তুমি কতটা সাহসী

সাহসী মানুষ কাদের বলা যায়? যারা ভয় পায় না তারা সাহসী, নাকি যারা ভয়কে জয় করতে জানে তারা? এ নিয়ে চিন্তা করার আগে ঝটপট নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে নাও। আর নম্বর মিলিয়ে জেনে নাও তুমি কতটা সাহসী!

১. কয়েকজন বন্ধু মিলে পরিকল্পনা করল, প্ল্যানচেট করা হবে। গভীর অন্ধকারে কয়েকজন মিলে মৃত কোনো আত্মাকে ডেকে এনে তাকে প্রশ্ন করা আরকি। এ রকম পরিকল্পনা শুনে তোমার প্রতিক্রিয়া—

ক. আরেহ্ ধুরর! প্ল্যানচেট তো ভুয়া বিষয়। বৈজ্ঞানিক সমর্থন নেই। মজা করতে করাই যায়।
খ. সুখে থাকলে ভূতে কিলায়? নাহ্ বাপু, আমি এসব কোনো ভুতুড়ে বিষয়ে নেই।
গ. খুব যে আগ্রহ নিয়ে করব, তা না। আবার অনাগ্রহ দেখাব তা-ও না। বিষয়টা যেহেতু রহস্যময়, তাই একবার অভিজ্ঞতার জন্য করতেও পারি।

২. রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছ। দূরে একটা জটলামতো দেখলে। কেউ বা কারা মারামারি করছে। তুমি কী করবে?

ক. সোজা বাসায় চলে আসব। কোনো রকম গ্যাঞ্জামের মধ্যে আমি নেই, ভাই!
খ. ওখানে ছুটে যাব। গিয়ে মারামারি থামানোর চেষ্টা করব, যেমন করেই হোক।
গ. আগে বোঝার চেষ্টা করব ঘটনা কী। সাহায্য করতে পারব কি না। করতে পারলে করব নইলে যেখানে যাচ্ছিলাম সেখানে যাব।

৩. তোমাকে এক হাজার টাকা দেওয়া হবে। যদি এক রাত একা একটা ভুতুড়ে বাড়িতে থাকতে পারো। লোকে বলে, সেই বাড়িতে যে বা যারা একবার গেছে, আর কখনো তাদের ফিরে আসতে দেখা যায়নি...

ক. মাত্র এক হাজার টাকা? ভাববেন না আমি ভয় পাচ্ছি। কিন্তু আরও বাড়িয়ে দিলে যেতে পারি।
খ. ওরেরে! এসব পাগলামির মধ্যে আমি নেই। ‘হোম সুইট হোম’ রেখে থাকতে যাব ভূতের বাড়িতে?
গ. অবশ্যই! এ রকম মজার সুযোগ হাতছাড়া করার কোনো মানে নেই।

৪. ক্লাসে স্যার অঙ্ক করাচ্ছেন। বেখেয়ালে তিনি এক সূত্রের মধ্যে প্লাস না লিখে মাইনাস লিখে বসে আছেন। বিষয়টা তোমার চোখে পড়ল। তুমি যা করবে—

ক. পাশে বসা বন্ধুকে বলব স্যারকে বলতে। ও না বললে নিজেই বলব।
খ. স্যার লিখতে ভুল করেছেন এটা স্যারকে নিজেই জানাব।
গ. কী দরকার স্যারকে বলার? আমি তো জানি সঠিকটা কী। তা ছাড়া স্যারকে বলতে গেলে তিনি যদি মাইন্ড করেন?

৫. তোমার আম্মুর খুব শখের একটা ফুলদানি তুমি একদিন ভেঙে ফেললে। কী করবে?

ক. আম্মুর কাছে গিয়ে দুঃখী দুঃখী মুখ করে সত্যিটা স্বীকার করব।
খ. আম্মুকে বললে নিশ্চিত বকা খাব। তাই বলব, ছোট ভাই বা বোন ভেঙেছে। এক ঢিলে দুই পাখি আরকি। বলাও হলো, আমিও বাঁচলাম!
গ. ভাঙা কাচের টুকরো ডাস্টবিনে ফেলে দেব। আর মা যদি জিজ্ঞেস করে ফুলদানিটা কই গেল আমি অবাক হওয়ার ভান করে বলব, ‘আমি কী জানি, আজব!’

৬. ভূতের মুভি দেখলে কতটা ভয় পাও?

ক. যতক্ষণ ভূতের মুভি দেখতে থাকি, তখন একটু-আধটু ভয় লাগে। দেখা শেষ হয়ে গেলে আর লাগে না।
খ. ভূতের মুভি? আমি তো দেখতেই চাই না। আর একবার দেখলে পরের তিন দিন ভয়েই ঘুম নাই হয়ে যায় চোখ থেকে।
গ. ভয় লাগবে কী? ভূতের মুভি দেখলে কেন জানি আমার হাসি পায়!

