গিটার বাজানো শিখেছি

অলংকরণ: আরাফাত করিম

গত ২ মার্চ আমার এসএসসি পরীক্ষার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে। এসএসসি পরীক্ষা–পরবর্তী লম্বা ছুটি নিয়ে সবার মতোই অনেক পরিকল্পনা ছিল আমারও। এখানে যাব-সেখানে যাব, এটা করব, সেটা করব, কত্ত প্ল্যান! কিন্তু পরীক্ষা যখনই শেষ হলো, তখন পৃথিবী করোনার করাল গ্রাসে ভুগছে, যদিও দেশে তখনো ছড়ায়নি। প্রথম কয়েক দিন স্বাভাবিকভাবেই অনেক আনন্দে ছুটি কাটল, অনেক জায়গায় ঘুরতে গেলাম। কিন্তু মা–বাবা চিকিৎসক হওয়ায় করোনা দেশে প্রবেশ করার আগে থেকেই সর্বোচ্চ সতর্কতা নিয়ে চলতে হয়েছে। আর ১৮ মার্চ থেকে তো শুরু হয়েছে পুরোপুরি বন্দিজীবন। পঞ্চম শ্রেণিপড়ুয়া বোনেরও স্কুল ছুটি। এখন আমার দিন কাটে গল্পের বই পড়ে, কিআ পড়ে, গান শুনে, বোনের সঙ্গে লুডু খেলে আর বাসায় বসে মুভি দেখে। এই বন্ধে গিটার বাজানোটা শিখে ফেলছি আমি। বিকেলবেলা যখন বাবা হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরে, তখন করোনা প্রতিরোধে মহাযজ্ঞ শুরু হয়। গোসলের আগে বাবা কোনো কিছুতে হাত দেন না। গাড়ির শব্দ পেলে আমরা দরজা খুলে দিই, এমনকি হাত ধোয়ার জন্য কলও আমরা চালু করে দিই। এই লেখাটা যেদিন লিখছি, সেদিন আমার ঘরবন্দী জীবনের অষ্টম দিন। খুব অবাক লাগে ভাবতে, যে আমি কয়েক মাস আগে স্কুল-কোচিংয়ে ছুটতে ছুটতে বাসায় থাকার সময় পেতাম না, সেই আমি এখন বাসায় বসে থাকতে থাকতে বিরক্ত। আশা করি এই দুর্যোগ দ্রুত কেটে যাবে, আবার সেই চিরচেনা রূপ ফিরে পাবে ব্যস্ত শহর ঢাকা, চিরচেনা রূপ ফিরে পাবে আমাদের পৃথিবী।