ম্যাক্স প্ল্যাঙ্কের জন্ম, সত্যজিৎ রায়ের মৃত্যু

জার্মানির কিয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে অধ্যাপক জোহান জুলিয়াস উইলহেম প্ল্যাঙ্ক ও এমা প্যাটজিগের দম্পতির ঘরে ১৮৫৮ সালের ২৩ এপ্রিল জন্ম নেয় এক শিশু। যার নাম রাখা হয় কার্ল আর্নেস্ট লুডভিগ মার্ক্স প্ল্যাঙ্ক। ১০ বছর বয়েসে ছেলেটি নিজের নাম মার্ক্স (Marx) একটু ছেঁটে ম্যাক্স (Max) লিখতে শুরু করে। কারণ এ বানানটি তাঁর কাছে সহজ মনে হয়েছিল। বাকী জীবন এই নামটিই ব্যবহার করেছেন তিনি: ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক।

স্কুলে থাকতে বিজ্ঞান ছাড়াও প্ল্যাঙ্কের প্রিয় বিষয় ছিল সঙ্গীত ও ভাষাবিদ্যা। ১৬ বছর বয়েসে অন্য সবার মতো মিউনিখের কোন সরাইখানায় আড্ডায় নয়, বরং অপেরা হাউজ আর কনসার্ট হলগুলো আকর্ষণ করত তরুণ প্ল্যাঙ্ককে। কারণ তিনি পিয়ানো, অর্গান ও সেলো বাজাতে বেশ পারদর্শী হয়ে ওঠেন।

এই লক্ষ্য ভেদ করতে জার্মানির অন্যতম নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে ভর্তি হন ১৮৭৪ সালের অক্টোবরে। নতুন কিছু আবিষ্কারের প্রতি তেমন আগ্রহ ছিল না প্ল্যাঙ্কের। তাঁর চাওয়া ছিল, শুধু এ পর্যন্ত যা কিছু আবিষ্কৃত হয়েছে তা ভালোভাবে ও গভীরভাবে বুঝতে। সেই তৃষ্ণা মেটাতে অধিকাংশ সময় পড়ালেখায় মশগুল থাকতেন তিনি। পদার্থবিদ্যার নতুন নতুন বিষয় শিখতে গিয়ে বস্তু সম্পর্কেও নতুন নতুন চিন্তা করতে শিখলেন। এ সময় তিনি পদার্থবিদ্যার তত্ত্বগুলো সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে পারেন, বিশেষ করে তাপগতিবিদ্যা সংক্রান্ত বিষয়গুলো।

মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম তিন বছর গণিত আর গবেষণাগারে পদার্থবিদ্যা হাতকলমে শেখেন। কারণ তখনও তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যার ক্লাস হতো না। মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই জলির তত্ত্বাবধানে জীবনের প্রথম এবং শেষবারের মত পরীক্ষামূলক গবেষণা করেন তিনি। উত্তপ্ত প্লাটিনামের উপস্থিতিতে হাইড্রোজেন গ্যাসের ব্যাপনের প্রকৃতির পরীক্ষা ছিল সেটি। এরপর আর পরীক্ষামূলক কোন পরীক্ষার ধারে কাছেও আসেননি, তাত্ত্বিক গবেষণাতেই জীবন উত্সর্গ করেন তিনি।

তাত্ত্বিক গবেষণা করতে গিয়েই ১৯০০ সালের আকস্মিকভাবে তিনি জন্ম দেন নতুন এক পদার্থবিজ্ঞান। সেটিই কোয়ান্টাম তত্ত্ব। চিরায়ত পদার্থবিজ্ঞান ছেড়ে বিজ্ঞানের নতুন এই রাজ্যের জন্ম দেওয়ার কোন ইচ্ছাই ছিল না তাঁর। কিন্তু কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে এ ছাড়া আর তাঁর আর করার কিছুই ছিল না। ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিপ্লব করার কারণেই তাঁকে বলা হয় অনিচ্ছুক বিপ্লবী।

আরও পড়ুন

অন্যদিকে গোয়েন্দা ফেলুদা, বিজ্ঞানী প্রফেসর শঙ্কু কিংবা গল্পবাজ তাড়িনী খুড়ো বাংলা ভাষার ছোট-বড় সব পাঠকের কাছেই অতিপরিচিত নাম। এই জনপ্রিয় চরিত্রগুলোর স্রষ্টা সত্যজিৎ রায়। কাছের মানুষেরা তাকে ডাকতেন মানিক নামে। তিনি শুধু লেখকই ছিলেন না, একাধারে তিনি ছিলেন চিত্রশিল্পী, চলচ্চিত্রনির্মাতা। এ ছাড়া ছোটগল্পও লিখেছেন তিনি প্রচুর। আর তার বেশির ভাগই শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা। মৌলিক গল্পের পাশাপাশি বেশ কিছু অনুবাদও করেছেন সত্যজিৎ ওরফে মানিকদা। এর মধ্যে  তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিম  বইটি উল্লেখযোগ্য। আজকের এই দিনে ১৯৯২ সালে সত্যজিৎ রায় কলকাতায় মারা যান।

আরও পড়ুন

১৯২০ সালে মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক তুরস্কের নেতা নির্বাচিত হন।

সূত্র: বিজ্ঞানচিন্তা/ অনিচ্ছুক বিপ্লবী ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক