রত্নভান্ডারের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশের ফুটবল
ব্যাপারটা অনেকের কাছেই অদেখা, অচেনা। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ দেখার জন্য টিকিট নিয়ে হাহাকার, টিকিটের জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের মূল ফটকের সামনে সমর্থকদের অবস্থান—এমন দৃশ্যের সঙ্গে তেমন পরিচিত নন এ দেশের খেলাপ্রেমীরা। হ্যাঁ, একটা সময় ফুটবল লিগে আবাহনী-মোহামেডানের ম্যাচে কানায়-কানায় পূর্ণ থাকত ঢাকা স্টেডিয়ামের গ্যালারি। ভেতরে ৪০ হাজার দর্শক, বাইরে স্টেডিয়ামে ঢোকার অপেক্ষায় হাজার হাজার মানুষ। এমন দৃশ্য অনেক দিন ধরেই অতীত দিনের স্মৃতি। ওই সব ঘটনার সাক্ষী একটি-দুটি প্রজন্মের স্মৃতিচারণা কিংবা পুরোনো পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি ছাড়া দেশের ফুটবলের এমন দৃশ্যপট রীতিমতো কল্পনাতীতই ছিল বহুদিন ধরে। কিন্তু হঠাৎ করেই যেন সবকিছু বদলে যেতে শুরু করেছে। ‘নিম্নমানের’ বাংলাদেশের ফুটবলই যেন আবার খেলাপ্রেমীদের মনোযোগের কেন্দ্রে। ক্রিকেট নিয়ে মেতে থাকা একটি দেশের খেলাপ্রেমীদের মনোজগতে এমন পরিবর্তনের কারণটা আর কিছুই নয়—বিশ্বমানের তারকাদের আবির্ভাব।
এক হামজাতেই বদলে গেছে সবকিছু। কিন্তু বাংলাদেশের ফুটবল তো শুধু হামজাতে আটকে নেই। জাতীয় দলকে শক্তিশালী করতে হামজার সঙ্গী হয়েছেন কানাডা জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে ২ ম্যাচ খেলা শমিত সোম। হামজাকে নিয়ে মুগ্ধতার রেষ কাটতে না কাটতেই এপ্রিল মাসে শমিত সোমকে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে খেলার ব্যাপারে রাজি করিয়ে ফেলে বাফুফে।
গত মার্চে হামজা চৌধুরীর অভিষেক হয়ে গেছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের জার্সিতে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা, লেস্টার সিটির হয়ে এফএ কাপ জেতা একজন ফুটবলার যখন বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সিতে খেলতে নামেন, তখন স্বাভাবিকভাবেই মানুষের আগ্রহ তৈরি হয়। দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ পাঁচটি ফুটবল লিগের একটি হলো ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একজন ফুটবলার যখন সেই লিগে খেলেন, তিনি যেকোনো বিচারেই সেই লিগের মান ধারণ করেন। তাঁর মতো ফুটবলার যখন বাংলাদেশ জাতীয় দলের একজন হয়ে যান, তখন গোটা দলের শক্তিমত্তা বেড়ে যায়। কতটা বাড়ে, সেই নমুনা মার্চেই বাংলাদেশের মানুষ দেখেছে। এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে নিজেদের গ্রুপের প্রথম ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে তো শিলংয়ের মাটিতে প্রায় হারিয়েই দিয়েছিল বাংলাদেশ। একজন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ খেলা হামজার উপস্থিতি ভারতীয় দলকে কেমন নার্ভাস করে দিয়েছিল, সেটাও দেখেছে সবাই। প্রথমার্ধে চার-চারটি নিশ্চিত গোলের সুযোগের সদ্ব্যবহার যদি বাংলাদেশ সে ম্যাচে করতে পারত, তাহলেই তো বাজিমাত। এক হামজার উপস্থিতি যেভাবে বাংলাদেশ ফুটবল দলের শক্তি বাড়িয়ে দিয়েছে, ঠিক সেভাবেই হামজার মতো ফুটবলার বাংলাদেশের ফুটবলের দৃশ্যপটও এক লহমাতেই পাল্টে দিয়েছেন। এই হামজা তর্কযোগ্যভাবেই বাংলাদেশের খেলাধুলার ইতিহাসের সবচেয়ে হাইপ্রোফাইল ক্রীড়াবিদ। খেলাধুলায় ‘তারকা উপস্থিতি’ যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা এ মুহূর্তে বাংলাদেশের ফুটবল খুব ভালোভাবেই উপভোগ করছে। এই হামজা যখন দেশের মাটিতে, দেশের জার্সি পরে মাঠে নামবেন, তখন সে মুহূর্তের সাক্ষী হতে চাইবেন সবাই।
১০ জুন ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে নিজেদের গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এ ম্যাচের টিকিট অনলাইনে বিক্রি করেছে বাফুফে। মাত্র ২২ হাজার দর্শকের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ঢাকা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসার অধিকার নিশ্চিত করতে অনলাইনে নাকি টিকিটপ্রার্থীর সংখ্যা আড়াই লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইটে সাইবার আক্রমণ, নিমেষেই সব টিকিট ‘সোল্ড আউট’ হয়ে যাওয়া—এসবই নতুন ঘটনা বাংলাদেশের ফুটবলে। শুধু তা-ই নয়, নতুন প্রজন্মের কাছেও পুরো ব্যাপারটাই অকল্পনীয় ও কিছুটা অবিশ্বাস্যও।
টিকিট নিয়ে হাহাকারের যে ব্যাপারটা, সেটি এত দিন দেখা গেছে দেশের ক্রিকেটে। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মাহমুদউল্লাহ কিংবা মুশফিকুর রহিমদের বাংলাদেশের খেলা মাঠে বসে দেখার জন্য মুখিয়ে থেকেছেন খেলাপ্রেমীরা। দেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন ক্রিকেট সিরিজের আগে ‘একটা টিকিট পাওয়া যাবে?’ এমন প্রশ্ন শোনা গেছে। ক্রিকেট বোর্ড–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এসব সিরিজ শুরু হলেই অতি পরিচিতজনদেরও না চেনার ভান করতেন। তাঁদের অবশ্য দোষ দেওয়া যেত না। ‘একটা টিকিট’ মানুষের কাছে এতটাই আরাধ্য তখন। টিকিটের চাহিদার চাপ এতটাই থাকত যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতেন, ‘টিকিট চেয়ে লজ্জা দেবেন না।’
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের টিকিট এখন তেমনই আরাধ্য বস্তু। বাফুফে কর্মকর্তাদের কাছেও এমন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ অপরিচিত। বাফুফে ভবনের সামনে ফুটবল সমর্থকরা অবস্থান ধর্মঘট করছেন, প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এই ম্যাচের টিকিট না পেয়ে। বাফুফে কর্তাদের গালিগালাজ করতেও ছাড়ছেন না। সন্দেহের তির কর্তাদের দিকে—তারা নিশ্চয়ই টিকিট নিয়ে কালোবাজারি শুরু করেছে।
এক হামজাতেই বদলে গেছে সবকিছু। কিন্তু বাংলাদেশের ফুটবল তো শুধু হামজাতে আটকে নেই। জাতীয় দলকে শক্তিশালী করতে হামজার সঙ্গী হয়েছেন কানাডা জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে ২ ম্যাচ খেলা শমিত সোম। হামজাকে নিয়ে মুগ্ধতার রেষ কাটতে না কাটতেই এপ্রিল মাসে শমিত সোমকে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে খেলার ব্যাপারে রাজি করিয়ে ফেলে বাফুফে। দেশের ফুটবলপ্রেমীদের কাছে শমিত অবশ্য নতুন কেউ নন। কানাডা প্রিমিয়ার লিগে ক্যাভালরি এফসিতে খেলা এই মিডফিল্ডারকে নিয়ে তাঁরা কয়েক বছর ধরেই স্বপ্ন দেখছিলেন। অনেকটাই হামজাকে নিয়ে যেভাবে সবাই স্বপ্ন দেখেছিল, ঠিক সেভাবেই। হামজার পর শমিতের অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের মধ্যমাঠকে কতটা শক্তিশালী করবে, এটা ভেবেই রোমাঞ্চিত সবাই। আর সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ শমিতের অভিষেক মঞ্চ হতে যাচ্ছে—এমন কিছুর সাক্ষী হওয়ার লোভ কেই–বা সামলাতে পারেন। টিকিটের চাহিদা তো আকাশ স্পর্শ করবেই।
