তুমি কতটা প্রযুক্তিনির্ভর

কখনো ভেবে দেখেছ, তুমি আসলে প্রযুক্তির ওপর কতটা নির্ভরশীল? একটা কথা আছে, সব সময় তুমিই যেন প্রযুক্তি ব্যবহার করো, প্রযুক্তি যেন তোমাকে ব্যবহার না করতে পারে। কুইজের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে স্কোর মিলিয়ে নাও। ফলাফল দেখে যাচাই করে নাও প্রযুক্তির সঙ্গে তোমার রসায়নটা কেমন।

১. এগারো আর একুশ যোগ করলে কত হয়? এ রকম ছোটখাটো হিসাব-নিকাশ যেভাবে করো—

ক. উমম...মনে মনে গুনে নিই, নইলে হাতের কড়ায় গুনি।
খ. আরে ক্যালকুলেটরে যোগ করে বলে দিই। কষ্ট করে গুনে কে?
গ. কখনো হাতে গুনি আর কখনো ক্যালকুলেটরে।

২. এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে, ‘আগামীকাল সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ইলেকট্রিসিটি থাকবে না...’ শুনে তোমার প্রতিক্রিয়া—

ক. আমার ফোনে চার্জ আছে তো?
খ. ইলেকট্রিসিটি নেই মানে তো ওয়াই-ফাই নেই। কম্পিউটারে ভিডিও গেমস খেলা হবে না। টিভিও দেখা যাবে না। ধুর, দিনটা পার করব কীভাবে?
গ. না থাকলে নাই। একটা না একটা কিছু করে দিন পার করে দেব।

৩. ঘুমানোর আগে সর্বশেষ যে কাজটি করো—

ক. গল্পের বই পড়তে পড়তে কখন ঘুমিয়ে পড়ি খেয়ালই থাকে না!
খ. দাঁত মেজে, অ্যালার্ম দিয়ে একদম সোজা ঘুম!
গ. সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং করতে করতে ঘুমাই।

৪. সবচেয়ে বিরক্ত লাগে—

ক. স্লো ইন্টারনেট। আমার দুই চোখের বিষ!
খ. ফোনটা যখন হাত থেকে ধুপ করে পড়ে...
গ. কোথাও ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল হলে মেজাজটা যে কী হয় আমার...!

৫. তোমার পছন্দের প্রযুক্তিপণ্য—

ক. মোবাইল, ল্যাপটপ, ক্যামেরা
খ. ই-বুক রিডার, আইপড, মিউজিক প্লেয়ার, টিভি
গ. ইলেকট্রিক ডিভাইস আবার পছন্দের হওয়ার কী আছে? দরকার হয় বলে ব্যবহার করি।

৬. যে অভ্যাসটি তোমার রয়েছে—

ক. মাঝেমধ্যে চিঠি বা ডায়েরি লেখা কিংবা একা একা চিন্তা করা।
খ. মোবাইলের ফ্রন্ট ক্যামেরাটি আয়না হিসেবে ব্যবহার করা।
গ. বাথরুমে ফোন নিয়ে যাওয়া।

৭. নতুন একটা বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। বাড়ির পেছনে রয়েছে একটা পুকুর। আর সামনে রয়েছে অনেক বড় বাগান। বাড়িটিতে গ্যাস, পানি আর বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হবে। কিন্তু এক মাসে একটির সংযোগ দেওয়াই সম্ভব। সবার আগে কোনটা দেওয়া উচিত?

ক. বিদ্যুৎ। কারণ বিদ্যুৎ ছাড়া ফ্যান, লাইট, কম্পিউটার, ফোন, ফ্রিজ এসব চলবে না। এসব ছাড়া বাঁচা সম্ভব? পানি তো পুকুর থেকেও নিতে পারবে। আর রান্না তো চাইলে সিলিন্ডার গ্যাসে বা মাটির চুলাতেও করা যাবে। তাই এটাই জরুরি।
খ. বিশুদ্ধ পানির অপর নাম জীবন। সবার আগে এটা নিশ্চিত করা দরকার।
গ. সব সংযোগ নেওয়ার পরই সেখানে থাকা শুরু করা উচিত। সবগুলোই জরুরি।

৮. তোমার কাছে যে সহযোগিতাটি চায় কোনো বন্ধু—

ক. সারাক্ষণ ইলেকট্রিক ডিভাইস খুঁটিয়ে দেখতে দেখতে এমন অবস্থা, এখন এ-সংক্রান্ত সব সহযোগিতাই আমার থেকে নেয়।
খ. কোনো ক্লাস নোটের দরকার হলে ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপ বা ম্যাসেঞ্জারে দিতে বলে।
গ. আমিই তো সহযোগিতা চেয়ে বসি। আমার কাছে কী সহযোগিতা চাইবে?

