খেলার বাকি আর দুই মিনিট। মাঠে চিরচেনা দুই দল। ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা। দুই দলই একটি করে গোল করেছে। মেসি বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। একটা গোল হওয়ার সম্ভাবনা...দাঁড়াও দাঁড়াও! ফুটবলের কথা শুনতেই কি নড়েচড়ে বসলে? ফুটবলের অনেক বড় ভক্ত? তাহলে তো আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের যে গল্পটা বলছিলাম, সেটা তুমি আমার চেয়ে ভালো লিখতে পারবে। ওটা থাকুক তবে। তার চেয়ে বরং প্রশ্নগুলোর ঝটপট উত্তর দাও আর স্কোর মিলিয়ে দেখে নাও তুমি কতটা ফুটবলপ্রেমী!
১. ‘কালকের খেলা দেখেছিস? কী গোলটাই না করল জ্লাতান’! এ ধরনের আলোচনা শুনলে তুমি যা করো—
ক. আরে, এই আলোচনাগুলো শুরু করে কে? আমিই তো!
খ. বাঁয়ে যাই, ডানে যাই। উত্তর-দক্ষিণ সব দিকে ছুটে যাই, শুধু আলোচনাটা থেকে বাঁচার জন্য!
গ. খেলা দেখলে আলোচনায় অংশ নিই। নইলে অন্যদের আলোচনা শুনি।
২. পেনাল্টির সুযোগ পেল তোমার প্রিয় দল। খেলার সময়ও প্রায় শেষ। গোল মানেই জয়। এমন সময় হুট করে ইলেকট্রিসিটি নাই হয়ে গেল। তোমার অবস্থা কী হবে?
ক. দেখতে পারলে ভালো লাগত, না পারলে কী আর করা? পরে খেলাটা দেখে নেব।
খ. মানে? আমার প্রিয় দলের এমন টার্নিং পয়েন্ট আর আমি দেখব না? ফোন বা ল্যাপটপে দেখার চেষ্টা করব, নইলে বন্ধুর বাসায় যাব। নইলে একদম টিকিট কেটে তখনই যে দেশে খেলা হচ্ছে, সেই দেশে যাব...খেলা আমি দেখবই!
গ. পরে কারও কাছ থেকে ফলাফলটা জেনে নেব। আর না জানলেও ক্ষতি তো নাই। এমন তো না, না জানলে মঙ্গল গ্রহ উল্টে যাবে!
৩. ধরো, ৭-০ ব্যবধানে তোমার প্রিয় দল হারল। তোমার প্রতিক্রিয়া কী হয়?
ক. ধরলাম না। আমার প্রিয় দল ৭-০ ব্যবধানে হারবে হতেই পারে না। এমন হলে বন্ধুদের কাছে মুখ দেখাতে পারব? সাত দিন বাসায় বসে থাকতে হবে যে!
খ. মন খারাপ হবে সে কথা না বললেও বুঝবেন। কিন্তু পরের ম্যাচে ভালো করবে সেই আশা নিয়ে থাকব।
গ. যেই দল সাতটা গোল খায়, সে আর আমার প্রিয় দল থাকবে ভেবেছেন? বদলে নেব দল, হ্যাঁ!
৪. ফুটবল খেলা না ফুটবল খেলোয়াড়, কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ তোমার কাছে?
ক. ফুটবলটা খেলোয়াড়দের জন্যই দেখি আমি। খেলোয়াড়গুলো দেখতে বেশ। এ জন্য দেখি, কাউকে বলো না আবার। সিক্রেট!
খ. এটা আবার কী প্রশ্ন? খেলাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ!
গ. দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। কোন খেলোয়াড় কেমন খেলে, খেলার হিসাব-নিকাশে সেটাও তো পড়ে! সবটাই গুরুত্বপূর্ণ তাই।
৫. ধরো, তোমাকে শাস্তি দেওয়া হলো কোনো কারণে। শাস্তিটা এ রকম, এক মাস তুমি ফুটবল দেখতে পারবে না। তোমার অবস্থা যা হবে—
ক. ফুটবলের খোঁজ তো রাখতে পারব, তাই না? তাতেও চলবে।
খ. এত সহজ শাস্তি? বেঁচে গেলাম। এটা কোনো ব্যাপারই না আমার জন্য!
গ. সত্যি? এক মাস? মানে পাক্কা ৩০ দিন? ফুটবল ছাড়া এক সেকেন্ড থাকলেই দম বন্ধ লাগে আর এক মাস তো আমি ভাবতেও পারছি না!
৬. শেষ কবে ফুটবল ম্যাচ দেখেছ?
ক. এই তো একটু আগেই। আমি সারা বছরই ফুটবল দেখি। দেখা ম্যাচ হলেও দু-একবার না দেখলে ভালো লাগে না।
খ. মমম...শেষ বিশ্বকাপ জানি কবে হলো? চার বছর আগে না? তাহলে চার বছর আগেই বোধ হয়।
গ. যখন সময় পাই, তখন দেখি। কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই আসলে।
৭. কেউ যখন তোমাকে বলে, ‘ফুটবল তো একটা খেলাই। এটা নিয়ে মাতামাতি করার কী হলো?’ তোমার প্রতিক্রিয়া কী হয়?
