কেমন হলো ইউরোপীয় ফুটবলের দলবদল মৌসুম?

ইউরোপিয়ান ফুটবল মানেই টাকার খেলা। আর সেই খেলার বৃহস্পতি তুঙ্গে ওঠে দলবদলের মৌসুম আসতে না আসতেই। আগের মৌসুমে ভুলত্রুটি সামলে নিতে টাকার বস্তা নিয়ে মাঠে নামে দলগুলো। আবার নিজের সেরা খেলোয়াড়কে কতটা উচ্চমূল্যে বিক্রি করা সম্ভব, সে ভাবনায় থাকে বিক্রয়ে আগ্রহী ক্লাবগুলো।

বিশ্বকাপের মৌসুমে সাধারণত দলগুলোর লক্ষ্য থাকে বিশ্বকাপে পারফর্ম করা খেলোয়াড়দের নিজেদের দলে ভেড়ানোর। কিন্তু বিশ্বকাপের সময় পাঁচ মাস পিছিয়ে যাওয়ায় বদলে গেছে এই মৌসুমের দলবদলের হিসাব-নিকাশ। তাই বলে দরদাম কিন্তু কম হয়নি। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে দলবদল হয়েছে মোট ৪.৪ বিলিয়ন ডলারের। বাংলাদেশি টাকায় ৪১ হাজার ৮১৪ কোটি টাকার দলবদলই হয়েছে শুধু।

দলবদলের এই খেলায় কে হারল আর কে জিতল? এ বছরের দলবদলের মৌসুমে আলোচিত ও সমালোচিত কয়েকটি দলবদল নিয়েই আজকের লেখা।

আর্লিং হলান্ড

বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে ম্যানচেস্টার সিটি—৫১ মিলিয়ন ইউরো

দলবদলের মৌসুম শুরুর আগে থেকেই তোলপাড় চলছিল আর্লিং হল্যান্ডকে নিয়ে। নরওয়েজিয়ান এই স্ট্রাইকারকে গত বছরই কেনার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল বড় দলগুলো। কিন্তু ডর্টমুন্ডের অনুরোধে আরও এক বছর বুন্দেসলিগায় কাটিয়েছেন তিনি। আরও শাণিত করেছেন নিজের দক্ষতা। এই মৌসুমে তাই হল্যান্ডকে কেনার দৌড়ে নাম লিখিয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি, চেলসি, রিয়াল মাদ্রিদের মতো বড় বড় দল। সবাইকে ছাড়িয়ে শৈশবের ভালোবাসা ম্যানচেস্টার সিটিকেই বেছে নিয়েছেন নরওয়েজিয়ান তারকা।

ইংল্যান্ডের ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে আর্লিং হল্যান্ডের পরিচয় তাঁর জন্মের আগে থেকেই। বাবা আলফি হল্যান্ড ছিলেন সিটির একসময়ের তারকা। ইংলিশ লিগে তখনো সিটির তেমন নামডাক হয়নি। বাবার সূত্রেই ম্যানচেস্টারের নীল দলের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়েছে হল্যান্ডের। আগে থেকেই রাজি থাকায় তাঁকে কিনতে খুব একটা কাঠখড় পোড়াতে হয়নি স্কাই ব্লুজদের। দলবদলের বাজার খুলতে না খুলতেই মাত্র ৫১ মিলিয়ন ইউরোতে হল্যান্ডকে দলে ভেড়ায় সিটি।

কয়েক মৌসুম ধরে একজন স্ট্রাইকারের অভাব বেশ ভোগাচ্ছিল সিটি কোচ পেপ গার্দিওলাকে। গত মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে এগিয়ে থেকেও হারতে হয়েছে শুধু ক্লিনিক্যাল ফিনিশার না থাকায়। সেখানে আর্লিং হল্যান্ড আবির্ভূত হয়েছেন ভাগ্যলক্ষ্মী হয়ে। ৬ ম্যাচে ১০ গোল, ১ অ্যাসিস্ট তারই প্রমাণ। স্বভাবতই এবারের দলবদলের মৌসুম জিতে নিয়েছেন আর্লিং হল্যান্ড ও ম্যানচেস্টার সিটি।