‘প্রবাসী ফুটবলার’ কথাটা একটু কানে লাগে। হামজা কিংবা শমিতকে আমরা বরং বলি বাংলাদেশি রক্ত শরীরে বয়ে নিয়ে বেড়ানো দুই ফুটবলার। হামজার মা–বাবা দুজনই বাংলাদেশি, তাঁর জন্মটা ইংল্যান্ডে। বিলাতের হাওয়া, সুযোগ-সুবিধায় বেড়ে ওঠা, ফুটবল শেখাটাও সেখানে, শমিতের ব্যাপারও একই। বাংলাদেশি রক্ত শরীরে বয়ে নিয়ে চলা এই দুই ফুটবলারের মেধাটাই কাজে লাগিয়ে ফুটবলের মরা গাঙে জোয়ার নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
২০১৩ সালে জামাল ভূঁইয়াকে দিয়ে শুরুটা হয়েছিল। জাতীয় দলকে শক্তিশালী করার জন্য সে সময়ের নেদারল্যান্ডসের কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ আইডিয়াটা দিয়েছিলেন বাফুফেকে। বিদেশে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার খুঁজে বের করে, তাঁদের জাতীয় ফুটবল দলে খেলার ব্যবস্থা করা। ক্রুইফ জানতেন ইউরোপ বা আমেরিকার উন্নত সুযোগ-সুবিধার মধ্যে বেড়ে ওঠা একজন বাংলাদেশি ফুটবলারের ফুটবলপাঠ যেকোনো বিচারেই উন্নত হতে বাধ্য। ডেনমার্ক থেকে এসে জামাল ভূঁইয়া যোগ দিয়েছিলেন জাতীয় দলে। এর পরের সময়টা ইতিহাস। ডেনমার্ক থেকে এসে সেই জামালই হয়ে গেছেন দেশের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা ফুটবলার। দেশের জার্সিতে ৮৪টি ম্যাচ খেলেছেন জামাল। বাংলাদেশের ফুটবলে অনেক কিংবদন্তি ফুটবল তারকারও যেটি স্বপ্ন। হয়ে উঠেছেন দেশের ফুটবলের পোস্টার বয়। এরপর ২০১৯ সালে জাতীয় দলে ফিনল্যান্ড থেকে এসে যোগ দেন তারিক রায়হান কাজী। ফিনল্যান্ডে বেড়ে ওঠা তারিক খেলেছেন ফিনিশ ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। তিনি এরই মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র।
জামাল কিংবা তারিক কাজী যে প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন, সেটিই পূর্ণতা পেয়েছে হামজা চৌধুরীর বাংলাদেশের হয়ে খেলার মধ্য দিয়ে। শমিত সোমও সঙ্গী হয়েছেন তাঁর। মাঝখানে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আরও একজন ফুটবলার জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন—সৈয়দ কাজেম শাহ। খুব ছোটবেলায় মা–বাবার সঙ্গে কানাডায় পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই ফুটবলার হয়ে ওঠা। এই কাজেমের আবার দারুণ একটা পরিচয়ও আছে। তাঁর বাবা সৈয়দ হালিম শাহ সাবেক ক্রিকেটার। দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলা হালিম শাহ ঘরোয়া লিগে দারুণ পারফরমার হলেও কেন যেন কখনোই জাতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ পাননি। অথচ তাঁর সতীর্থ হাবিবুল বাশার, খালেদ মাসুদরা টেস্ট খেলেছেন, দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ছেলে কাজেম শাহ জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়ে বাবার না পাওয়ার কষ্টটা পুষিয়ে দিয়েছেন।