ক. সঙ্গে সঙ্গে একমত হয়ে যাই। ফুটবল নিয়ে মাতামাতি দেখলেও আমার গা জ্বলে যায়!
খ. খানিকটা সহমত হই। খেলা ঠিক আছে, তবে যার ভালো লাগবে সে চাইলে একটু লাফাতেই পারে। আমি দোষের কিছু দেখি না।
গ. ফুটবল শুধু একটা খেলা? এটা একটা আবেগের ভাই, এটার মর্ম না বুঝলে বোঝানো অসম্ভব। তর্ক করে বোঝানোর চেষ্টা করব বিষয়টা।
৮. ক্রিকেট না ফুটবল, এ ধরনের বিতর্কে তোমার অবস্থান থাকে—
ক. দুইটাই ভালো লাগে। যখন যেটা দেখতে ইচ্ছে করে তখন সেটাই দেখি।
খ. ফুটবল! এটা আবার একটা তর্ক হলো!
গ. একটা হলেই হলো। আমার মাথাব্যথা নেই এসব নিয়ে।
৯. এর মধ্যে যে বিষয়টি তোমার শুনতে হয়—
ক. ‘সেদিনই না জার্সি কিনলি? ঘরটা তো জার্সির কারখানা করে ফেলেছিস, এত ফুটবল জার্সি ফুটবলারদেরও নেই।’
খ. ‘বিশ্বকাপ এলেই বুঝি জার্সি কিনতে হবে?’
গ. ‘ফুটবল বিশ্বকাপের সময় ক্রিকেট দলের জার্সি পরে আছিস?’
১০. ধরো, পরীক্ষার প্রশ্নে একটিই প্রশ্ন। ফুটবল নিয়ে যা জানো লিখো। তোমার ফলাফল কী হবে?
ক. রসগোল্লা! দুটো শূন্য একদম চোখ বন্ধ করে পাব।
খ. ইয়ে না মানে, এক শতে এক শ দশ পাওয়ার কোনো নিয়ম আছে? থাকলে ওটাই পেতাম।
গ. একেবারে খারাপ পাব না। ভালোই পাব মনে হয়।
নম্বর
১. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
২. ক. ৫ খ. ১০ গ. ০
৩. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
৪. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৫. ক. ৫ খ. ০ গ. ১০
৬. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৭. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৮. ক. ৫ খ. ১০ গ. ০
৯. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
১০. ক. ০ খ. ১০ গ. ৫
তুমি যেখানে দাঁড়িয়ে
০-৩৫: আর যা-ই হোক, ফুটবল তোমার বিষয় নয়। বিশ্বকাপ এলে হয়তো দু-একটা ম্যাচ দেখো, এমনিতে ফুটবলের খোঁজটুকু পর্যন্ত রাখো না। মাঝে মাঝে ফুটবল নিয়ে অন্যের মাতামাতি দেখলে সামান্য বিরক্তও হয়, কিন্তু সেটা প্রকাশ করো না। ফুটবল ভালোবাসতে হবে এমন কোনো কথা নেই, তবে টুকটাক জ্ঞান সব বিষয়ে থাকলে সেটা কিন্তু খারাপ কিছু না।
৪০-৭০: ফুটবলটা বেশ ভালোই বোঝো তুমি। শুধু যে খেলাটা উপভোগ করতে দেখো, এমন না। মাঝে মাঝে খেলার কৌশলগুলো নিয়েও গবেষণা করো তুমি। তাই বলে সারাক্ষণ ফুটবল নিয়েই পড়ে থাকো না তুমি। সময় বুঝে খেলা দেখো। ফুটবল নিয়ে খুব একটা বিতর্ক করো না, তবে আলোচনাটা করো। অনেক সময় বিতর্ক দেখলে এড়িয়ে যাও। তুমি বেশ সচেতন ফুটবলপ্রেমী।
৭৫-১০০: ফুটবলপ্রেমীর চেয়েও বেশি কিছু বলা গেলে তুমি সেটাই। ফুটবল তোমার কাছে একটা খেলা নয় শুধু, একদম ধ্যানজ্ঞান সবকিছু। শুধু ফুটবলের খুঁটিনাটি জানো, ব্যাপারটা তেমন না। এমনকি তুমি ‘তমুক ফুটবলারের অজানা দশটি মজার তথ্য’ বিষয়গুলোও জানো! ফুটবল নিয়ে ঠিক কতটা মাতামাতি করা যায়, সেটা তোমাকে দেখলেই বোঝা যায়। তার জন্য অনেক অভিযোগও শোনো। কোনো কিছুর বিষয়ে অগাধ জ্ঞান থাকা মন্দ নয়। তবে কী বলো তো, মাতামাতিটা যেন বাড়াবাড়ি না হয়ে যায়। ফুটবল তো আনন্দের জন্যই। তাই খেলাটা উপভোগ করো, সেটা নিয়ে বেশি তর্ক করো না।