আজ আম্মুর জন্মদিন
প্রিয় আম্মু,
মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মা দিবস আর ১৫ মে তোমার জন্মদিন। তোমার গত জন্মদিনে তোমাকে নিয়ে লেখা গল্প পড়ে তুমি অনেক খুশি হয়েছিলে।এবারের জন্মদিনের উপহার হিসেবে এই চিঠি লিখছি।
ছোটবেলায় তোমাকে তেমন পছন্দ করতাম না। মনে হতো তুমি আমাকে ভালোবাসো না। ভালোবাসলে কি সারাদিন কেউ বকা দেয়! কত রাত তোমার ওপর অভিমান করে কেঁদেছি। ছোট্ট একটা মনে তোমার বিরুদ্ধে ছিল একগাদা অভিযোগ আর একরাশ অভিমান। যত সময় গেছে, আমি বড় হয়েছি। বদলেছে আমার দৃষ্টিভঙ্গি। আস্তে আস্তে বুঝতে পেরেছি তোমাকে।
জীবনে যতবার কেঁদেছি, পৃথিবীর সবাইকে আড়ালে রাখতে পারলেও তুমি ঠিকই টের পেয়ে যেতে। পরিবারের জন্য তোমার সব ত্যাগের জন্য লক্ষ্যবার ধন্যবাদ দিলেও কৃতজ্ঞতায় কমতি থেকে যাবে। আমি এখন বুঝতে পারি কেন শৈশবে আমাকে এত বকতে। আসলে আমার মধ্যে তোমার শৈশবকে দেখতে পেতে তুমি। চেষ্টার কোনো কমতি রাখোনি, তুমি নিজে যা পাওনি আমাকে তা দিয়েছ। আশা করি তোমার এই চেষ্টার প্রতিদান আমি দিতে পারব।
তুমি নিজেকে সাধারণ বলে মনে করো। কিন্তু তুমি একজন অসাধারণ মানুষ। তোমার সঙ্গে প্রতিদিন হাজারও কথা বলি। সবই বলা হয় আবার অনেক কথা বলা হয় না। যদিও তুমি আমার বন্ধু, তবু বলা হয় না। ছোটবেলা থেকে শুরু করলে হাজারও কথা জমে আছে, সব এক চিঠিতে আঁটবে বলে মনে হয় না। তাই আপাতত সাম্প্রতিক একটা ঘটনা বলি। ভর্তি পরীক্ষার সময় প্রতিটা পরীক্ষায় তুমি সকল ব্যস্ততার মাঝেও আমার সঙ্গে ছিলে। আমার জীবনের অন্যতম সেরা সময় ছিল সেটা। জীবনের প্রতিটা পরীক্ষায় পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
অন্তর্মুখী স্বভাবের কারণে তোমাকে কখনো বলতে পারিনি যে আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। আজ চিঠিতে বলে দিলাম। তুমিও নিজেকে ভালোবাসো, নিজের যত্ন নাও। তুমি শুধু আমার সেরা মা নাও, পাশাপাশি একজন সুন্দর ও আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব। তোমাকে দেখে প্রতিনিয়তই আমি নতুন কিছু শিখি। ধন্যবাদ আমার মা ও বন্ধু হওয়ার জন্য। আন্তর্জাতিক মা দিবস ও জন্মদিনের শুভেচ্ছা, আম্মু।
সৈয়দা রাইসা তাহসিন
স্নাতক ১ম বর্ষ, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, ঢাকা