৭. কোনো একটা বিষয়ের ওপর তোমাকে বক্তৃতা দিতে হবে। তোমার সামনে কয়েক শ লোক। তার আগে তোমার অবস্থা যা দাঁড়ায়—

ক. আমি তো বোধ হয় মাথা ঘুরে পড়েই যাব। আমার বক্তৃতা কেউ শুনতে পারুক বা না পারুক, দাঁতে বাড়ি খাওয়ার ঠকঠক শব্দ নিশ্চিত শুনতে পাবে।
খ. বারবার অনুশীলন করি, যেন বক্তৃতা দেওয়ার মূল সময় ঘাবড়ে না যাই।
গ. এমন বক্তৃতা দেব যেন সবাই আমাকে সুবক্তা হিসেবে মনে রাখে, হুহ্!

৮. কেউ তোমাকে আজেবাজে কথা বলে অহেতুক রাগাতে এল। তুমি কী করবে?

ক. প্রথমে হাতা গুটাব। তারপর সোজা জিজ্ঞেস করব, ‘যেচে পড়ে ঝগড়া বাধাতে এসেছ, হ্যাঁ?’ বুঝিয়ে দেব, আমার সঙ্গে লাগতে আসার ফল ভালো হবে না কিন্তু!
খ. এড়িয়ে যাব। কী দরকার ঝামেলা করার?
গ. অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেব। যদি দেখি একা পারব না, তবে এড়িয়ে যাব। আর নইলে আমিও ছেড়ে কথা বলব না।

৯. যদি কখনো একটা ভূতের দেখা পাও?

ক. দৌড়...দৌড়...এক দৌড়ে বাসায় চলে আসব।
খ. খানিকক্ষণ একটু কৌতূহলী হয়ে দেখব। তারপর আমি আমার পথে, ভূত ভূতের পথে।
গ. বলব, ‘হ্যালো ভূত! তোমার সাক্ষাৎ পেয়ে আনন্দিত হলাম। আসো গল্প করি!’

১০. তোমার বন্ধু একটা ভুতুড়ে বাড়িতে আটকা পড়েছে। জানতে পারলে তুমি। এরপর তুমি যা করবে—

ক. ছুটে যাব তাকে উদ্ধার করতে। আমি এসব ভূত-টুত বিশ্বাস করি না একদম!
খ. একা যাব না। আরও কিছু বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে যাব।
গ. আমি তো সব সময়ই বলি, ভূতের কাছ থেকে এক শ হাত দূরে থাকতে। কেউ তো আমার কথা বিশ্বাসই করে না। কাউকে পাঠাব উদ্ধার করতে।

নম্বর

১. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
২. ক. ০ খ. ১০ গ. ৫
৩. ক. ৫ খ. ০ গ. ১০
৪. ক. ৫ খ. ১০ গ. ০
৫. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
৬. ক. ৫ খ. ০ গ. ১০
৭. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৮. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৯. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
১০. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০

তুমি যেখানে দাঁড়িয়ে

০-৪০: তুমি ভয় পাও না। ভয় একদম তোমাকে পেয়ে বসেছে! জ্ঞানী ব্যক্তিরা বলেন, যে বিষয়টাকে তুমি ভয় পাও, সে বিষয়টার সম্মুখীন হও। তবেই ভয় কেটে যাবে। সবকিছুতে শুরুতেই ভয় পেলে চলবে না। ভয় পেয়ে নিজের মধ্যে গুটিয়ে না থেকে একদিন একটু সাহস করেই দেখো না। দেখবে অনেক অযৌক্তিক বিষয়ে ভয় একদম কেটে গেছে তোমার।

৪৫-৭০: তোমাকে ভালোই সাহসী বলা যায়। কোনো বিষয়ে প্রথমেই ঘাবড়ে যাওয়ার প্রবণতা নেই তোমার। প্রথমেই ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি বুঝে তারপর পদক্ষেপ নাও তুমি। তবে কখনো কখনো নিজের দায়িত্ব অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দাও ভয় থেকে। এ বিষয়টা দূর করে ফেলতে চেষ্টা করো। খুব বেশি পরিবর্তনের দরকার নেই।

৭৫-১০০: বাংলা সিনেমায় নায়কদের দেখেছ? কোনো কিছুকেই ভয় পায় না যে? আগ-পাছ না ভেবেই বিপদের মুখে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তোমার অবস্থা হয়েছে সেই রকম। সাহসী হওয়া বেশ ভালো বিষয়। কিন্তু পরিস্থিতি না বুঝে কাজ করলে সেটাকে সাহসিকতা বলা যায় না। তখন তাকে বেপরোয়া বলা চলে। অনেক সময় এর জন্য তুমি বিপদেও পড়তে পারো। তুমি সাহসী সেটা বেশ প্রশংসার ব্যাপার। কিন্তু পরিস্থিতি বুঝে কাজ করলে তোমার সাহসিকতা একটুও কমবে না, এটাও মাথায় রেখো।