কিআ কার্নিভ্যালে লেখকের সঙ্গে মুখোমুখি আড্ডা

লেখালেখি আড্ডায় শিবব্রত বর্মন, ইসমাইল আরমান ও তানজিনা হোসেনছবি: সাফা জেরিন সুকন্যা

ছড়া-কবিতার আড্ডা নিয়ে আখতার হুসেন ও রোমেন রায়হান

‘কেউ তোমার ছড়া পড়লে যেন মনে করে, আরে এত সহজ! এটা তো আমিও লিখতে পারি! কিন্তু লিখতে গিয়ে আর পারবে না!’ আলোকির গ্রিন হাউসে ছড়াবিষয়ক আড্ডায় এ কথা বলেন বিখ্যাত ছড়াকার রোমেন রায়হান। শিশুসাহিত্যিক ও ছড়াকার আখতার হুসেন ছড়া আর কবিতার তফাত বলেন, ‘কবিতা বিস্তারিত ভাবনার প্রকাশ, কিন্তু ছড়া হয় ছোট আকারের।’

ছড়া-কবিতার আড্ডা নিয়ে আখতার হুসেন ও রোমেন রায়হান
ছবি: সাফা জেরিন সুকন্যা

রোমেন রায়হান বলেন, ‘ছড়া গতিময় এবং সরল হয়। কষ্টের গল্প ছড়ায় হয় না। আমি ছড়া লিখি। ছড়া লেখায় একটু দুষ্টুমি, একটু হাস্যরস থাকে।’ এরপর নিজের লেখা ‘যখন আমার জ্বর বাড়ে’ ছড়াটি আবৃত্তি করে শোনান তিনি। কিশোর আলোর এক পাঠক তাসফিয়া নওশীন এসেছিল মাগুরা থেকে। ছড়াকারদের কাছে প্রশ্ন ছিল, ‘কীভাবে এত ভালো লিখতে পারেন আপনারা?’ উত্তরে ছড়া পড়ার পাশাপাশি ছড়া মুখস্থ করার পরামর্শ পায় সে। আলোচকেরা জানান, ছড়াকে সহজ ও ব্যতিক্রমী করা সাধনার বিষয় এবং ছড়া লেখার উপাদান আমাদের চারপাশেই পাওয়া যায়। এ পর্বে সঞ্চালক ছিলেন সাইদুজ্জামান রওশন।

লেখালেখি আড্ডায় শিবব্রত বর্মন, ইসমাইল আরমান ও তানজিনা হোসেন

লেখকদের সঙ্গে আড্ডায় যোগ দেন জনপ্রিয় লেখক শিবব্রত বর্মন, রহস্য উপন্যাস ‘অয়ন-জিমি’ সিরিজের লেখক ইসমাইল আরমান ও সায়েন্স ফিকশন লেখক তানজিনা হোসেন। লেখালেখির জগতে আসা প্রসঙ্গে ইসমাইল আরমান জানান, অনেক বেশি পড়তে পড়তে নিজের মনের ভাব প্রকাশের আশ্রয় হিসেবে তিনি লেখালেখি শুরু করেন। লেখক হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি পেশাগত জীবনে নৌবাহিনীর একজন অফিসার, বর্তমানে অধ্যক্ষ হিসেবেও কাজ করছেন একটি ক্যাডেট কলেজে। অয়ন-জিমির চরিত্রের জন্ম কি পেশাগত জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, এটা অনেকটা তাঁর নিজের চিন্তা, পাশাপাশি রকিব হাসানের তিন গোয়েন্দার প্রভাবও ছিল।

তানজিনা হোসেনের বিজ্ঞান কল্পকাহিনি লেখা কিশোর আলোয় বহুদিন ধরে প্রকাশিত হচ্ছে। তিনি পেশায় চিকিৎসক। কীভাবে আমাদের আশপাশের জায়গাকে সায়েন্স ফিকশনে নিয়ে আসেন? সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে সায়েন্স ফিকশন পড়ে এসেছি বিদেশি ব্যক্তি বা জায়গার নামে। আমি চিন্তা করলাম, আমাদের দেশের স্থানে কি এমন কোনো গল্প হতে পারে না?’ এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন, তাঁর গল্পের মধ্যে আমাদের চেনাজানা প্রেক্ষাপট নিয়ে আসার চেষ্টা করবেন।

শিবব্রত বর্মন জানান, তিনি কোনো বিশেষ জনরার লেখায় বিশ্বাসী নন। পাঠক যদি তাঁর লেখা কোনো জনরায় ফেলতে চায়, তাহলে সেটাই হবে তার জন্য জনরা। প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে পাঠক হুমড়ি খেয়ে পড়ে লেখকদের অটোগ্রাফ নেওয়ার জন্য।

লেখকদের সঙ্গে আড্ডার পর্বটি সঞ্চালনা করেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের প্রভাষক তাবাসসুম ইসলাম।

কার্নিভ্যালে লেখক দল : আমাতুননূর বুশরা, মৃণাল সাহা, মোহাম্মাদ উল্লাহ জাফরী, সামিহা হায়দার ও আহমাদ মুদ্দাসসের