গ্যাব্রিয়েল জেসুস

ম্যানচেস্টার সিটি থেকে আর্সেনাল—৪৫ মিলিয়ন ইউরো

গত মৌসুমের মাঝামাঝি অবামেয়াং এবং এবারে আলেকজান্দ্রে ল্যাকাজেটকে হারিয়ে একেবারে কর্পদকশূন্য হয়ে পড়েছিল আর্সেনালের আক্রমণভাগ। সেই শূন্যতা পূরণ করতে ম্যানচেস্টার সিটি থেকে ৪৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে দলে ভেড়ায় ইংলিশ ক্লাব আর্সেনাল।

আর্লিং হল্যান্ডের আগমনে এমনিতেই দলে জায়গা হারাতে চলেছিলেন জেসুস। অন্যদিকে আর্সেনালেরও প্রয়োজন ছিল এমন একজন ক্লিনিক্যাল স্ট্রাইকার, যিনি দলের ভার তুলে নিতে পারেন নিজের কাঁধে। সব মিলিয়ে জেসুস আর আর্সেনালের মেলবন্ধনটা ছিল খাপে খাপ। যার দেখা মিলেছে খেলার মাঠেও। ৬ ম্যাচে ইতিমধ্যে ৩ গোল আর ৩ অ্যাসিস্ট জেসুসের নামের পাশে। গত মৌসুমে খাবি খাওয়া আর্সেনাল এখন জেসুসে ভর করে লিগ টেবিলের শীর্ষে।

রবার্ট লেভানডফস্কি

বায়ার্ন মিউনিখ থেকে বার্সেলোনা—৪২.৫ মিলিয়ন ইউরো

মৌসুমের শুরু থেকেই নিজেদের বাজেট নিয়ে টানাটানিতে ব্যস্ত বার্সেলোনা। তাদের আর্থিক অবস্থা বলার মতো না, বিভিন্ন স্বত্ব বিক্রি করে ক্লাব চালাতে হচ্ছে স্প্যানিশ জায়ান্টদের। তাই বলে ট্রান্সফার মার্কেটে বসে নেই তারা। মার্কেটে যখন সবাই হন্যে হয়ে স্ট্রাইকার খুঁজে বেড়াচ্ছে, তখনই সময়ের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কিকে মাত্র ৪২.৫ মিলিয়নে দলে ভিড়িয়েছে বার্সা। তাঁকে কেনার দৌড়ে চেলসিও ছিল, কিন্তু লেভানডফস্কির। যে কারণে চেলসির বড় প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েও বার্সাতেই ভিড়েছেন তিনি।

যদিও নিজেদের সেরা স্ট্রাইকারকে এত সহজে যেতে দিতে চায়নি বায়ার্ন মিউনিখ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনুরোধের ঢেঁকি গিলে ৪২.৫ মিলিয়ন ইউরোতে বার্সার কাছে বিক্রি করতে সম্মত হয় জার্মান ক্লাবটি। বার্সা সমর্থকদের আশার প্রতীক হয়ে ওঠা লেভানডফস্কি এখন পর্যন্ত গোল করেছেন ৫টি। বেনজেমাকে সরিয়ে লা লিগার সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন তিনি।

সাদিও মানে

লিভারপুল থেকে বায়ার্ন মিউনিখ—৪১ মিলিয়ন ইউরো

দলবদলের মৌসুমে কিছু দলবদল থাকে, যা একদমই চুপিসারে সম্পন্ন হয়ে যায়। কাকপক্ষী টের পাওয়ার আগে সেরা খেলোয়াড়কে দলে ভিড়িয়ে ফেলে দলগুলো। এই মৌসুমে তেমনই একটা দলবদল ছিল সাদিও মানের দলবদল। অনেক দিন ধরেই লিভারপুলের আক্রমণের মধ্যমণি ছিলেন মানে। গত মৌসুমে সে জায়গা দখল করে নিয়েছিলেন ডিয়েগো জোটা।

