন্ধে এমন সূক্ষ্ম দায়িত্ববোধ থাকা সত্ত্বেও, তাঁহাকে বারংবার ফেল করিয়াই দিতে লাগিল। ইহাই অদৃষ্টের অন্ধ বিচার।’

এটা শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘শ্রীকান্ত’ উপন্যাসের প্রথম পর্ব থেকে নেওয়া। এটা কি তোমাদের পাঠ্যবইয়ে আছে? আমাদের সময় পাঠ্যবইয়ে ‘ছিনাথ বহুরূপী’ বা ‘শ্রীনাথ বহুরূপী’ নামে এই অংশ ছাপা হয়েছিল।

দেখো, মেজদা নিজে ফেল করতেন। অন্য ভাইদেরও পরীক্ষার ফল ভালো হতো না। কারণ, আড়ম্বর ছিল বেশি। বাহুল্য কোনো কাজে লাগে না। আসল কাজ হলো পড়া, বোঝা, উপলব্ধি করা, সেটা পরীক্ষার খাতায় লিখতে পারা—ইংরেজিতে বলি—রিপ্রডিউস করতে পারতে হবে।

৩. ক্লাসে মন দাও

ক) যদি সম্ভব হয় ক্লাসে ফার্স্ট বেঞ্চে বোসো। আমি যত দিন ভালো ছাত্র ছিলাম, আমি সব সময় ক্লাসে ফার্স্ট বেঞ্চে বসতাম। বুয়েটে এসে আমি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করি যে আমি গ্র্যাজুয়েশন করব, কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং করব না। বরং আমি পাস করে সংবাদপত্রে যোগ দেব, যাতে সাহিত্যের চর্চা করতে সুবিধা হয়, তখন আর আমি ফার্স্ট বেঞ্চে বসতাম না। ভালো ছাত্ররা সাধারণত ফার্স্ট বেঞ্চে বসে। তাতে শিক্ষকের কথা শুনতে, বুঝতে, মন দিতে সুবিধা হয়। পেছনের বেঞ্চে বসলে ফাঁকি দেওয়া সহজ।

শিক্ষকের চোখে সব সময় চোখ রাখো। শিক্ষক যা বলছেন, তা শুনে প্রয়োজনীয় নোট নাও।

খ) শিক্ষককে প্রশ্ন করো। আমেরিকানরা যেমন, প্রশ্ন করাটাকে খুব গুরুত্ব দেয়।

গ) ক্লাসে শিক্ষক যা বলেন, তা থেকে যদি তুমি পরীক্ষার খাতায় লেখো, তাহলে শিক্ষক খুশি হন।

ঘ) ক্লাস থেকে ফিরে স্যার যা পড়িয়েছেন, তুমি যা নোট নিয়েছ, তা আবার পড়ো। পরীক্ষার উপযোগী করে নোট তৈরি করে রাখো। পরীক্ষার আগে এসব নোট অনেক কাজে লাগবে। আগামীকালের পড়া যেমন তুমি আগে পড়বে, তেমনি আজকের পড়া আজই সেরে রাখো।

ঙ) রোজ ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমাবে। ঘুম কম হলে তা মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটায়।

ফোন পাশে নিয়ে ঘুমাবে না। ফোনের রিংটোন অফ করে অন্য ঘরে ফোন রেখে ঘুমাবে।

ঘুমাতে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগে ফোন কিংবা টেলিভিশন পর্দায় চোখ রাখা থেকে বিরত থাকো।

চ) ভালো খাবার খাবে। ভালো খাবার মানে ঘরে তৈরি সুষম খাবার। খাবারে আমিষ, শর্করা থাকতে হবে। তেমনি শাকসবজি আর ফলমূল থাকতে হবে। মাছ আর মাছের তেল, বাদাম—এগুলো খুবই উপকারী খাবার।

৪. বাড়ির কাজ করে ফেলো

ক) বাড়ির কাজ আগেভাগে করে ফেলবে। সবচেয়ে ভালো হয়, যেদিন শিক্ষক এটা পড়িয়েছেন, সেদিনই যদি বাড়ির কাজটা তুমি সেরে ফেলো। কারণ, তাহলে জিনিসটা তোমার মনে থাকবে। কিছু না বুঝলে শিক্ষককে জিজ্ঞেসও করে নিতে পারবে।

খ) বাড়ির কাজ শেষ করে রিভিশন দেবে। কোনো কিছু ভুল হলো কি না, পরখ করে নেবে।

গ) আমাদের একটা অভ্যাস হলো, সবকিছু শেষ মুহূর্তে করা। ভালো ছাত্র হতে হলে এই অভ্যাস বাদ দেওয়া ভালো। অ্যাসাইনমেন্ট আগেভাগে করে রাখবে।

ঘ) নিজের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখো। মানে নিজে নিজেই একটা করে লক্ষ্য ঠিক করে রাখো। যেমন—আমি এই অধ্যায়ের অঙ্কটা শেষ করলে একটা মুভি দেখব। এই রচনাটা লিখে শেষ করলে বিশ মিনিট গিটার বাজাব।

ঙ) তোমার বাড়ির কাজ তুমি কাউকে দিয়ে দেখিয়ে নিতে পারো। এর মানে এই নয় যে অন্য কেউ তোমার হোমওয়ার্ক করে দেবেন। তিনি বলতে পারেন, অঙ্কটা ঠিক হয়নি। আবার করো বা কতগুলো বানান ভুল আছে, অভিধান দেখে ঠিক করে নাও।

বইমেলা ২০২২-এ প্রকাশিত হয়েছে লেখকের ‘তুমি কি ফার্স্ট হতে চাও?’ বইটি। সময় প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত এই বইয়ে আছে বিখ্যাত ব্যক্তিদের কথা, যাঁরা ছাত্র হিসেবে যেমন সফল, তেমনি সফল ব্যক্তিজীবনেও। এই রচনাটি তোমাদের জন্য সেই বই থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে।