‘সবচেয়ে বেশি সুপারকম্পিউটার বাংলাদেশে!’

কিশোর আলোর দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ২২ অক্টোবর রাজধানীর তেজগাঁওয়ের আলোকি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে দিনব্যাপী ‘নগদ কিআ কার্নিভ্যাল ২০২৩’। জনপ্রিয় মডেল, অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের পাশাপাশি ছিলেন বিজ্ঞানকর্মীরা। তাঁদের পদচারণে আয়োজিত হয়েছে জমজমাট এক কার্নিভ্যাল। ছিল বিজ্ঞান, গণিত ও প্রযুক্তি পর্ব। কী হয়েছিল এই পর্বে?

মুনির হাসানের গণিত ও প্রযুক্তি পর্ব

‘তোমাকে এক গ্লাস বিষ এনে দিলে তুমি খাবে?’ প্রথম আলোর ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ও যুব কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মুনির হাসান মূল মঞ্চের দর্শকদের প্রশ্ন ছুড়ে দেন। উপস্থিত দর্শকদের সবাই সেই বিষ খাবে না বলে জানায়। কারণ, বিষ খেলে তো নিশ্চিত মৃত্যু। এবার প্রশ্ন হলো, কেউ বিষ খাচ্ছে না, কিন্তু জানে যে বিষ খেলে মরতে হবে। এটা কীভাবে সম্ভব হচ্ছে?

মুনির হাসান মূল মঞ্চের দর্শকদের প্রশ্ন ছুড়ে দেন, সঠিক উত্তর দিয়ে পুরস্কার জিতে নেয় এক শিক্ষার্থী
ছবি: রিফাত হাসান

মুনির হাসান দর্শকদের উদ্দেশে বলেন, ‘মানুষ বুদ্ধিমান প্রাণী। মানুষ বুদ্ধিমান হতে পেরেছে কারণ, মানুষ নিজেদের মগজের বাইরে জ্ঞান সংরক্ষণ করতে পারে। মানুষ বই লিখতে পারে। কোনো এককালে বিষ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। সেই জ্ঞান আজ আমাদের কাছে আছে বইয়ের বদৌলতে! জ্ঞান সংরক্ষণ করতে পারার ক্ষমতার জন্য আমরা বেঁচে যাচ্ছি।’ তিনি জানান, মানুষ হিসেবে বুদ্ধিমান হওয়ার জন্য দেখতে হবে, শুনতে হবে ও জানতে হবে।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কথা বলেন মুনির হাসান। ৫৫ জন ছেলেমেয়ের মাথা থেকে এসেছে ‘হোয়াটসঅ্যাপ’। যে অ্যাপ প্রায় ২১ বিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছে। তিনি জানান, মানুষের মস্তিষ্ক হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সুপারকম্পিউটার। বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ দেশ, তার মানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী সুপারকম্পিউটার আছে বাংলাদেশে। তরুণদের হাতে উজ্জ্বল এক ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে শেষ হয় মুনির হাসানের গণিত ও প্রযুক্তিবিষয়ক পর্ব।

বিজ্ঞান কুইজ

কার্নিভ্যালে আলোকচিত্র, চলচ্চিত্র, লেখালেখি, ভাষা, গান নিয়ে এত আয়োজন, বিজ্ঞানপ্রেমীদের জন্য কী আছে? তোমার মনে প্রশ্ন এলে উত্তর হলো, বিজ্ঞানচিন্তার স্টল ও বিজ্ঞান কুইজ। কুইজ পরিচালনা করেন বিজ্ঞানলেখক শিবলী বিন সারওয়ার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আবিদুর রহমান।

বিজ্ঞানকর্মী শিবলী বিন সারওয়ার ও আবিদুর রহমান
ছবি: হাবিবুল মোস্তফা

অংশগ্রহণকারীদের কাছে প্রশ্ন ছিল, চাঁদের বছর কয় দিনে হয়? থাইরয়েড গ্ল্যান্ড দেহের কোন অংশে অবস্থিত? জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ কোন আলো ব্যবহার করে ছবি তোলে? চন্দ্রগ্রহণ আর সূর্যগ্রহণের মধ্যে পার্থক্য কী? প্রশ্নগুলো শোনার সঙ্গে সঙ্গে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল উত্তর দেওয়ার জন্য। পুরস্কার ছিল, তাই সবার আগ্রহ বেড়েছে।

চমকপ্রদ ব্যাপার হলো, সবাই এমন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে উত্তর দিচ্ছিল, যেন তারটাই সঠিক! কিন্তু শিবলী বিন সারওয়ার ভুল না ঠিক হলো, তা ব্যাখ্যাসহ বলে দিচ্ছিলেন। সঠিক উত্তরদাতা বেছে নেওয়া হচ্ছিল খুব সাবধানে।

কিআ কার্নিভ্যালের ‘বিজ্ঞান কুইজ’ পর্ব একটু আলাদা। একটা প্রশ্ন-উত্তর শেষ হলেই পরবর্তী প্রশ্নে চলে যাওয়া হয়নি। যে প্রশ্ন করা হলো, সেটা নিয়ে সবাইকে ধারণা দেওয়ার জন্য এক‌ মিনিট করে আলোচনাও ছিল। টান টান উত্তেজনা ও আনন্দের সঙ্গে নতুন কিছু শেখার মাধ্যমে শেষ হয় পর্বটি।

কার্নিভ্যালে লেখক দল : আমাতুননূর বুশরা, মৃণাল সাহা, মোহাম্মাদ উল্লাহ জাফরী, সামিহা হায়দার ও আহমাদ মুদ্দাসসের