প্রক্রিয়াটা চলছেই। জামাল, তারিক কাজী, কাজেম শাহর পর হামজা আর শমিত সোম। গত মার্চে ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচের আগে ‘চমক’ হয়ে এসেছিলেন আরেকজন। তিনি ফাহমিদুল ইসলাম। হামজা, শমিতদের তো দেশের ফুটবলপ্রেমীরা চিনতেন, কিন্তু কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ভারতের বিপক্ষে প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাকার আগে ফাহমিদুলকে কেউই সেভাবে চিনতেন না। ইতালির সিরি ‘ডি’র ক্লাব অ্যালবিওর লেফট উইঙ্গার ফাহমিদুল যে অসম্ভব প্রতিভাবান ফুটবলার, সেটি ফুটবলপ্রেমীরা বুঝেছেন তাঁর খেলার ভিডিও বের করে। কোচও সেসব দেখেই ডেকেছিলেন ফাহমিদুলকে। তবে ভারতের বিপক্ষে চূড়ান্ত দলে ফাহমিদুলকে রাখেননি কোচ। সে নিয়ে অনেক জলঘোলা হয়। ফুটবলপ্রেমীরা বিক্ষোভ পর্যন্ত করেন। অভিষেকের আগেই কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে মানুষের এমন আগ্রহ বাংলাদেশের ফুটবলে নজিরবিহীনই। মার্চে খেলতে পারেননি। তবে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ১০ জুনের ম্যাচের জন্য কাবরেরা এবার চূড়ান্ত স্কোয়াডেই রেখেছেন ফাহমিদুলকে। হামজা, শমিতদের সঙ্গে এই ফাহমিদুলও ফুটবলপ্রেমীদের আগ্রহের কেন্দ্রে। ১৮ বছর বয়সী এই ফুটবলারকে ধরা হচ্ছে বাংলাদেশের ফুটবলে নিকট ভবিষ্যতের বড় তারকা হিসেবেই।
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে খেলা না হলেও বাংলাদেশ জাতীয় দলে আরেক ‘বাংলাদেশি রক্তের’ প্রবেশ ঘটতে যাচ্ছে খুব শিগগির। তিনি কিউবা মিচেল। ইংলিশ ফুটবলের তৃতীয় স্তরের দল সান্ডারল্যান্ড অনূর্ধ্ব-২১–এর (ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব সান্ডারল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দল) ফরোয়ার্ড তিনি। তাঁর খেলার ভিডিও দেখে যা মনে হয়েছে, এই কিউবা রীতিমতো আগুনের গোলাই। জ্যামাইকান বাবা আর বাংলাদেশি মায়ের ছেলে কিউবাকে বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলানোর প্রক্রিয়া অনেক দূরই এগিয়েছে। তিনি পাসপোর্ট হাতে পেয়েছেন, পেয়েছেন ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের ছাড়পত্রও। ফিফার অনুমতি পেলেই তিনি বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারবেন। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে না হলেও কিউবা যে শিগগিরই আসছেন বাংলাদেশের ফুটবলকে আলোয় ভরিয়ে দিতে, সেটা বলে দেওয়াই যায়।
হামজা, শমিত, ফাহমিদুল কিংবা কিউবা মিচেলরা আসলেই নতুন ইতিহাস তৈরি করবেন বাংলাদেশের ফুটবলে। তাঁদের উপস্থিতি শুধু জাতীয় দলের ম্যাচ নিয়েই উন্মাদনা নয়, আমূলে পাল্টে দেবে বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে দর্শক আগ্রহের জায়গাও। এই যে হামজা বাংলাদেশ দলে খেলছেন, তিনিই হয়ে গেছেন বাংলাদেশের ফুটবলের বাণিজ্য-লক্ষ্মী। হামজা আসার পর ফুটবলে এগিয়ে আসছেন পৃষ্ঠপোষকেরা। বর্তমান দুনিয়ায় ফুটবলের উন্নতিতে টাকাটা যে কত প্রয়োজন, সেটা সবাই জানেন। হামজা, শমিত, ফাহমিদুল, কিউবারা সেই কাজটাই করে দিচ্ছেন। দেশের ফুটবলে দীর্ঘদিন ‘আইকনের’ খরা ছিল। মোনেম মুন্না, রিজভি করিম রুমি, রুম্মান বিন ওয়ালি সাব্বির, কায়সার হামিদ, জুয়েল রানা, আলফাজ আহমেদদের পর সেভাবে তারকা তৈরি হয়নি। যেভাবে সাকিব, তামিম, মাশরাফিদের দেখে ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহী হয়েছে তারুণ্য, ফুটবলে তেমন কিছু হয়নি, বহু বছর। হামজারা সেই কাজই করা শুরু করেছেন।
ফুটবলপ্রেমীরা রোমাঞ্চিত হতেই পারেন। শুভদিন বোধ হয় এসেই গেছে।