মানুষকে বিপদ থেকে বাঁচিয়েছে এই তিন বিড়াল

ছোটখাট প্রাণীটা মানুষকে বিপদ থেকে বাঁচাতে পারে।ছবি: প্রথম আলো

পোষা প্রাণী হিসেবে বিড়াল সারা বিশ্বেই জনপ্রিয়। আদুরে, আহ্লাদি এবং অলস হিসেবে বিড়ালের নামডাক আছে। যত্ন করে পুষলে বিড়াল হয়ে ওঠে পরিবারের সদস্য। হয়ে ওঠে আনন্দের উৎস। অনেকেই পথেঘাটে বিপদে পড়া বিড়ালকে উদ্ধার করে আশ্রয় দেন। তোমাদের মধ্যেও হয়তো এমন অনেকেই আছো। একটা অসহায় প্রাণীকে বাঁচানো তো দারুণ কাজ। তবে এই ছোটখাট প্রাণীটা কি কখনো মানুষকে বিপদ থেকে বাঁচাতে পারে?

পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটালে শরীর এবং মন ভালো থাকে। চিকিৎসকেরা বলেন তেমনটাই। এ বিষয়ে বিজ্ঞানের নানা রকম ব্যাখ্যাও আছে। তবে অবাক করা ব্যাপার হলো, পৃথিবীতে এমন বেশ কিছু ঘটনাও ঘটেছে, যেখানে মানুষকে বিপদের হাত থেকে বাঁচিয়েছে বিড়াল। প্রতি বছর ৮ আগস্ট বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় বিড়াল দিবস। আজ এমন কিছু বিড়ালের কথা জেনে নেওয়া যাক, যারা মানুষকে বিপদ থেকে বাঁচিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্যাটটাইম ডট কমে পাওয়া গেল এমন তিনটি বিড়ালের খোঁজ।

আরও পড়ুন

খিঁচুনি হলো যখন

অ্যামি জুং এবং পুডিং
ছবি: গাইড পোস্ট

প্রথমে যার কথা বলতে চলেছি, সেই বিড়ালটার নাম পুডিং। অ্যামি জুং নামের এক নারী বিড়ালটিকে পোষার জন্য একদিন বাড়ি নিয়ে যান। সেই রাতেই ঘুমের মাঝে খিঁচুনি শুরু হলো অ্যামির। খিঁচুনিকে কেন খুব ভয়ংকর মনে করা হয়, জানো? যখনই একজন মানুষের খিঁচুনি হয়, তখনই তাঁর মস্তিষ্কের কিছু কোষ মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ে। মস্তিষ্কের কোষ একবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলে সেই ক্ষতি কিন্তু পুরোপুরি পুষিয়ে নেওয়া মুশকিল। আর খিঁচুনি যদি মারাত্মক আকার ধারণ করে, তাহলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। পুডিং বেচারি হয়তো এতকিছু জানতো না। হয়তো সে শুধু জানতো, যে মানুষটি আজ ওকে নতুন এক আশ্রয় দিয়েছেন, তার বিপদে কিছু করাটা ওর দায়িত্ব। তাই অ্যামির ঘুম ভাঙাতে চেষ্টা করল পুডিং। নিমিষেই উঠে পড়লো তাঁর গায়ে। তাঁর মুখে টোকা দিলো, নাকটাও কামড়ালো। কিন্তু কিছুতেই উঠলেন না অ্যামি। তখন অ্যামির ঘুমন্ত ছেলের ঘরে দৌড়ে গেল পুডিং, ভাঙিয়ে দিলো ঘুম। ফলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা হলো অ্যামির। প্রাণে বেঁচে গেলেন তিনি।

আরও পড়ুন

বাঁচল গোটা পরিবার

বেবি নামের বিড়াল
ছবি: জোশ অর্নবার্গ, ক্যাটটাইম ডট কম

লেটিশিয়া কোভালভস্কি ও জশ অর্নবার্গ দম্পতির বিড়ালের নাম বেবি। বেবি নামের এই বিড়ালটির যখন তেরো বছর বয়স, তখন লেটিশিয়ার গর্ভে বেড়ে উঠছে জমজ সন্তান। সেই সময় এক রাতে ঘুমন্ত দম্পতির বাড়ি ধোঁয়ায় ভরে উঠতে থাকল। বিপদ বুঝে বেবি ঝটপট লাফিয়ে পড়লো জশের গায়ে। ভাঙিয়ে দিল তাঁর ঘুম। ঘুম ভাঙতেই জশ দেখলেন, এ তো ভয়ংকর বিপদ। বাড়ি থেকে দ্রুত বেরিয়ে এলেন লেটিশিয়া আর বেবিকে সঙ্গে নিয়ে। সে রাতে অগ্নিদুর্ঘটনায় ওই দম্পতির সিংহভাগ সম্পদ নষ্ট হয়ে যায়। তবে প্রাণে বেঁচে যান তাঁরা, বেঁচে যায় লেটিশিয়ার গর্ভে বাড়তে থাকা দুই সন্তানও।

আরও পড়ুন

দেরি হলেই ক্যানসার হতো

অ্যাঞ্জেলা ও মিসি

অ্যাঞ্জেলা নামের এক নারী বাড়িতে এনেছিলেন মিসি নামের এক বিড়ালছানাকে। আনার পর থেকেই বিড়ালটির আচরণে কিছু অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করলেন অ্যাঞ্জেলা। কী করতো বিড়ালটা? অ্যাঞ্জেলার বুকে টোকা দিত, আর কিছুতেই অ্যাঞ্জেলাকে একলা থাকতে দিত না। অ্যাঞ্জেলা ভাবলেন, হয়তো সত্যিই কোনো কারণ আছে মিসির এই অদ্ভূত আচরণের। তাই গেলেন চিকিৎসকের কাছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় পাওয়া গেল এক বিস্ময়কর তথ্য। অ্যাঞ্জেলার বুকের ঠিক যে জায়গাটাতে টোকা দিত মিসি, সেই জায়গায় আছে একটা প্রি-ক্যানসারাস লেশন। তার মানে হলো, ক্যানসারের ঠিক আগের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে ওই জায়গার কোষ! চিকিৎসার পর সুস্থ হলেন অ্যাঞ্জেলা। মিসির আচরণেও আর কোনো অদ্ভূত ব্যাপার রইলো না। তবে এর বছর দুয়েক পরে মিসি ফের অ্যাঞ্জেলার বুকে টোকা দিতে শুরু করল। তিনি আবার গেলেন চিকিৎসকের কাছে। আবার ধরা পড়ল সেই একই প্রি-ক্যানসারাস লেশন। আবার করানো হলো চিকিৎসা। ক্যানসার থেকে বেঁচে গেলেন তিনি আবারো।

সূত্র: ক্যাটটাইম ডট কম

আরও পড়ুন