মরুর বুকে স্টেডিয়াম

২০২২ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে কাতারে। আটটি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ৬৪টি ম্যাচ। কোন স্টেডিয়ামে কতটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে, স্টেডিয়ামগুলোর কোনটির ধারণক্ষমতা কত বা স্টেডিয়ামগুলোর নকশার পেছনের কাহিনিই–বা কী? চলো, একনজরে দেখে নেওয়া যাক।

আল বায়ত স্টেডিয়াম

ধারণক্ষমতা: ৬০ হাজার

কাতার এবং ইকুয়েডরের মধ্যকার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচটি হয় আল বায়ত স্টেডিয়ামে। ২০২১ সালের নভেম্বরে স্টেডিয়ামটি আনুষ্ঠানিকভাবে খোলা হয়েছিল। স্টেডিয়ামে আছে একটি বহনযোগ্য ছাদ, যা ২০ মিনিটের মধ্যে খোলা বা বন্ধও করা যায়। এই স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের খেলাসহ দ্বিতীয় রাউন্ড, কোয়ার্টার ফাইনাল এবং একটি সেমিফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।

আল জানুব স্টেডিয়াম

ধারণক্ষমতা: ৪০ হাজার

আল ওয়াকরাহতে অবস্থিত আল জানুব স্টেডিয়ামটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় ২০১৯ সালে। এই স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের পাঁচটি ম্যাচসহ দ্বিতীয় রাউন্ডের একটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। স্টেডিয়ামে তিনটি শেল দিয়ে তৈরি একটি প্রতিসম ছাদ আছে, যা অন্যান্য স্টেডিয়াম থেকে এটিকে আলাদা করে। কাতারের ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরার নৌকার সঙ্গে মিল রেখে এই স্টেডিয়ামের নকশা করা হয়েছে।

এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম

ধারণক্ষমতা: ৪৫ হাজার ৩৫০

এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের পাঁচটি ম্যাচসহ দ্বিতীয় রাউন্ডের একটি ম্যাচ ও কোয়ার্টার ফাইনালের একটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। স্টেডিয়ামটিকে একটি হীরার আকৃতি দেওয়া হয়েছে যা ‘মরুভূমির হীরা’ নামে পরিচিত। ২০২০ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের সময় কাতারের যে দুটি স্টেডিয়াম ব্যবহার করা হয়েছে, এটি তার মধ্যে একটি।

আল তুমামা স্টেডিয়াম

ধারণক্ষমতা: ৪০ হাজার

দোহার দক্ষিণে অবস্থিত আল থুমামা স্টেডিয়াম। গ্রুপ পর্বের পাঁচটি ম্যাচসহ দ্বিতীয় রাউন্ডের একটি ম্যাচ ও কোয়ার্টার ফাইনালের একটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এই স্টেডিয়ামে। মধ্যপ্রাচ্যের পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী গাহফিয়ার টুপির আদলে স্টেডিয়ামটির নকশা করা হয়েছে।

আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়াম

ধারণক্ষমতা: ৪৪ হাজার ৭০০

স্টেডিয়ামটি আল রাইয়ানে অবস্থিত। এখানে গ্রুপ পর্বের পাঁচটি ম্যাচসহ দ্বিতীয় রাউন্ডের একটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ২০২০ সালের ১৮ ডিসেম্বর আল-সাদ ও আল-আরাবির মধ্যকার আমির কাপের ফাইনাল ম্যাচের মাধ্যমে স্টেডিয়ামটি আনুষ্ঠানিকভাবে খোলা হয়। মরুভূমির বালিয়াড়ি (বালুর স্তূপ) থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই স্টেডিয়ামের নকশা করা হয়েছে। বিশ্বকাপের শেষে স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা ২১ হাজারে নামিয়ে আনা হবে।

খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম

ধারণক্ষমতা: ৪৫ হাজার ৪১৬

আনুষ্ঠানিকভাবে স্টেডিয়ামটি ১৯৭৬ সালে উদ্বোধন করা হয়েছিল। এটিই কাতারের সবচেয়ে পুরোনো স্টেডিয়াম। যদিও এরপর স্টেডিয়ামটির বেশ কয়েকবার সংস্কার করা হয়েছে। ২০১৪ সালে আবার স্টেডিয়ামের স্ট্যান্ড, বসার জন্য অতিরিক্ত জায়গা ও আতিথেয়তার সব ধরনের সুযোগ–সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া স্টেডিয়ামের ওপর একটি বিশাল ছাদ তৈরি করা হয়েছে, যা স্টেডিয়ামের ৭০ শতাংশ জায়গা ঢেকে রাখতে পারে। এই স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের পাঁচটি ম্যাচসহ দ্বিতীয় রাউন্ড এবং তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।

স্টেডিয়াম ৯৭৪

ধারণক্ষমতা: ৪০ হাজার

বিশ্বকাপের জন্য স্টেডিয়ামটি নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ গ্রুপ পর্বের পাঁচটি ম্যাচসহ দ্বিতীয় রাউন্ডের একটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বকাপের পর স্টেডিয়ামটি সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলা হবে এবং ব্যবহৃত হবে অন্য দেশের স্টেডিয়ামের উপকরণ হিসেবে। দোহার পূর্ব দিকে উপসাগরের তীরে এই স্টেডিয়াম অবস্থিত। কাতারের আন্তর্জাতিক ডায়াল কোড নম্বর ৯৭৪। এ জন্য স্টেডিয়ামটি ৯৭৪টি কনটেইনার দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

লুসাইল স্টেডিয়াম

ধারণক্ষমতা: ৮০ হাজার

বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এই স্টেডিয়ামে। এ ছাড়া গ্রুপ পর্বের ছয়টি ম্যাচসহ প্রতিটি নকআউট পর্বের একটি ম্যাচ লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। আরবদের সংস্কৃতি এবং শিল্পকলাকে প্রতিফলিত করতে বাটি আকৃতির এই স্টেডিয়াম নকশা করা হয়েছে।