ভেসে যাও ক্যান্ডির ঢলে

একই রঙের তিনটি বা তার বেশি ক্যান্ডি মিলে গেল, হয়ে গেল ক্রাশ। পর্দায় নামল ক্যান্ডির ঢল আর ভেসে এল একটা শব্দ-সুইট! ফেসবুকের সবচেয়ে জনপ্রিয় গেম এখন ক্যান্ডি ক্রাশ সাগা। অ্যাপল অ্যাপ স্টোরে এটি এক নম্বরে। গুগল প্লে স্টোরে সবচেয়ে বেশি আয় করা অ্যাপলিকেশন। বাথরুমে বসে, অফিসে কাজের ফাঁকে, রাতে ঘুমানোর আগে-কোনো সময়ই বাদ দিচ্ছে না গেমাররা। ফেসবুকে তো বটেই, স্মার্টফোনেও ধুমসে চলছে ক্যান্ডি ভাঙার খেলা।

রাগ, হতাশা, ভয়, উদ্বেগ, আশা, আনন্দ-মানুষের প্রায় সবগুলো অনুভূতিই উসকে দিচ্ছে এই গেম। একটা লেভেলে আটকে গিয়ে পরের ৩০ মিনিট লাইফের জন্য অপেক্ষা করার যে কী যন্ত্রণা, সেটা ক্যান্ডি ক্রাশ খেলোয়াড়দের মতো আর কেউই বুঝবে না। তিন-চার দিন ধরে চেষ্টা করে কঠিন একটা লেভেল পার হয়ে গেলে হঠাৎই, হয়ে গেল সুগার ক্রাশ। একের পর এক একই রঙের ক্যান্ডি নামছে আর মিলি যাচ্ছে। হাততালি দিয়ে নেচে উঠতে মন চায় এই সময়ে। ফেসবুকের হোমপেজ খুলেই যদি দেখ অমুক বিট ইউ ইন ক্যান্ডি ক্রাশ—মুঠো পাকিয়ে ঘুষি মারতে ইচ্ছে হয় না কম্পিউটারের পর্দায়? আরও আছে গেম পছন্দ করে না এমন সব বিরক্তিকর বন্ধুরা। কেউ স্ট্যাটাসে গম্ভীর ঘোষণা দিয়ে বসল, আমাকে ক্যান্ডি ক্রাশ রিকোয়েস্ট পাঠালে ডিলিট করা হবে। পাল্টা জবাবে বলতে ইচ্ছা হয়, যে আমার প্রয়োজনের সময়ে লাইফ পাঠায় না, সে তো আমার বন্ধু হওয়ার যোগ্যই না।

ফেসবুকে গত বছর এপ্রিল মাসে ছাড়া হয় এই গেমটি। ফার্মভিলকে টপকে ফেসবুকের সবচেয়ে জনপ্রিয় গেম হয়ে যায় এটি এ বছর মার্চ মাসে। প্রতিদিন নানা মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষ ৬০০ মিলিয়ন বার খেলছে এটি। ক্যান্ডি ক্রাশের নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান কিংস এই গেম থেকে প্রতিদিন আয় করছে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ ডলার। ক্যান্ডি ক্রাশের জনপ্রিয় কত বুঝে নাও সংগীতশিল্পী সাইয়ের মিউজিক ভিডিও জেন্টলম্যান দেখেই। তিন সেকেন্ডের জন্য সাইকে খেলতে দেখা গেছে এটি। ইনস্টাগ্রামে প্রায়ই দেখা যাবে ক্যান্ডি ক্রাশ ভক্তরা পার্টি দিচ্ছে ক্যান্ডি থিমে। বেক করছে ক্যান্ডি ক্রাশের বোর্ডের মতো কেক।

ক্রান্ডি ক্রাশ যারা এখনো খেলোনি, তারা যেন এখনই ক্লিক করে বসো না। সময় নিয়ে ভেবেচিন্তে দেখতে পারো। ক্যান্ডি আর দিল্লির লাড্ডু এখন প্রায় সমার্থক। ‘খেললেও’ পস্তাবে, ‘না খেললেও’।

ঠিক আছে, ঝুঁকি নেবেই তুমি। এখন জেনে নাও খেলার নিয়মকানুন। একটি বোর্ডে সারিবদ্ধভাবে নানা রঙের ক্যান্ডি দেখতে পাবে। ওপরে নিচে বা পাশাপাশি তিনটি বা তার বেশি একরঙা ক্যান্ডি মেলাতে হবে। চারটি বা এর বেশি ক্যান্ডি মেলাতে পারলে নানা রকম বোনাস বা বুস্টার পাবে। প্রতিবারে আবার পাঁচটি লাইফ। এর মধ্যে লেভেল পার হতে না পারলে লাইফের জন্য অপেক্ষা করতে হবে অথবা বন্ধুদের কাছে লাইফ চাইতে হবে। উফ! এই সময়টা যে কী বিরক্তিকর। ফেসবুকে খেলতে তো পারোই। স্মার্টফোনে বিনা মূল্যে অ্যাপলিকেশন নামিয়ে খেলা যাবে। এমনকি কিংসের ওয়েবসাইটেও খেলতে পারো এই গেমটি।

লিংক: ফেসবুক:  http://goo.gl/kJZjh

গুগল প্লে:  http://goo.gl/R5H9W

আইটিউনস:  http://goo.gl/JJwW1

কিংস:  http://goo.gl/3suDn

সূত্র: উইকিপিডিয়া, সিনেট, টাইম