প্রিয় মনোবন্ধু,
সমস্যাটা মা-বাবা, শিক্ষক বা কোনো বন্ধুকে বলতে পারিনি। তোমাকে বলছি সাহস করে। সমস্যাটা একটু জটিল। আমি কোনো মানুষের সঙ্গে সহজ হতে পারি না, পরিবাবের লোকজন ছাড়া। এমনকি আমার মামাবাড়ি গিয়েও মামা-মামি, বোনদের সঙ্গে ভালো করে কথা বলি না। জানি না কী যেন আমাকে আটকে ধরে, কথা বলতে দেয় না। মামাবাড়িতে অনেক ঘর, আমি শুধু মামার বাসায়ই পড়ে থাকি। আর কোথাও যেতে লজ্জা লাগে, জানি না কেন। বড় ভাইয়ের বাসায় গিয়েও কারও সঙ্গে ঠিকমতো ইন্টারঅ্যাক্ট করতে পারি না। এ জন্য আমাকে কম হেনস্তার শিকার হতে হয়নি। এ কারণে আমি কোনো ইভেন্টে যাই না। গত পিকনিকে যাইনি। কয়েক দিন আগে বিদ্যালয়ের শেষ ক্লাস উদ্যাপনেও ক্লাসে পার্টি হয়েছিল। সেখানেও যাইনি লজ্জায়। অনেক জিনিসের অভাবের লজ্জায়। যেকোনো মানুষের সঙ্গেই সংকোচ হয় আমার। জানি না, বাকি জীবন কী করব। এই স্বভাব নিয়ে অনেক ব্যঙ্গ, অনেক মজার শিকার হয়েছি। তাই তোমার সাহায্য খুব প্রয়োজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
দশম শ্রেণি, বিটিআরসি উচ্চবিদ্যালয়, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
উত্তর: তোমার মধ্যে একধরনের সামাজিক উদ্বেগ (সোশ্যাল অ্যাংজাইটি) রয়েছে। এ জন্য তোমার প্রথম কাজ হচ্ছে যেসব স্থানে বা মানুষের সামনে তোমার উদ্বেগ বা অস্থিরতা শুরু হয়, সেসব স্থানে ও মানুষের কাছে বেশি বেশি যেতে হবে। সেগুলোকে এড়িয়ে যাওয়া চলবে না। এতে দেখবে, প্রথম প্রথম তোমার উদ্বেগ বা খারাপ লাগা থাকলেও পরের দিকে তা ঠিক হয়ে যাবে এবং তুমি স্বাভাবিকভাবে মিশতে পারবে। তুমি ইউটিউব দেখে ব্রিদিং একসারসাইজ ও রিলাক্সেশন চর্চা করতে পারো। এগুলোও তোমাকে উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করবে। লজ্জা–ভয় ঝেড়ে ফেলে তুমি সব সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শুরু করো, প্রথম প্রথম খারাপ লাগলেও যত তুমি অংশ নেবে, তত স্বাভাবিকভাবে সেগুলোতে অংশ নিতে পারবে, ভয়–লজ্জা সব কেটে যাবে। প্রয়োজনে তুমি সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সাইকিয়াট্রি বিভাগে যোগাযোগ করে আরও বিস্তারিত পরামর্শ ও সেবা গ্রহণ করতে পারো।
এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - ‘মনোবন্ধু’, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।