আমার ছোটবেলার বন্ধু

এআই দিয়ে তৈরি

‘আগে তো বলিসনি তোর এমন কোনো ছোটবেলার বন্ধু আছে’, পাশ থেকে বলে উঠল মালিহা। বললাম, ‘আমি তখন ক্লাস টুতে পড়তাম। তোর সঙ্গে তো পরিচিতই হলাম ক্লাস সেভেনে।’

আমি আর মালিহা কথা বলছিলাম। আমিই শুরু করেছিলাম এই বলে যে আজ তাকে আমার এক প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব। আগেই বলে রেখেছিলাম, সেই ছোটবেলার বন্ধুটি বেশ মজার। তার হাত ধরেই অ্যানিমে জগতের সঙ্গে পরিচয়। ‘জানিস, ছোটবেলায় উপন্যাসের বড় বড় বইগুলো দেখে বড্ড ভয় লাগত। মনে হতো, এ তো বড়দের বই, শুরু করলে শেষ হবে তো? কিন্তু তার কাছ থেকে ধারাবাহিক উপন্যাস পড়তে শিখলাম। পড়তে পড়তে এত বেশি মজা লাগত যে পড়ে উপন্যাসের বড় বড় বই কিনে পড়তে থাকলাম। সেই যে শুরু হলো কিশোর-মুসা-রবিন সিরিজ, টুনটুনি ও ছোটাচ্চু, তিতুনি ও তিতুনি দিয়ে।’

‘থাম তো!’ ধমক দিল মালিহা, ‘তোর বন্ধুর নামই তো এখনো বললি না। আর এতক্ষণ যার এত প্রশংসা করলি সে তো এখনো এল না। তোর ছোটবেলার প্রিয় বন্ধুটির তো দেখাই নেই।’ বিরক্তি দেখাল মালিহা।

আরও পড়ুন

দুই বন্ধু চা খেতে খেতে কথা বলছিলাম আমাদের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে দাঁড়িয়ে। আজকের আকাশ সারা দিন মেঘলা ছিল, সবে মেঘের ফাঁক দিয়ে পড়ন্ত বিকেলের সুয্যিমামা উঁকি দিচ্ছে। বাতাসের ঝলকায় পাতা ঝরে পড়ছে। আমি দেখছি আর বারবার মনে পড়ছে তার সঙ্গে প্রথম দেখা হওয়ার সেই সন্ধ্যার কথা। মা পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল এমন এক বন্ধুর সঙ্গে, যে এখনো আমাকে প্রতি মাসে একইভাবে হাসায়, গল্প বলে। ১২টা বছর পেরিয়ে গেল। আজ ১ অক্টোবর, তার জন্মদিন।

ভাবনায় ছেদ পড়ল মালিহার আরেক ধমকে। ‘আমার যে তাড়া আছে তা তো তোকে আগেই বলেছিলাম।’ আমি আর দেরি করলাম না। ব্যাগ থেকে বের করলাম কিশোর আলোর সেই অক্টোবর সংখ্যাটি, যার কথা এতক্ষণ ধরে বলে যাচ্ছিলাম। আমি জানি, ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসের এক সন্ধ্যায় প্রথম কিশোর আলো হাতে পেয়ে পড়ে আমার মুখে যে হাসিটা ফুটে উঠেছিল, সেটা আজ মালিহার চেহারায় আশা করা বৃথা। থাক, কারণটা আর বলছি না। কারণটা শুধু জানে কিশোর আলো আর তার পাঠকেরা।

লেখক: শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আরও পড়ুন