কারণে-অকারণে বিষণ্ন্ন হয়ে পড়ি

আমি দশম শ্রেণির ছাত্র। আমার একটা বদভ্যাস আছে—যেকোনো কিছুতেই সহজে আসক্ত হয়ে পড়ি আমি। কিছুদিন আগেও আসক্ত ছিলাম মোবাইল গেম ও টিভির প্রতি। মোবাইল গেমটা ছাড়তে পেরেছি নিজের চেষ্টায়। কিন্তু টিভির আসক্তিটা কোনোভাবেই ছাড়তে পারিনি। এটার জন্য আমার পড়ালেখার খুব ক্ষতি হচ্ছে। এটা কীভাবে ছাড়ব?

আরেকটা সমস্যা হলো আমি কারণে-অকারণে বিষণ্ন্ন হয়ে পড়ি। কিন্তু বুঝতে পারি না, কখন বা কেন এ রকম বিষণ্ন হয়েছি। বন্ধুরা আমাকে বলে, তুই বিষণ্ন থাকিস কেন? আমি কিছু বলতে পারি না। এর সমাধান কী?

সাকিব রহমান

উত্তর: সহজেই আসক্ত হয়ে পড়া আর ‘বিষণ্ন্ন’ থাকার যে সমস্যার কথা তুমি বলেছ, তা কেবল তোমার একার নয়। তবে আশার কথা হচ্ছে তুমি নিজের চেষ্টায় মোবাইল আসক্তি ত্যাগ করতে পেরেছ। বিষয়টি প্রমাণ করে, তুমি চাইলে যেকোনো আসক্তি ত্যাগ করতে পারো। যেভাবে মোবাইল আসক্তি ত্যাগ করেছ, সেই পদ্ধতিতে টিভি আসক্তি ত্যাগ করার চেষ্টা করো। আর যদি তাতে না হয় তবে অন্তত দুই সপ্তাহ যত কষ্টই লাগুক টিভির সামনে যাওয়া থেকে বিরত থাকো। যে সময়টিতে টিভি দেখতে, সে সময়টিতে বই পড়ো, আড্ডা দাও, ব্যায়াম করো বা ক্যারাম-লুডু খেলো। প্রথম প্রথম কষ্ট হলেও কিছুদিনের মধ্যে এই সমস্যা কেটে যাবে। আর সহজেই বিষণ্ন হয়ে পড়া বলতে তুমি যেটা বোঝাচ্ছ, সেটি আসলে মন খারাপ। বিষণ্নতা একটি রোগ আর মন খারাপ স্বাভাবিক আবেগ। তুমি মন খারাপের ঘটনাগুলোকে নানান আঙ্গিকে বিশ্লেষণ করতে থাকো, তখন দেখবে মন খারাপ অনেকখানিই কমে গেছে। আর ইতিবাচক চিন্তা করা, বিকল্প চিন্তা করা আর শখের চর্চা করা তোমার মন খারাপকে কমিয়ে দেবে। আর সত্যি সত্যি তুমি বিষণ্নতা রোগে ভুগছ কি না, জানার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারো।

এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - মনোবন্ধু, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।