তুমি কতটা পরিবেশবান্ধব

আচ্ছা, মূল্যবান কিছু কি কেউ বিনে পয়সায় দেয় আজকাল? দেয় না, তাই তো? এই পরিবেশকেই দেখো। অক্সিজেন থেকে শুরু করে বেঁচে থাকার জন্য যা যা দরকার তোমার, সবকিছুই এখানে পাবে। তা-ও একদম ফ্রিতেই! পরিবেশের কাছ থেকে এত কিছু পাচ্ছ, অথচ তার সঙ্গে তোমার আচরণটা কেমন, সেটাও কিন্তু দেখা দরকার। প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও আর স্কোর মিলিয়ে জেনে নাও তুমি কতটা পরিবেশবান্ধব।

১. দুই বন্ধু পথে গল্প করতে করতে হাঁটছ আর আরাম করে চিপস খাচ্ছ। চিপস শেষ হতেই খালি প্যাকেটটা—

ক. ডাস্টবিন খুঁজব খালি প্যাকেটটা ফেলতে। না পেলে হাতে বা ব্যাগে রাখব পরে ডাস্টবিনে ফেলার জন্য।
খ. ডাস্টবিন চোখে পড়লে ডাস্টবিনেই ফেলব। নইলে ইয়ে মানে রাস্তাতেই ফেলে দেব।
গ. কোথায় ফেলছি সেটা বিষয় না। আমার একার জন্য তো রাস্তা নোংরা বন্ধ হবে না, অন্যেরা যে ফেলছে?

২. কম্পিউটারে গেম খেলছ। এমন সময় বন্ধুর ফোন, এক্ষুনি তার বাসায় আড্ডা দিতে যেতে হবে। তুমি যা করবে—

ক. ফোন আর ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে দে দৌড়। কম্পিউটার চলতে থাকলে থাকুক।
খ. প্রথমে কম্পিউটার বন্ধ করব। তারপর রুমের বাতি, ফ্যান বন্ধ করে বের হব। বিদ্যুৎ অপচয় করা একদম ঠিক নয়।
গ. যদি তাড়াহুড়োয় ভুলে না যাই, তবে কম্পিউটার বাতি ফ্যান বন্ধ করে বের হব।

৩. রাতের বেলা ঘুমাতে গেলে। হঠাৎ খেয়াল করলে, কোথা থেকে যেন টপটপ শব্দ হচ্ছে। একদম ভূতের মুভির মতো। খানিক যেতেই বুঝতে পারলে রান্নাঘরের পানির কল খোলা। সেখান থেকেই টপটপ শব্দ আসছে। তুমি যা করবে—

ক. আলসেমি না লাগলে উঠে গিয়ে কল বন্ধ করে দেব, নাহলে অন্য কাউকে বলব বন্ধ করতে।
খ. ভূত না তো? তাতেই হবে। পানি পানির মতো পড়তে থাকুক। আমি আমার মতো ঘুমুতে যাই। শুভরাত্রি।
গ. এত ভাবাভাবির কী আছে? পানির ট্যাপ বন্ধ করব। আর ঘুমানোর আগে অন্য সব ট্যাপ বন্ধ আছে কি না সেটাও চেক করে নেব।

৪. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে নৌবিহারে নিয়ে যাচ্ছে লঞ্চের ছাদে বাতাসটা উপভোগ করছ। এমন সময় দেখলে, তোমার এক বন্ধু নদীতে বাদামের ঠোঙা ফেলার মুহূর্তে আছে। তোমার কাজ হবে—

ক. কী সর্বনাশ! আমি থাকতে এ কাজ হতে দেব না। নদীর পানি নোংরা করবে কেন? ফেলতে তো দেবই না, সেই সঙ্গে লেকচার দিয়ে দেব ভবিষ্যতে যেন এমন আর না করে।
খ. ফেললে ফেলুক। আমার কী? কত লোকেই তো ফেলে। নতুন তো কিছু নয়।
গ. নিষেধ করব। শুনলে ভালো, না শুনলে একটু ব্যথিত হলেও কিছু বলব না।

৫. চলাচলের জন্য যে মাধ্যমটি তুমি বেছে নেবে—

ক. রিকশায় আসা-যাওয়া করতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
খ. হেঁটে ঘুরতে ভালো লাগে। কিংবা সাইকেলে চড়ে সাঁ সাঁ করে ছুটে যেতে।
গ. গাড়ি-বাস একটা হলেই হলো। এত ভাবি না।

৬. খেলতে গিয়ে দেখলে মাঠের মধ্যে একটা প্লাস্টিকের ব্যাগ পড়ে আছে। তুমি কী করবে?