অন্যদিকে বায়ার্ন মিউনিখ বার্সেলোনার কাছে রবার্ট লেফানডফস্কিকে হারিয়ে হন্যে হয়ে খুঁজছিল একজন স্ট্রাইকার। সাদিও মানে ও বায়ার্ন মিউনিখের জুটিটা ছিল একেবারে খাপে খাপ। যে কারণে খুব একটা ঝামেলাও পোহাতে হয়নি দুই পক্ষকে। ৪১ মিলিয়ন ইউরোর বদলে বায়ার্নে ভিড়েছেন সাদিও মানে। বায়ার্নেও ধরে রেখেছেন পুরোনো ফর্ম। ৫ ম্যাচে ৩ গোল করে বাভারিয়ানদের ভরসার পাত্র হয়ে উঠেছেন তিনি।

ডারউইন নুনেজ

বেনফিকা থেকে লিভারপুল—৮৫ মিলিয়ন ইউরো

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের প্রতিটি দলই তাদের কেনাকাটার তালিকায় সবার ওপরে রেখেছিল একজন স্ট্রাইকারের নাম। নিজেদের দল ভারী করার জন্য প্রত্যেকেরই নজর ছিল বাজারের সেরা অ্যাটাকারদের দিকে। সেখান থেকে লিভারপুল বেছে নিয়েছিল উরুগুয়ের ২৩ বছর বয়সী স্ট্রাইকার ডারউইন নুনেজকে।

গত মৌসুমে বেনফিকার জার্সিতে অসাধারণ পারফরম্যান্স করা নুনেজের দিকে নজর ছিল অনেকেরই। বেনফিকাও সেই সুযোগটিই নিয়েছে। তাকে কেনার জন্য রীতিমতো লড়াই হয়েছে চেলসি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও লিভারপুলের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি হেসেছে অল রেডরা। তাকে কিনতে লিভারপুলের খরচ হয়েছে মোট ৬৫ মিলিয়ন ইউরো। বাকিটা বোনাস।

যদিও যতটা আশা নিয়ে তাকে দলে ভিড়িয়েছিলেন ক্লপ, তার ছিটেফোঁটাও এখন পর্যন্ত দেখাতে পারেননি তিনি। তাঁকে আনা হয়েছিল সাদিও মানের রেখে যাওয়া শূন্যস্থান পূরণের জন্য, কিন্তু সেটি তো পূরণ করতে পারেনইনি, উল্টো প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় ম্যাচেই লাল কার্ড দেখে নিজের দলের ওপর ডেকে এনেছে বিপদ। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত তালিকার একমাত্র ফ্লপ সাইনিং তিনি।

কাসেমিরো

রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড—৮০ মিলিয়ন ইউরো

এবারের মৌসুমে বড় বিস্ময় হয়ে এসেছে কাসেমিরোর দলবদল। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী তারকা, ইতিহাসের অন্যতম সেরা মিডফিল্ড ট্রিওর অংশ যে কাসেমিরো, তিনি কিনা সব ছেড়েছুড়ে যোগ দিতে চলেছেন এমন একটা দলে, যারা এবার চ্যাম্পিয়নস লিগেই নেই! তার ওপর দলটা নিজেদের পায়ের তলায় মাটি খুঁজে পাচ্ছে না ছয় বছর ধরে ধরে।

