তুমি কি অঙ্কে ১০০-তে ১০০ পেতে চাও

তুমি কি অঙ্কে ১০০-তে ১০০ পেতে চাও? অঙ্ক বলতে এখানে আমরা গণিত বোঝাচ্ছি। গণিতের পরীক্ষায় তুমি কি ভালো করতে চাও? তাহলে এই বুদ্ধিগুলো অবলম্বন করে দেখতে পারো।

১. সিলেবাসকে জানো। পরীক্ষায় কী আসে, সিলেবাস কী, গত তিন বছরের পরীক্ষায় কী কী প্রশ্ন এসেছিল, এগুলো তোমাকে বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে। যে অংশগুলো সিলেবাসে নেই, তা নিয়ে পরীক্ষার আগে খেটে মরার দরকার নেই।

২. পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নাও। এর এক নম্বর নিয়ম হলো, পুরো মন পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য দিতে হবে। মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটে, এমন কিছুই তুমি করতে পারবে না। ফেসবুক ডিঅ্যাক্টিভেট করতে হবে। মুঠোফোন রাতের বেলা তোমার বিছানার আশপাশে থাকতে পারবে না। পড়ার সময়ও মুঠোফোন, ইন্টারনেট, গেজেট ইত্যাদি থেকে দূরে থাকতে হবে। বন্ধুবান্ধব, হইচই, আত্মীয়স্বজন, বেড়ানো-ঘোরা--এগুলো থেকে সরে আসতে হবে।

৩. গণিতে ভালো করার জন্য প্রথমে বইয়ের প্রতিটা অনুশীলনীর আগে যে বিবরণগুলো থাকে, তা মন দিয়ে পড়তে হবে আর বুঝতে হবে। কাজেই শুধু অনুশীলনী না করে বইয়ের টেক্সটও পড়তে হবে। জিনিসটা কী, বুঝে নিতে হবে। এরপর যে উদাহরণগুলো দেওয়া আছে, সেগুলো শিখতে হবে। তারপর অনুশীলনী। গণিত হলো চর্চা বা প্র্যাকটিস। যত প্র্যাকটিস করবে, তত তুমি গণিতে ভালো হবে। পরীক্ষায় গণিতে ভালো করার তিনটা উপায় আছে, প্র্যাকটিস, প্র্যাকটিস, প্র্যাকটিস।

৪. প্র্যাকটিস করার সময় সামনে নোট দেখে করলে হবে না। না দেখে পুরো অঙ্ক কষে উত্তর মেলাতে হবে। যদি পারো, তাহলে আবার করবে। যদি না পারো, যতক্ষণ না তুমি নিজে নিজে এই সমস্যার সমাধান কষে ফেলতে পারছ, ততক্ষণ কোনো সাহায্য না নিয়ে এই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা চালিয়ে যাবে। শিখে হেফজ করে ফেলবে।

৫. ফর্মুলা যদি মুখস্থ রাখতে হয়, রাখতেই হবে। কিছুই করার নেই। আমরা যতই বলি না কেন, মুখস্থকে ‘না’ বলো, যদি ফর্মুলা মুখস্থ করাই রেওয়াজ হয়, তাহলে ফর্মুলা মুখস্থ করে রাখো। তারপর একটা ফর্মুলার কার্ড বানাও। সব সময় এটা দেখবে। মুখস্থ করে না দেখে লিখবে। প্র্যাকটিস করবে।

৬. জ্যামিতি মুখস্থ করতে হয় না। বুঝবে। বুঝে বুঝে লিখবে। গণিতের কোনো সমস্যার সমাধানই মুখস্থ করবে না। যুক্তি দিয়ে ধাপে ধাপে এগোবে। কিন্তু অনুশীলনী এতবার করবে যে পরীক্ষার হলে বসে যেন সমস্যার সমাধান ভেবে ভেবে বের করতে না হয়।

৭. মক টেস্ট দেবে। নিজেরা প্রশ্ন তৈরি করে পরীক্ষার হলে বসার মতো করে বসে পরীক্ষা দেবে।

৮. কোনো কিছু না বুঝলে শিক্ষক, বড় ভাইবোন, মা-বাবা, বড় কারও সাহায্য নিয়ে বুঝে নেবে।

৯. তুমি নিজেকে তৈরি করবে ইতিবাচকভাবে। মনকে ঠিকঠাক রাখবে। নিজেকে বলবে, আমি গণিতে ভালো করতে চাই। আর তা আমিই পারব।

১০. পরীক্ষার হলে মাথা ঠান্ডা রাখবে। প্রশ্নপত্র ঠিকভাবে পড়ে নেবে। কোন কোন প্রশ্ন বাধ্যতামূলক, কোন প্রশ্নের বিকল্প আছে, তা জেনেবুঝে নিয়ে উত্তর দেবে। মোট কটার উত্তর দিতে হবে, কয়টা দিচ্ছ, খেয়াল করবে। কঠিন প্রশ্নের উত্তর দেবে শেষে। যেগুলো সহজে পারো, সেগুলো আগে দেবে।

অবশ্যই রিভিশন দেবে। অনেক সময় আমরা সিলি মিসটেক করি। সহজ ভুল। আমি একবার ৩ গুণন ১৯ =৮৭ লিখে এসেছিলাম। ১৯ তো ২০-এর কম, কাজেই ৩ দিয়ে গুণ দিলে ফল ৬০-এর কম হবে, খেয়াল করলেই ধরতে পারতাম। খেয়াল করবে। মাথা ঠান্ডা। আর মাথার যুক্তিবুদ্ধি সাধারণ জ্ঞান যেন কাজ করে।

প্রশ্ন কঠিন হলে ঘাবড়াবে না। এমন হতে পারে, প্রশ্নপত্রে ভুল আছে, বা কেউই পারছে না। কাজেই মন ভালো রেখে পরীক্ষা শেষ করবে হাসিমুখে।