ডিভাইসের প্রতি আসক্তি থাকায় সন্তান কি খিটখিটে স্বভাবের হয়ে যাচ্ছে?

কিশোর আলোর দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ২২ অক্টোবর রাজধানীর তেজগাঁওয়ের আলোকি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে দিনব্যাপী ‘নগদ কিআ কার্নিভ্যাল ২০২৩’। জনপ্রিয় মডেল, অভিনেতা-অভিনেত্রী, লেখক, পাঠক, মনোবিদ আর অভিভাবকের পদচারণে আয়োজিত হয়েছে জমজমাট এক কার্নিভ্যাল। মনোবিদ আহমেদ হেলাল ছিলেন মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ নিয়ে। অভিভাবকেরা করেছেন বিভিন্নরকম প্রশ্ন। কী বলেছিলেন তাঁরা?

শিশু–কিশোরদের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত গেম আসক্তি উদ্বেগ তৈরি করেছেফাইল ছবি: প্রথম আলো

 মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ

মনোবিদ আহমেদ হেলাল
ছবি: কিশোর আলো

কিআ পাঠক ও অভিভাবকদের সঙ্গে আড্ডা ও দিকনির্দেশনা দেন মনোরোগবিশেষজ্ঞ ডা. আহমেদ হেলাল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিশোর আলোর ‘মনোবন্ধু’ বিভাগে পাঠকের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন। ‘পড়তে চাইলে পড়তে পারি না, ১০ মিনিটের মধ্যে ফোন হাতে নিতে হয়’, ‘ডিভাইসের প্রতি আসক্তি থাকায় আমার সন্তান খিটখিটে স্বভাবের হয়ে যাচ্ছে’, ‘মা–বাবা আমার অর্জনগুলোকে অ্যাপ্রিশিয়েট করেন না’—এমন নানা কথা উঠে আসে অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে।

আহমেদ হেলাল বলেন, ‘আমি ২০১১ সালে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে কাজ শুরু করার পর এক অভিভাবক তাঁর ছেলেকে এনে বলেন, ছেলে পড়তে চায় না। সে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। তখন আমি বলি, আপনার ছেলে পড়তে চায় না, এতে বোঝা যায় সে মানসিকভাবে শতভাগ সুস্থ। ও জানে এখানে ওর আনন্দের কোনো উপকরণ নেই। তাহলে ও কেন পড়বে?’ এরপর তিনি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের‌ বেশ‌ কয়েকটি‌ প্রচলিত ধ্যানধারণা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে বলেন। নানা সমস্যার সমাধানও বাতলে দেন অভিজ্ঞ এই মনোবিজ্ঞানী।

অভিভাবক পর্ব

সব অভিভাবক ইস্পাহানির সৌজন্যে বিশেষ উপহার পান
ছবি: কিশোর আলো

অভিভাবকদের জন্য ছিল নির্ধারিত পর্ব। লেখক সাইদুজ্জামান রওশনের সঞ্চালনায় কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হক অভিভাবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। অভিভাবক পর্ব শুরু হয় দুজন অভিভাবকের সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। কয়েকজন অভিভাবক নিজের ও সন্তানদের কিআ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা জানান। আনিসুল হক অভিভাবকদের আহ্বান জানান, সন্তানদের পড়াশোনার বাইরে নানান সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত করতে হবে। শিল্প, সংগীত, নাটক এবং নানান সামাজিক কাজকর্মে বাচ্চাদের উদ্বুদ্ধ করতে বলেন। শুধু জিপিএ-৫-এর পেছনে ছোটা যাবে না। আমাদের সমাজে মানবিক চিকিৎসক, মানবিক প্রকৌশলী ও মানবিক মানুষ প্রয়োজন। বর্তমান বৈশ্বিক সংকট থেকে উত্তরণে সাহিত্য কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, এ বিষয়ে আনিসুল হক আলোচনা করেন।

একজন অভিভাবকের জিজ্ঞাসা ছিল, একসময় আনিসুল হক ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকী মিলে অনেক ভালো নাটক নির্মাণ করেছেন। এখন আর দেখা যায় না। সে ধরনের নাটক আবার লেখার অনুরোধে আনিসুল হক জানান, তিনি চেষ্টা করবেন। আরেক অভিভাবক বলেন, শিশুরা অনেক বেশি ডিজিটাল ডিভাইস-নির্ভর হয়ে পড়ছে। কিশোর আলোয় বেশি ডিভাইস ব্যবহারের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে লেখা ও মানবিক গল্প ছাপানোর আহ্বান জানান। এসব বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, তিনি এ পরামর্শ খেয়াল রাখবেন।

এ পর্বে সব অভিভাবক ইস্পাহানির সৌজন্যে বিশেষ উপহার পান।