তুমি কতটা বইপ্রেমী

লোকে বলে, বই নাকি মানুষের সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু। তোমার সঙ্গে বইয়ের সম্পর্কটা কেমন? বই কি তোমার শত্রু না বন্ধু? ঝটপট প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও আর নম্বর মিলাও। ফলাফলই বলে দেবে তুমি বই কতটা ভালোবাসো।

১. খুবই আয়েশ করে বই পড়ছ। গল্প জমে উঠেছে। এমন সময় কেউ তোমার সঙ্গে গল্প করতে এল। তোমার প্রতিক্রিয়া হবে—

ক. আগে দেখব কে। যদি দেখি পছন্দের কেউ বা জরুরি কিছু, তবে বই রেখে তার সঙ্গে গল্প করব।
খ. অবশ্যই গল্প করব। বই তো পরেও পড়া যাবে। তা ছাড়া বেশিক্ষণ পড়তেও পারি না আমি। গল্প করতেই বেশ লাগে আমার।
গ. এমনভাবে তার দিকে তাকাব যেন সে বুঝতে পারে তাকে বলছি, ‘বিরক্ত কোরো না, পরে এসো!’

২. বইমেলা নিয়ে তোমার ভাবনা—

ক. আহা! বইমেলার জন্যই তো অপেক্ষা করি পুরো বছর। ইচ্ছামতো বই কিনব। অন্যদেরও উৎসাহিত করব বই কিনতে এবং আমাকে উপহার দিতে!
খ. কী মজা! বইমেলা? ঘুরব, সেলফি তুলব, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেব। বই কিনলেও কিনতে পারি। নাও কিনতে পারি।
গ. সময়-সুযোগ পেলে যাব বই কিনতে।

৩. টিফিন বিরতিতে তোমার বন্ধুরা খুঁজছে তোমাকে। বেশির ভাগ সময়ই তোমাকে যেখানে খুঁজে পাওয়া যায়—

ক. ক্যানটিনের সামনে, আর কোথায়?
খ. আমাকে খোঁজাখুঁজির দরকার পড়ে না। আমি ক্লাসে বসে হোমওয়ার্ক বা প্রাকটিক্যাল করি।
গ. শশশ...কথা বোলো না! লাইব্রেরিতে আমি।

৪. তোমার প্রিয় বই নিয়ে চলচ্চিত্র বানানো হবে। খবরটা শুনতেই তোমার যা মনে হয়—

ক. ধ্যাত! বই সব সময়ই মুভির চেয়ে ভালো। চরিত্রগুলো যেভাবে কল্পনা করি, কখনোই মেলে না চলচ্চিত্রের সঙ্গে। চলচ্চিত্র বানানোর কী দরকার?
খ. চলচ্চিত্র হলেই ভালো। কষ্ট করে আর বইটা পড়তে হবে না।
গ. বেশ আগ্রহ নিয়েই দেখব। বইয়ের সঙ্গে চলচ্চিত্রে মিল-অমিল বের করতে হবে না?

৫. ভাবো তো একটা বইবিহীন দুনিয়ার কথা...

ক. মমম...সায়েন্স ফিকশন গল্পের মতো একদম!
খ. আরেকটু হলেই হার্ট অ্যাটাক করতাম! বই ছাড়া আবার দুনিয়া হয় নাকি?
গ. বই থাকুক বা না থাকুক, আমার কিছু যায়-আসে না।

৬. বই ধার দেওয়ার ব্যাপারে তোমার নীতি কোনটি?

ক. আমি বই ধার নেওয়ার পক্ষপাতী, দেওয়ার নয়। একেকটা বই অমূল্য আমার কাছে। সবাই তো আর বইয়ের যত্ন নিতে পারে না। সোজাসাপ্টা বলে দিই, দেব না।
খ. বই ধার দিই। তবে বুঝিয়ে বলি যেন বই নষ্ট না হয়।
গ. বই ধার নেবে? নিক! এমনিতেও বইটা বাসায় পড়েই থাকে। অন্যজন পড়লে বরং ভালোই লাগবে আমার।

৭. ধরো কেউ তোমাকে উপহার দিতে চাইছে। সে বেশ দ্বিধান্বিত তোমাকে কী উপহার দেওয়া যায়। তোমাকেই জিজ্ঞেস করল, উপহার হিসেবে কী চাও। তোমার উত্তর হবে—

ক. কেউ একজন উপহার দেবে এটাই অনেক। কী উপহার বড় কথা না। এটাই বলব তাকে। তাও জোরাজুরি করলে বইয়ের কথা বলব।
খ. বই! আর কোনো কথা হবে না।
গ. বলব আর যা-ই দাও না কেন, বই উপহার দিয়ো না।

