পরিত্যক্ত সেই বাড়িটি

—রোহান, তুই শিওর তো? এখানেই দেখেছিলি?

—হুম, আমি ১০০ পার্সেন্ট শিওর। ওই যে, ওই জানালাতেই দেখেছিলাম তাকে।

অবশ্য আগেও তাকে চিনত না কেউ। হঠাৎই এসেছিল এলাকায়। প্রায় এক বছর ধরে রোহান আর জয়দের সঙ্গে সম্পর্ক। অথচ রিমার বাড়ি, তার বাবা–মা সম্পর্কে কেউ কিছু জানে না। অবশ্য তারাও কিছু জিজ্ঞেস করেনি কখনো। গতকাল জয় হঠাৎ একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে দেখেছিল রিমাকে। ও–ই সে ব্যাপারে শিওর হওয়ার জন্যই আজ সে রোহানকে নিয়ে এসেছে। কারণ, ওই বাড়িতে একা ঢোকার মতো সাহস কারও নেই। অনেক আজব ঘটনা ঘটে সেখানে।

—আচ্ছা চল তো, ভেতরে গিয়ে দেখি।

—কী, কী, কিন্তু এভাবে একা যাওয়াটা কি ঠিক হবে?

—একা কই? আমরা তো দুজন।

—আমি? আমি কেন? আমি যাব না।

—মানে কী? তুই তো বললি তুই রিমাকে ওখানে দেখেছিলি।

—হুম, কিন্তু ওখানে রিমা! কী করে হতে পারে!

—হতেই পারে, চল গিয়ে দেখে আসি।

— কিন্তু...।

—কোনো কিন্তু না, চল।

আরও পড়ুন

জয় আর রোহান আস্তে আস্তে এগোচ্ছে, দিনের বেলায়ও ঘরের ভেতর রাতের মতো অন্ধকার। ফোনের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালাল রোহান। ঘরের ভেতর একটুও নেটওয়ার্ক নেই। যে ঘরে রিমাকে দেখেছিল, সেটা খোঁজার চেষ্টা করছে তারা। হঠাৎ রোহানের হাতের ওপর দিয়ে কী যেন উড়ে গেল। জয় চিত্কার করে বের হয়ে যেতে চাইল—তাকে আটকাল রোহান।

—বাদুড়।

—ও, আমি তো ভাবছিলাম...

ফোন তুলে নিল রোহান। এবার ড্রয়িংরুম পেরিয়ে সিঁড়িতে পা রাখতেই থেকে শব্দ হলো সিঁড়ির পেছনের ঘর। ‘রো-হা-ন।' শব্দটা খুবই সূক্ষ্ম, তবু রোহানের বুঝতে দেরি হলো না। জয়ের গলা। পেছনের দিকে তাকিয়ে দেখে জয় নেই। তাড়াতাড়ি দৌড়ে গেল। কিন্তু কেউ নেই ঘরটায়। হঠাৎ তার পেছনে কে যেন বলে উঠল:

—আরও একজন। বাহ্‌, ভালোই তো। তোমাকে স্বাগত।

এই নিয়ে তিনজন গেল। এবার হয়তো রোহান আর জয়ের খোঁজে আসবে আরও কেউ। আর তারাও হারিয়ে যাবে এই বন্ধ কবরস্থানে, চিরদিনের জন্য।

আরও পড়ুন