ক. তুলে নিয়ে ডাস্টবিনে ফেলব। শুনেছি, পরিবেশের জন্য প্লাস্টিক খুব ক্ষতিকর।
খ. খেলতে শুরু করব। আমি তো প্লাস্টিকের ব্যাগ কুড়াতে আসিনি মাঠে।
গ. এ রকম তো প্রায়ই দেখা যায়। কখনো কখনো তুলে ডাস্টবিনে ফেলতে ইচ্ছা হলে সেটা করি। ইচ্ছা না হলে করি না।

৭. পরিবেশ নিয়ে দুই পাতার একটা ফিচার দেখলে। তোমার পরবর্তী কাজ—

ক. পাতা উল্টে অন্য পাতায় চলে যাব।
খ. আগ্রহ নিয়ে পড়তে শুরু করব। পরিবেশ নিয়ে জানতে আমার খুব ভালো লাগে কি না।
গ. ইন্টারেস্টিং মনে হলে তখনই পড়ব। নাহলে পরে পড়ব।

৮. কোথাও বেড়াতে যাবে। হুট করে খেয়াল করলে যে পোশাকটা পরবে ভেবেছিলে সেটা ধোয়া হয়েছে। বেশ ভেজা। তুমি কী করবে?

ক. কী আর করার? অন্য কোনো পোশাক পরে নেব।
খ. হিটার, আয়রন কিংবা চুলা যেকোনো উপায়ে কাপড়টা শুকাব। তারপর সেটা পরেই যাব।
গ. অন্য জামা পরব। অল্প ভেজা হলে হয়তো আয়রন হিটার বা চুলা দিয়ে শুকানোর চেষ্টা করতাম।

৯. বিজ্ঞান উৎসবের জন্য কোনো একটি প্রজেক্টের আইডিয়া চাওয়া হলো তোমার কাছে। এর মধ্যে কোন আইডিয়াটি তুমি দিতে—

ক. গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়া নিয়ে
খ. নতুন কোনো গ্যাজেট তৈরির আইডিয়া দিতাম।
গ. যে হারে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে, তাতে পরিবেশ নিয়েই কোনো একটা আইডিয়া দিতাম।

১০. ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়, সতর্কসংকেত—এই শব্দগুলো শুনলেই তোমার যে কথা মাথায় আসে—

ক. ইয়ে মানে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে তো?
খ. খুব ব্যথিত বোধ করি। মন খারাপ হয়, ভয়ও লাগে।
গ. দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য কাজ করতে ইচ্ছা হয়। আর যদি ত্রাণ সহযোগিতায় নিজেকে কাজে লাগাতে পারি, সে চেষ্টা করতে থাকি।

নম্বর

১. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
২. ক. ০ খ. ১০ গ. ৫
৩. ক. ৫ খ. ০ গ. ১০
৪. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৫. ক. ৫ খ. ১০ গ. ০
৬. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৭. ক. ০ খ. ১০ গ. ৫
৮. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৯. ক. ৫ খ. ০ গ. ১০
১০. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০

যেখানে দাঁড়িয়ে তুমি

০—৩০: তুমি একদমই পরিবেশবান্ধব নও। পরিবেশ নিয়ে তোমার বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই। পরিবেশদূষণ হলো, না বিশুদ্ধ রইল এসব নিয়ে একদমই ভাবনা নেই তোমার। পরিবেশ নিয়ে খুব আগ্রহ থাকতে হবে ব্যাপারটা এমন নয়। তবে পরিবেশের ব্যাপারে সচেতন হওয়াটা জরুরি। তাই সাধারণ সচেতনতার বিষয়গুলো জানা দরকার। পরিবেশের প্রতি একটু যত্নবান হলে ক্ষতি কী বলো?

৩৫-৬০: তোমাকে পুরোপুরি পরিবেশবান্ধব বলা যায় না। তুমি পরিবেশের ক্ষতি করতে চাও না, এটা ঠিক। কিন্তু পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে কি না, সেটা নিয়েও খুব বেশি ভাবো না। চেষ্টা করো নিজে ক্ষতি না করতে। কিন্তু অন্য কেউ করলেও সেটা তোমাকে খুব বেশি ভাবায় না। পরিবেশ নিয়ে আরও সচেতন হতে হবে তোমাকে।

৬৫-১০০: পরিবেশ নিয়ে তোমার গভীর আগ্রহ। পরিবেশের ব্যাপারে বেশ সচেতনও তুমি। নিজে যেমন পরিবেশদূষণের পক্ষপাতী না, পরিবেশের থেকে প্রাপ্ত সুবিধার সঠিক ব্যবহার করতে পছন্দ করো, তেমনি অন্যদেরও এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে চেষ্টা করো তুমি। পরিবেশ নিয়ে লেকচার দিতে গিয়ে মাঝেমধ্যে খোঁচাও শোনো। তবে তাতেও দমে যাও না। তুমিই প্রকৃত পরিবেশবান্ধব।