বিষণ্নতাকে হালকা করে দেখবে না

প্রিয় মনোবন্ধু,

আমি একাদশ শ্রেণিতে পড়ি। একাদশ শ্রেণিতে যখন উঠলাম, তখনো সবকিছুই ভালো লাগত আমার। ভালো করে পড়াশোনা করতাম। মনোযোগ ছিল। আমি একটু বেশি কথা বলি। তাই সবাই বাচাল বলত। কিন্তু ইদানীং আমার কিছু ভালো লাগে না। কারও সঙ্গে থাকতে ইচ্ছা করে না। বাসায় তো একটুও ভালো লাগে না। মা–বাবাকেও ভালো লাগে না। মনে হয় সারা দিন একা একা ঘুরে বেড়াই। কিন্তু তা করতে পারি না। পড়তে ইচ্ছা করে, কিন্তু পড়তে বসলে কোনো মনোযোগ আসে না। মাঝেমধ্যে এক পড়া বারবার পড়লেও মনে থাকে না। ছোটবেলা থেকেই কারও সঙ্গে কোনো কথা শেয়ার করতে পারি না আমি। শুধু মনে হয়, আমার সমস্যাগুলোর সমাধান হবে না। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় না বুঝে একটা ভুল করে ফেলেছিলাম আমি। তাই মা–বাবা আমাকে সন্দেহ করে। এ জন্য মা–বাবাকে ভালো লাগে না। তাঁদের না বলে কোথাও গেলে তাঁরা ভাবেন, আমি কোনো অন্যায় কাজ করছি। এখন তো আমি একটু বড় হয়েছি। আমিও তো বুঝি কোনটা অন্যায়, তাই কোনো অন্যায় আমি করি না। এটাই মা–বাবাকে বোঝাতে পারি না। সমস্যাটার একটা সমাধান দাও।

উত্তর: তোমার মধ্যে বিষণ্নতার অনেক লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। ‌তুমি একা না থেকে সব সময় প্রিয় মানুষদের সান্নিধ্যে থাকবে, সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবে, রাত জেগে মোবাইল ব্যবহার করবে না, কলেজে যেতে ইচ্ছা না করলেও কলেজ যাবে, হালকা ব্যায়াম করবে, নিয়মিত গোসল করবে, পরিষ্কার কাপড় পরবে। পাশাপাশি আগে যে কাজগুলো করে আনন্দ পেতে, এখন সেই কাজগুলো বেশি বেশি করে করার চেষ্টা করবে। তোমার মনের কথাগুলো যেভাবে আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছ, তেমনি করে কাছের বন্ধু, মা–বাবা বা কোনো শিক্ষকের সঙ্গে শেয়ার করবে। মা–বাবাকে আমাদের লেখাটা দেখাবে এবং বলবে অতীতের কোনো ভুলের জন্য বর্তমান আর ভবিষ্যৎকে তাঁরা যেন সন্দেহ না করেন, তাহলে বর্তমান আর ভবিষ্যৎ দুই–ই সমস্যার মধ্যে পড়তে পারে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, বিষণ্নতাকে হালকা করে দেখবে না। তুমি অবশ্যই মা–বাবা, বন্ধু বা শিক্ষকের সাহায্য নিয়ে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রয়োজনীয় ওষুধ বা পরামর্শ গ্রহণ করবে।

এই বিভাগে তোমরা তোমাদের মানসিক নানা সমস্যা, যা তোমার শিক্ষক, মা-বাবা বা অন্য কাউকে বলতে পারছ না, তা আমাদের লিখে পাঠাও। পাঠানোর ঠিকানা—মনোবন্ধু, কিশোর আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা। ইমেইল করতে পারো [email protected]-এই ঠিকানায়। ইমেইলে পাঠাতে হলে সাবজেক্টে লিখবে - ‘মনোবন্ধু’, তারপর তোমার সমস্যাটি ইউনিকোড ফরম্যাটে লিখে পেস্ট করে দেবে মেইলের বডিতে। নাম, বয়স লিখতে ভুলবে না। তোমার সমস্যা বোঝার ক্ষেত্রে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।