প্রথম যেদিন গুঞ্জন উঠেছিল রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের যোগ দিতে যাচ্ছেন কাসেমিরো; রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থক তো বটেই, সতীর্থরাও হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন সে খবর। কিন্তু এক সপ্তাহের মধ্যেই সেই উড়োখবর পরিণত হলো সত্যিতে। বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডারকে ভেড়াতে মোট ৮০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করতে হয়েছে রেড ডেভিলদের। যদিও এখনো নতুন কোচ এরিক টেন হাগের দলে থিতু হতে পারেননি তিনি। কিন্তু সময়ের সেরা মিডফিল্ডারকে ৮০ মিলিয়নে পাওয়া যেমন ইউনাইটেডের ছন্নছাড়া মাঝমাঠে ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করবে, তেমনই দলবদলের মৌসুমে ইউনাইটেডকে রেখেছে জয়ীর কাতারে।

অরেলিয়াঁ চুয়ামেনি

মোনাকো থেকে রিয়াল মাদ্রিদ—৮৫ মিলিয়ন ইউরো

ট্রান্সফার উইন্ডোর একদম শুরুতে মোনাকো থেকে যখন এক অখ্যাত ফুটবলারকে ৮৫ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে দলে ভিড়িয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ, তখন চোখ কুঁচকে উঠেছিল অনেকের। অস্বাভাবিক কিছু নয়, গত বছরই তাঁর ফ্রেঞ্চ–সতীর্থ কামাভিঙ্গাকে মাত্র ৩০ মিলিয়নে ভিড়িয়েছিল রিয়াল। সেখানে ৮৫ মিলিয়ন আকাশচুম্বী মনে হওয়াই স্বাভাবিক।

কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদ খরচ করেছিল ভেবেচিন্তেই। কয়েক মৌসুম ধরেই একজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের প্রয়োজন ছিল রিয়াল মাদ্রিদের মাঝমাঠে। এক কাসেমিরো ইনজুরিতে পড়লেই বেরিয়ে আসত রিয়াল মিডফিল্ডের কঙ্কালসার অবস্থা। যে কারণে ২২ বছর বয়সী মিডফিল্ডারকে একটু উচ্চমূল্যে হলেও দলে ভিড়িয়েছে তারা। যদিও তাকে পেতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়েছে চেলসি, লিভারপুল, পিএসজির মতো দলের বিপক্ষে। কিন্তু খেলোয়াড়ের সম্মতি থাকার চুয়ামেনিকে কেনার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে ছিল রিয়াল।

নিজের দামের যথাযথ মর্যাদাও দিচ্ছেন প্রতি ম্যাচে। কাসেমিরো চলে যাওয়ার পর রিয়ালের মাঝমাঠ সামলানোর সম্পূর্ণ দায়িত্ব পড়েছে তাঁর কাঁধে। এখন পর্যন্ত সে দায়িত্ব দুর্দান্তভাবে সামলে চলেছেন অরেলিয়াঁ চুয়ামেনি। নিজের প্রাইসট্যাগের যথাযথ মূল্যায়ন করে চলেছেন প্রতি ম্যাচেই।

অ্যান্থনি

আয়াক্স থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড—৯৫ মিলিয়ন ইউরো

এবারের ট্রান্সফার উইন্ডোর সবচেয়ে আলোচিত দলবদল ছিল অ্যান্থনির ম্যানচেস্টার ইউনাইটেটে যাওয়া। এরিক টেন হাগকে কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পরদিন থেকেই গুঞ্জনের শুরু। সেই গুঞ্জনের পালে হাওয়া লাগিয়েছিলেন অ্যান্থনি নিজেও। রেড ডেভিলদের দলে ভিড়তে আয়াক্সের ট্রেনিং সেশনে পর্যন্ত যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন অ্যান্থনি।

সেবাস্তিয়ান হলার, লিসান্দ্রো মার্টিনেজ, রায়ান গ্রাভেনবার্চের মতো খেলোয়াড়কে হারিয়ে আয়াক্স চাইছিল নিজেদের সেরা খেলোয়াড়কে দলে ধরে রাখতে। কিন্তু অ্যান্থনি শুরু থেকেই ছিলেন নারাজ। যে কারণে রেড ডেভিলদের কাছ থেকে প্রতিটি পয়সা উশুল করে নিয়েছে আয়াক্স। দলবদলের মৌসুমের একদম শেষ দিনে এসে মোট ৯৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে অ্যান্থনিকে দলে ভেড়ায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

