আমাদের চারপাশে অনেকেই আছে, যাদের কারও হয়তো দৃষ্টিশক্তি কম, কারও শ্রবণশক্তি বা শোনার ক্ষমতা কম। এসব মানুষের বেঁচে থাকতে প্রতি মুহূর্তেই সংগ্রাম করতে হয়। কিন্তু যাদের এসব সমস্যা নেই তারা অনেক সময়ই বুঝতে পারে না। আবার অনেকে বুঝতে চেষ্টাও করে না। সবচেয়ে কষ্টের ব্যাপার হচ্ছে, অনেকে তাদের নিয়ে ঠাট্টা বা হাসাহাসিও করতে বাদ রাখে না। তাই কানে কম শোনার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে, তারা মানুষের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে মিশতে পারে না। তাতে অন্যদের সঙ্গে সহজে এদের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে না। কিন্তু সামাজিক জীব হিসেবে তাদের প্রতি প্রত্যেকেরই সহানুভূতি আর সহায়তার মনোভাব রাখা উচিত। যাদের এ ধরনের সমস্যা আছে, তাদের সঙ্গে একটু সমঝে কথা বলা উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের সঙ্গে আসলে কেমন আচরণ করা উচিত, সেটাও বাতলে দিয়েছেন তাঁরা।
চিৎকার কোরো না
যারা কানে কম শোনে তাদের সঙ্গে স্বাভাবিক গলায় কথা বলো। আর কথাগুলোও যতটা সম্ভব স্পষ্ট করে উচ্চারণ করা উচিত। তাদের সঙ্গে জোরে জোরে চিত্কার করে খুব বেশি লাভ নেই। তবে হ্যাঁ, যারা এমনিতেই নিচু গলায় কথা বলে, তাদের একটু জোরে কথা বলা দরকার।
কানের কাছে মুখ নয়
কম শ্রবণশক্তির মানুষ সাধারণত অন্যদের কথা বলার সময় ঠোঁটের নড়াচড়া দেখে কথাগুলো বুঝতে চেষ্টা করে। তাই তাদের কানের কাছে মুখ নিয়ে গেলে তারা তোমার ঠোঁট দেখতে পারবে না। তাতে তোমার বলা কথাও তারা বুঝতে পারবে না।
গোলমাল কমিয়ে দাও
গোলমেলে পরিবেশে কম শ্রবণশক্তির মানুষ অন্য কারও কথা শুনতে বা বুঝতে বারবার হোঁচট খায়। এই যেমন এয়ারকন্ডিশনের শব্দ, টিভির আওয়াজ বা অন্য যেকোনো কিছু গোলমালে আসল কথাই বুঝতে পারে না। তাই তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় এসব শব্দ বন্ধ বা যথাসম্ভব কমিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত।
সবাই একসঙ্গে নয়
কোনো পার্টি বা মিটিংয়ে দেখা যায়, সবাই একসঙ্গে কথা বলতে শুরু করে। এতে স্বাভাবিক মানুষেরও কথা শুনতে সমস্যা হয়। আর কম শ্রবণশক্তির মানুষের সমস্যা হয় আরও বেশি। তাই এসব সময়ে সবাই একসঙ্গে কথা না বলে একজন একজন করে কথা বলো। তাতে সবাই শুনতে পাবে।
কোনো ব্যাপার না?
কেউ যদি তোমার কথা প্রথমবার শুনতে না পায়, তাহলে কথাটা আবারও বলো। প্রয়োজনে দুবার-তিনবার হোক না, ক্ষতি কী। এসব ক্ষেত্রে অনেকে কথাটা দ্বিতীয়বার না বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু একটা কথা মনে রাখা দরকার, যে মানুষটি কম শোনে তার কাছে সবকিছুই অনেক বড় ব্যাপার।