দুই মাসে ভূমিকম্প হয়েছে ২৪ হাজার, আগ্নেয়গিরি জ্বলে ওঠার আশঙ্কা

আইসল্যান্ডের দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলে রেকানেস উপত্যকায় এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়ছবি: আইসল্যান্ড মনিটর

আইসল্যান্ডে ১৪ ঘণ্টার মধ্যে ৮০০টি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। গত শুক্রবার জরুরি অবস্থা জারি করে দেশটির সরকার। দেশটির দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলে রেকানেস উপত্যকায় এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের অধিকাংশের উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে পাঁচ কিলোমিটার গভীরে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ রকম ভূমিকম্পের পর আরও শক্তিশালী ভূমিকম্প হতে পারে। অগ্ন্যুৎপাতের আশঙ্কাও রয়েছে।

অগ্ন্যুৎপাতের আশঙ্কা রয়েছে আইসল্যান্ডে
ছবি: নিউ ইয়র্কার
আরও পড়ুন

সতর্কতা হিসেবে ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত গ্রিন্ডাভিক গ্রামের চার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পটি হয়েছে গ্রিন্দাভিক এলাকা থেকে ৫ দশমিক ২ কিলোমিটার উত্তরে। ভূমিকম্পে গ্রিন্দাভিক এলাকার উত্তর-দক্ষিণ অভিমুখী ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা পুলিশ বন্ধ করে দিয়েছে।

গত অক্টোবরের শেষ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত প্রায় ২৪ হাজার ভূমিকম্প হয়েছে রেকানেস উপত্যকায়। ২০২১ সালের মার্চ, ২০২২ সালের আগস্ট ও ২০২৩ সালের জুলাই মাসে এই উপত্যকায় তিনটি অগ্ন্যুৎপাত হয়। আইসল্যান্ডে ৩৩টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে। ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আগ্নেয়গিরি রয়েছে এ দেশে।

ভূমিকম্পে মাটি কাঁপছে, রাস্তায় ফাটল ধরেছে
ছবি: আইসল্যান্ড মনিটর

অবশ্য ১৩ নভেম্বর সোমবার ভূমিকম্পের তীব্রতা হ্রাস পেয়েছে। তবে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ঝুঁকি রয়ে গেছে।

আরও পড়ুন

চার হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার কারণ, কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করেছিল, গলিত শিলা পৃথিবীপৃষ্ঠে উঠে আসবে। একটি উপকূলীয় শহর এবং একটি ভূতাপীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রে আঘাত করবে। আইসল্যান্ড ইউরেশিয়ান এবং উত্তর আমেরিকার টেকটোনিক প্লেটের মধ্যে অবস্থিত। ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির ঝুঁকি এখানে অনেক বেশি। কারণ, দুটি টেকটোনিক প্লেট এখানে বিপরীত দিকে ধাক্কা দেয়।

আরও পড়ুন

গ্রিন্দাভিকের বাসিন্দারা গত শনিবার ভোরে বাড়িঘর থেকে নিরাপদে সরে যাওয়ার সময় দেখেছেন ভূমিকম্পে মাটি কাঁপছে, রাস্তায় ফাটল ধরেছে। কিছু ভবনের কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রোববার কর্তৃপক্ষ অল্প কিছু সময়ের জন্য শহরে ফিরে আসার অনুমতি দিয়েছিল কাগজপত্র, ওষুধ বা পোষা প্রাণীর মতো জিনিস সংগ্রহ করার জন্য। তবে গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি। শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে গাড়ি পার্ক করতে বলা হয়েছে।

২০২১ সালের মার্চে এই এলাকায় আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরিত হয়েছিল। ছয় মাস ধরে আগ্নেয়গিরি জ্বলেছিল। এরপর ২০২২ সালের আগস্টে একই এলাকায় তিন সপ্তাহ অগ্ন্যুৎপাত হয়। পরের জুলাই মাসেও আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটে।