তুমি কতটা পরোপকারী

একটুখানি সাহায্য করলে তোমার ক্ষতি হবে না। বরং মনের মধ্যে অপরকে সাহায্য করার অন্য রকম প্রশান্তি পাবে।মডেল : সিয়েল ও তাসনিমুল, ছবি : সুমন ইউসুফ
কথায় বলে, ‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য...’। তুমিও কি এই নীতিতে বিশ্বাসী? অন্যের উপকার করতে তোমার কি বেশ ভালো লাগে? নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও আর স্কোর মিলিয়ে যাচাই করে নাও তুমি কতটা পরোপকারী।

১. ‘মীনা, তুমি কি সিনেমার নায়িকা হতে চাও?’ ‘না দৈত্য, আমি চাই সবাই স্যানিটারি পায়খানা ব্যবহার করুক!’ এমনটিই ছিল চেরাগের দৈত্যের কাছে মীনার তিনটি ইচ্ছার একটি। দৈত্যের কাছে তোমার তিনটি ইচ্ছা কী হতো?

ক. দেশ আর দশের জন্য চাইতাম। গরিব-দুঃখী মানুষকে সাহায্য করতে চাইতাম।
খ. বাড়ি-গাড়ি-টাকাপয়সা চাইতাম। তৃতীয় ইচ্ছা হিসেবে আরও তিনটি ইচ্ছা পূরণ করতে চাইতাম...
গ. প্রথমে নিজের জন্য কিছু চাইতাম, তারপর বন্ধুবান্ধব বা অন্যদের জন্য।

২. তমুককে তুমি একদম পছন্দ করো না। একদিন দেখলে সে খুব বিপদে পড়েছে। তুমি কী করবে?

ক. বিপদে পড়েছে? একদম উচিত শিক্ষা হয়েছে। আমি আর কী করব? বসে বসে মজা দেখব।
খ. খারাপ লাগবে। কিন্তু কী দরকার ঝামেলায় জড়ানো? এড়িয়ে যাব।
গ. বন্ধু হোক শত্রু হোক। মানুষ হিসেবে একে অপরকে সাহায্য করা উচিত। যথাসাধ্য সাহায্য করব।

৩. একটা মেয়েকে কতগুলো বখাটে ইভ টিজিং করছে। তুমি যা করবে—

ক. কাউকে সাহায্যের জন্য ডাকব। অথবা পুলিশকে খবর দেব।
খ. একটা মেয়েকে ইভ টিজিং করবে আর আমি বসে থাকব? নিজেই এগিয়ে যাব।
গ. সমাজের অবক্ষয়ের কথা ভেবে হতাশ হব। তারপর নিজের কাজে মন দেব।

৪. তোমার এক সহপাঠী বাড়ির কাজ আনতে ভুলে গেছে। স্কুলে আসার পর তার খেয়াল হলো। কী করবে তুমি?

ক. ভুলবে কেন? বাড়ির কাজ ঠিকমতো করে আনাও একটা দায়িত্ব। না আনলে আমি কী করব?
খ. নিজের বাড়ির কাজ দিয়ে বলব, জলদি দেখে দেখে করে নে।
গ. নিজেই ওকে বাড়ির কাজ করে দেব। বন্ধুর জন্য না করলে কার জন্য করব?

৫. খুব সুন্দর একটা দিন। তুমি পরিপাটি হয়ে যাচ্ছ দাওয়াতে। এমন সময় দেখলে কেউ একজন ম্যানহোলে পড়ে গেছে। তোমার পরবর্তী কাজ হবে—

ক. দাওয়াতে যাব। তবে তার আগে নিশ্চিত করব অন্য কেউ সাহায্য করছে তাকে...
খ. আকাশের দিকে তাকিয়ে হাঁটলে তো ম্যানহোলে পড়বেই। আমার এখানে কোনো কাজ নেই বাপু।
গ. দাওয়াতে পরেও যাওয়া যাবে। আগে সাহায্য করব। তারপর সব।

৬. রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছ। হঠাৎ একটা ব্যাগ খুঁজে পেলে...