৮. যে বিষয়টি তুমি একবার হলেও করেছ এর মধ্যে—

ক. অমুকের কাছ থেকে একবার একটা বই এনেছিলাম। এত চমৎকার বইটা। ইয়ে না মানে...পরে আর ফেরত দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া যার কাছ থেকে এনেছিলাম সে খুব একটা বই পড়েও না।
খ. তমুক একটা বই পড়তে দিয়েছিল। অনেক দিন রেখে, না পড়েই ফেরত দিয়ে দিয়েছি। পড়ার আগ্রহ হয়নি।
গ. অর্ধেক বই পড়ে রেখে দিয়েছি।

৯. গল্পে মূল চরিত্র বা কোনো চমৎকার চরিত্রের মৃত্যু হলে—

ক. কাউকে বোলো না। একটা গোপন কথা বলি। এ রকম হলে আমি কান্নাকাটি তো করিই, দুই-তিন দিন লেগে যায় ঠিক হতে!
খ. কষ্ট লাগে। কিন্তু কী আর করা!
গ. আরে গল্পই তো। এত ভাবাভাবির কী আছে?

১০. যাকে বই ধার দিয়েছ তার সঙ্গে দেখা হলে এর মধ্যে কোন কাজটি করো?

ক. কথার এক ফাঁকে জিজ্ঞেস করি বইটা পড়তে কেমন লাগছে। তাতে বইয়ের খোঁজও নেওয়া হয় আবার বইটা যে ধার নিয়েছে বিষয়টা মনে করিয়েও দেওয়া হয়!
খ. কাউকে বই ধার দিয়ে মনেই থাকে না আমার। সে মনে না করালে আমারও জিজ্ঞেস করা হবে না।
গ. প্রথমেই আগে বইয়ের খোঁজ নিই। বইটা আবার দাগিয়ে-টাগিয়ে বা ছিঁড়েটিড়ে ফেলেনি তো?

নম্বর

১. ক. ৫ খ. ০ গ. ১০
২. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৩. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৪. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৫. ক. ৫ খ. ১০ গ. ০
৬. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
৭. ক. ৫ খ. ১০ গ. ০
৮. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৯. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
১০. ক. ৫ খ. ০ গ. ১০

যেখানে দাঁড়িয়ে তুমি

০—৪০: শেষ কবে একটা গল্পের বই পড়েছিলে মনে করতে পারো? তুমি পাঠ্যবই পড়তে অপছন্দ তো করোই, গল্পের বই নিয়েও তোমার কোনো চিন্তাভাবনা নেই। বই পড়তে গেলেই হাই তোলো তুমি। সবার সব ব্যাপারে আগ্রহ থাকবে এমন নয় বিষয়টা। তবে বই তোমার চিন্তার জগেক অনেক প্রসারিত করবে। ঘরে বসেই হরেক রকম জগতের সন্ধান পাবে বইয়ের মাধ্যমে। বই নিয়ে এ রকম জ্ঞান ঝাড়ছি বলে ভেবো না, বই শুধু জ্ঞানের বিষয়। বই পড়াটা আনন্দেরও। বিশ্বাস হচ্ছে না? কোন ধরনের বই পড়তে তোমার ভালো লাগে তা বের করো। আর বই পড়াটা অভ্যাস করে নাও। দেখবে, বই পড়ার আনন্দটা কোথায় ধরতে পারছ।

৪৫—৭৫: তোমাকে বেশ বইপ্রেমী বলা যায়। বই পড়ার স্বভাবটা চমৎকার আয়ত্ত করেছ। তবে বই পড়তে পড়তে কখনোই পুরোপুরি বইয়ের জগতে হারিয়ে যাও না তুমি। বইয়ের সঙ্গে বাস্তব জগতের বেশ ভালো সমন্বয় ঘটিয়েছ। তবে কখনো কখনো তোমারও ব্যস্ততার জন্য বই পড়া হয়ে ওঠে না। বা পড়ব পড়ব করেও অনেক বই পড়া হয় না। যা-ই করো, বই পড়া কমিয়ে দিয়ো না কখনো। উল্টো বাড়াতে পারো।

৮০—১০০: তোমার কাছে বইয়ের অপর নাম অক্সিজেন! বই না পড়লে তোমার রাতের ঘুম নাই হয়ে যায়, পেটের খাবার হজম হয় না। এক বৈঠকে বই শেষ করার রেকর্ডও আছে তোমার। বই পড়ার নেশা বেশ ভালোই আছে তোমার। বই পড়াটা চালিয়ে যাও। এত বই পড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ারও কিছু নেই। শুধু একটাই কথা, বই পড়তে পড়তে নাওয়া-খাওয়া সব ভুলে যদি অনিয়ম করো, সেটা কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না। কখনো কখনো বইয়ের জগৎটাকে বাস্তব জগতের চেয়েও প্রাধান্য দাও তুমি। হয়তো ভাবো, বইয়ের চরিত্রগুলো সত্য হলো না কেন? তাই বাস্তবের সঙ্গে কল্পনার জগতের খানিকটা সমন্বয় করে নিয়ো। আর বই পড়া চালিয়ে যাও।