৯. আজ থেকে ১৫৫ বছর পর পৃথিবীটা যেমন হবে—

ক. বিজ্ঞানের রাজত্ব থাকবে। সবকিছুতেই থাকবে প্রযুক্তির ছোঁয়া।
খ. সবকিছু আবার প্রাচীনকালের মতো হয়ে যাবে।
গ. এখন যেমন আছে, তেমনই থাকবে। প্রযুক্তির দিক থেকে খানিকটা এগোতে পারে।

১০. অবসর কাটাও যেভাবে—

ক. চিন্তা করে।
খ. ঘুরে বেড়িয়ে বা ঘুমিয়ে।
গ. টিভি দেখে, ভিডিও গেমস খেলে, গান শুনে, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং করে।

নম্বর

১. ক. ০ খ. ১০ গ. ৫
২. ক. ৫ খ. ১০ গ. ০
৩. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৪. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
৫. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
৬. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৭. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৮. ক. ১০ খ. ৫ গ.০
৯. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
১০. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০

যেখানে দাঁড়িয়ে তুমি

০—৩৫: বন্ধুরা কি তোমাকে ‘ব্যাকডেটেড’ বলে কখনো খোঁচা দিয়েছে? কখনো সখনো কি মনে হয়, প্রাচীনকালটাই ভালো ছিল? এ যুগের মানুষ হয়েও কীভাবে এত প্রযুক্তিবিমুখ হলে তুমি, তা কিন্তু একটু চিন্তার বিষয়। প্রযুক্তির প্রতি খানিকটা বিদ্বেষও কাজ করে তোমার। আর তাই প্রয়োজনের বাইরে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে তুমি নারাজ। কিন্তু পরিমিত ব্যবহার করতে গিয়ে অনেক পিছিয়েও যাচ্ছ। প্রযুক্তির অনেক খোঁজখবরই জানো না তুমি, ফলে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়েও চলতে অসুবিধে হয় তোমার। শোনো, প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার তোমাকে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে। এর সঙ্গে আরেকটু হাত মেলালে তোমার জন্য মন্দ হবে না।

৪০—৬৫: সেই গানটা শুনেছ তো, ‘আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী’? গানের কিছু লাইন এমন, ‘লেখার সময় লেখাপড়া, খেলার সময় খেলা করা, কাজের সময় কাজ করি...’ কথাগুলো তোমার সঙ্গে বেশ যায়। অর্থাৎ বুঝেশুনে কাজ করার চেষ্টা করো তুমি। প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও তাই। বিজ্ঞানের নিত্যনতুন আবিষ্কারের খোঁজ রাখো, সেটার ব্যবহারও করো। তবে তুমি সব সময়ই সতর্ক থাকতে চেষ্টা করো যেন প্রযুক্তির ভুল ব্যবহার তোমার দ্বারা না হয়। সব সময় যে সেটা করতে পারো, তা না। তবে চেষ্টা রয়েছে তোমার। বলাই যায়, প্রযুক্তি তোমার হাতের মুঠোয়!

৭০—১০০: দিনে কতবার আম্মুর বকুনি শোনো অতিরিক্ত মোবাইল, কম্পিউটার ব্যবহারের জন্য? ছোটখাটো একটা হিসাব করার সময়ও তুমি ক্যালকুলেটর খুঁজতে শুরু করো। অর্থাৎ খুব সামান্য বিষয়েও তুমি প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। প্রযুক্তিকে কেন্দ্র করেই তোমার জগৎ। তুমি এতটাই অভ্যস্ত হয়ে পড়ছ যে এর বাইরের পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া তো দূরের কথা, এর বাইরে তুমি ভাবতেও পারো না। কোনো কিছুর অতিরিক্তই ভালো না। প্রযুক্তির বাড়াবাড়ি ব্যবহার তোমার মানসিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করবে। এখনই তোমার এই নির্ভরশীলতা কমানো উচিত। নইলে কোনো একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখবে, তুমি যন্ত্রমানব হয়ে গেছো!