ক. ব্যাগটা থেকে ঠিকানা বের করার চেষ্টা করব। প্রকৃত মালিককে পৌঁছে দিতে যা যা করতে হয় তাই করব।
খ. আমার ব্যাগ তো আর না। বলা যায় না ব্যাগে কী না কী থাকবে। আমি ছুঁয়েও দেখব না ভাই!
গ. পুলিশের কাছে পৌঁছে দেব। যা করার তারাই করুক।

৭. একটা ছোট কুকুরছানা পথে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। বিষয়টি তোমার নজরে এল। তোমার ভাবনা—

ক. রাস্তাঘাটে কত মানুষ সমস্যায় পড়ে আছে। আর সামান্য কুকুর নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় আছে?
খ. আহারে! একটা কুকুরকে এ রকম দেখলে আমার সত্যি খুব খারাপ লাগবে।
গ. প্রথমে দেখব খুঁড়িয়ে হাঁটার কারণ কী। নিজেই চিকিত্সা করার চেষ্টা করব। দরকার হলে পশু হাসপাতালে নেব।

৮. বন্ধু ফোন করে বলল, ‘দোস্ত, একটা সাহায্য লাগবে...।’ তোমার পরবর্তী কাজ হয়—

ক. ‘হ্যালো...হ্যালো...নেটওয়ার্ক পাচ্ছি না রে। তোর কথা কিছুই বুঝতে পারছি না।’—কথা বুঝতে পারা সত্ত্বেও এড়িয়ে যাও।
খ. আগে শুনব দরকারটা কী। যদি বুঝি সাহায্য করার মতো, তবে করব।
গ. সাহায্য চাইলে করব না? ছুটে যাব। বন্ধুর বিপদ বলে কথা!

৯. চোর ধরা পড়েছে। সবাই খুব পিটুনি দিচ্ছে তাকে। এমন সময় তুমি যা করবে—

ক. চোর বলে কি সে মানুষ না? বাঁচানোর চেষ্টা করব। দরকার হলে নিজে মার খেয়ে হলেও তাকে পুলিশের কাছে পৌঁছে দেব।
খ. একদম ঠিক আছে? অপরাধ করেছে শাস্তি তো পেতেই হবে। পারলে নিজেও দু-চার ঘা দিয়ে দেব। হাহ্!
গ. চেষ্টা করব অন্যদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে তাকে পুলিশের কাছে দিয়ে দিতে।

১০. বন্ধুরা তোমাকে মাঝেমধ্যেই যা বলে খোঁচা দেয়—

ক. মধ্যমপন্থী
খ. দাতা হাতেম তাই
গ. স্বার্থপর

নম্বর

১. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
২. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৩. ক. ৫ খ. ১০ গ. ০
৪. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৫. ক. ৫ খ. ০ গ. ১০
৬. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৭. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৮. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৯. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
১০. ক. ৫ খ. ১০ গ. ০

যেখানে দাঁড়িয়ে তুমি

০—৪০: তুমি কিন্তু একদমই পরোপকারী নও। সাহায্যের কথা বললেই তুমি পালিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচার চেষ্টা করো। বন্ধুদের কাছে স্বার্থপর খোঁচাও শুনতে হয় এ জন্য তোমাকে। ভেবে দেখেছ কখনো, তুমি যদি কাউকে সাহায্য না করো, তবে তোমার বিপদেও কেউ সাহায্য করবে না? তুমি যদি নিজের লাভ-ক্ষতির হিসাব করায় এতটাই ব্যস্ত থাকো তবে জেনে রাখো, একটুখানি সাহায্য করলে তোমার ক্ষতি হবে না। বরং মনের মধ্যে অপরকে সাহায্য করার অন্য রকম প্রশান্তি পাবে।

৪৫—৬৫: তুমি আছ ঠিক মাঝামাঝি অবস্থায়। বুঝেশুনে কাজ করো। অর্থাৎ যদি বেশি ঝামেলায় না পড়তে হয় তবে তোমার সাহায্য করতে আপত্তি নেই। তুমি সাহায্য করতে পছন্দই করো। তবে নিজের সুবিধা-অসুবিধাটা বিবেচনা করে নাও। তাই অনেক সময় সুবিধাবাদী খোঁচাটাও শোনো বন্ধুদের কাছ থেকে। তবু তোমার হূদয়ে অপরের মঙ্গলের জন্য কাজ করার প্রবণতা আছে। আপাতদৃষ্টিতে তোমাকে পরোপকারী বলা যায়।

৭০—১০০: দাতা হাতেম তাই, মাদার তেরেসা—ঠিক কোন নামটাতে তোমাকে ডাকা উচিত বলো তো? কারও বিপদ দেখলেই তুমি ঝাঁপিয়ে পড়ো, সাতপাঁচ না ভেবেই। ছোট-বড় সব কাজেই সবাই তোমাকে পাশে পায়। তুমি সত্যিই অনেক পরোপকারী। তবে অনেকেই তোমাকে খাটিয়ে নেয় তাদের স্বার্থে। আবার অন্যের উপকার করতে গিয়ে নিজেই বিপদে পড়ে যাও, এমন ঘটনাও ঘটেছে তোমার সঙ্গে। উপকার করা নিঃসন্দেহে ভালো কাজ। তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে, অন্যকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে নিজেই আবার বিপদে পড়ে যাও না যেন!