দেখতে দেখতে স্কুলজীবনের শেষে চলে এলাম। ক্লাস টেনে উঠে গিয়েছি। স্কুলের প্রথম দিনটার কথা খুব মনে পড়ে। অনেক মুখই তখন অচেনা। তখন কি বুঝেছিলাম যে আমার পাশে বসে থাকা অচেনা ছেলেটার সঙ্গেই একদিন পিঠে চাপড়ে কথা বলব? একসঙ্গে স্কুল পালাব, টিফিন নিয়ে বাড়াবাড়ি করব, ক্লাস ফাঁকি দেব? সেই দিনের দেখা সেই অজানা-অদেখা মুখগুলোই এখন আমার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গিয়েছে। মনে পড়ে, যখন মাঠে ক্রিকেট খেলার সময় বল মাঝেমধ্যে বড় ভাইয়াদের ওখানে চলে যেত আর বড় ভাইয়ারা সেটা পেয়ে দূরে ছুড়ে ফেলে দিত, তখন একটু অভিমান হতো । ভাবতাম, আমরা বড় হব কবে? আমরাও তখন বড় ভাই হয়ে দাপট দেখাব। আজ সেই বড় ভাইয়াদেরও অনেক মিস করি। স্কুলের মাঠের দিকে তাকালেই ওই বড় ভাইয়াদের হাঁটাচলার দৃশ্য ভেসে ওঠে। মনে হয়, অনেক কিছুই যেন নেই। কতজন কত অদ্ভুত নামে ডাকত, কেউ কেউ আবার তাদের বিশেষ কর্মকাণ্ডের বা বিশেষ বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত ছিল সবার কাছে। সবই স্মৃতিতে যুক্ত হয়ে আছে। আবার ক্লাসরুমের ফ্যান বাঁকা করা, জানালায় জোরে বাড়ি দেওয়া—এসবের কোনো কিছুই ভোলার মতো নয়।
এবার আমাদের পালা। এই এক বছর স্কুলজীবনটাকে যত ভালোমতো উপভোগ করা যায়, তা-ই করব। সব হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে এক হয়ে যাব সব বন্ধু। স্কুলের মনোরম পরিবেশে হাসি মুখে কাটাব সুন্দর মুহূর্তগুলো। চিরদিন ঘনিষ্ঠ হয়ে থাকবে স্কুলের ভবনগুলো। সব বন্ধু এত দিন একসঙ্গে থাকার পর বিদায়টা দিতে পারি হাসি মুখেই। সেই সঙ্গে অগ্রসর হব নতুনের দ্বারে, সফলতার দুর্বার প্রচেষ্টা নিয়ে। নতুন জায়গায় নতুন বন্ধু হবে। আপন করে নিতে হবে সবাইকেই। সবাই সব সময় চিরচেনা-পরিচিত হয়ে থাকবে হৃদয়ে। স্মৃতিতে থাকবে সব সুন্দর মুহূর্ত।
শাফিন আহমেদ
দশম শ্রেণি, ফরিদপুর জিলা স্কুল, ফরিদপুর