গোলমুখে রোনালদোর পাশাপাশি আরেকজন স্ট্রাইকার দরকার ছিল রেড ডেভিলদের, সে শূন্যতা পূরণের জন্য তাঁকে উচ্চমূল্যে দলে ভিড়িয়েছে ইউনাইটেড। ইউনাইটেডের বিশাল খরচ যে বৃথা যায়নি, তার প্রমাণ মিলেছে প্রথম ম্যাচেই। ইউনাইটেডের জার্সিতে ৩৫ মিনিটের মাথায় পেয়েছেন প্রথম গোলের দেখা। দলকে এনে দিয়েছেন ৩-১ গোলের বিশাল জয়। বলা বাহুল্য ইউনাইটেডের এই বিশাল খরচ ব্যর্থ হতে যাচ্ছে না সহজে।

ম্যাথিয়াস ডি লিট

জুভেন্টাস থেকে বায়ার্ন মিউনিখ—৬৫ মিলিয়ন ইউরো

বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডারদের তালিকা করলে ওপরের দিকেই থাকবে ম্যাথিয়াস ডি লিটের নাম। ২০১৯ চ্যাম্পিয়নস লিগে আয়াক্স রূপকথার অন্যতম বড় অংশ ছিলেন ডি লিট। কিন্তু জুভেন্টাসে গিয়ে নিজের নামের সুবিচার করলেও পাদপ্রদীপে আসতে পারছিলেন না বিভিন্ন কারণে। তাই বলে বায়ার্ন কিন্তু হীরা চিনতে ভুল করেননি।

জুভেন্টাস ছাড়ার ইচ্ছে প্রকাশ করামাত্র তাঁকে কেনার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল চেলসি ও বায়ার্ন। শেষ পর্যন্ত বায়ার্নেই যোগ দেওয়ার মনস্থির করেছেন তিনি। ৬৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে এবারের ট্রান্সফার উইন্ডোর সেরা ডিফেন্ডারকে দলে ভিড়িয়েছে বাভারিয়ানরা।

ওয়েসলি ফোফানা

লেস্টার সিটি থেকে চেলসি—৭৫ মিলিয়ন ইউরো

ট্রান্সফার উইন্ডোর একেবারে শুরু থেকেই দোটানায় ছিল চেলসি। একদম শুরুতেই নিজেদের সেরা দুই ডিফেন্ডারকে হারাতে হয়েছে বার্সা–রিয়ালের কাছে। এমনকি তাদের বাকি ডিফেন্ডাররাও বুড়িয়ে যাচ্ছেন। যে কারণে উইন্ডোর শেষ দিকে এসে তড়িঘড়ি করে আরেকটা ডিফেন্ডার কেনা জরুরি হয়ে পড়েছিল। আর সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে লেস্টার সিটি।

বেশ কিছুদিন ধরেই আর্থিক দুরবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল লেস্টার সিটি। যে কারণে নিজেদের সেরা ডিফেন্ডারের জন্য অফার পেয়ে আর দেরি করেনি। ২১ বছর বয়সী ফোফানার জন্য চেলসির কাছ থেকে পাওয়া ৭৫ মিলিয়ন ইউরোর লোভনীয় অফার না করার সাধ্য ছিল না লেস্টারের।

ফোফানাকে নিজেদের ডিফেন্সের মধ্যমণি করার জন্যই কিনেছে চেলসি। ছোটবেলা থেকে লন্ডন ব্লুজকে সমর্থক ফোফানাকে কেনার জন্য খুব একটা কাঠখড় পোড়াতে হয়নি তাদের।