যাঁদের মিস করবে বিশ্বকাপ

তামিম ইকবাল

বিশ্বকাপ শুধুই স্বপ্নপূরণের গল্প লেখে না। মাঝেমধ্যে স্বপ্নভঙ্গের গল্পও লেখে। বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন লুকিয়ে থাকে প্রত্যেক খেলোয়াড়ের মাঝেই, কিন্তু মাঝেমধ্যেই সে স্বপ্ন পরিণত হয় দুঃস্বপ্নে। চোট কিংবা দলের সমন্বয়ের কারণে এবারের বিশ্বকাপে দেখা যাবে না অনেক তারকাকেই। এবারের বিশ্বকাপে কাদের মিস করবে দর্শকেরা?

গত কয়েক দিনে বাংলাদেশের ক্রিকেটে যা যা হয়েছে, তা নিয়ে নিশ্চয় নতুন করে কিছু বলার নেই। বিশ্বকাপ দলে তামিম ইকবালের থাকা না–থাকা নিয়ে এক সপ্তাহ ধরেই উত্তাল বাংলাদেশ। চোট কিংবা দলের সমন্বয়—তামিম ইকবালের বাদ পড়ার কারণ যা-ই হতো না কেন, বিশ্বের অন্যতম সেরা ওপেনারকে মিস করবে দর্শকেরা।

ইবাদত হোসেন

অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের মতে, এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের একটিই দুর্বলতা—ইবাদত হোসেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে বোলিংয়ের সময় বাঁ পায়ে চোট পান ডানহাতি এই ফাস্ট বোলার। অস্ত্রোপচার করেও বিশ্বকাপের আগে ফিট হতে পারেননি তিনি। যে কারণে ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে থেকেও বিশ্বকাপটা বাসায় বসে দেখতে হবে তাঁকে।

নাসিম শাহ

অভিষেকের এক বছরের মধ্যেই পাকিস্তানের পেস বোলিং ইউনিটের ভরসা হয়ে উঠেছিলেন নাসিম শাহ। বিশেষ করে শাহীন শাহ আফ্রিদির সঙ্গে তাঁর জুটি যেকোনো ব্যাটিং লাইনআপকে কাঁপিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। সেই নাসিম শাহই ছিটকে গেলেন বিশ্বকাপের ঠিক আগে। এশিয়া কাপের সুপার ফোরে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে বোলিং করতে গিয়ে পিঠের পুরোনো চোট আবারও জেগে ওঠে নাসিমের। ফলে শুধু বিশ্বকাপই নয়, সামনের ছয় মাসই মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে তাঁকে।

ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা

অন্য সবার তুলনায় হাসারাঙ্গার বিশ্বকাপ না খেলার বিষয়টা নিশ্চিত হয়েছিল অনেক আগেই। ২৬ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডারকে কেন্দ্র করে আশায় বুক বেঁধেছিল পুরো শ্রীলঙ্কাবাসী। সর্বশেষ লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগের (এলপিএল) প্লে–অফ ম্যাচে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়েন তিনি। যে কারণে খেলতে পারেননি এশিয়া কাপেও। তবে বিশ্বকাপে ফেরা নিয়ে যৎসামান্য আশা ছিল। সেটাও শেষ হয়ে গিয়েছে শ্রীলঙ্কা দল ঘোষণার পরপর।

ঋষভ পন্ত

নতুন বছর উদ্‌যাপন করতে বাড়ি ফিরছিলেন ঋষভ পন্ত। সেই পথেই গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকে ধাক্কা খান তিনি। সেখান থেকে সরাসরি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। পন্তের চোট এতটাই গুরুতর ছিল যে স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করতে পারবেন কি না, সে প্রশ্নই ছিল অনেকের। কিন্তু আস্তে আস্তে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন তিনি। কিছুদিন আগে ব্যাট হাতে নামতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। নিজ দেশে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নটা সংগত কারণেই পিছিয়ে গিয়েছে তাঁর। তবে উইকেটের পেছনে যে পন্তকে মিস করবে ভারত, সে নিয়ে প্রশ্ন নেই কারও।

অক্ষর প্যাটেল

এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে গিয়ে পায়ে চোট পান অক্ষর প্যাটেল। যদিও ধরে নেওয়া হয়েছিল স্বাভাবিক সময়েই ফিরতে পারবেন তিনি। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের জন্য ফিট না হওয়া আবার অন্যদিকে রবীচন্দ্রন অশ্বিনের অসাধারণ ফর্ম, দুইয়ে মিলে নিজের দেশে বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়লেন অক্ষর।

আনরিখ নর্কিয়া

দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার আনরিখ নর্কিয়াকে দুর্ভাগ্যের ঢেঁকি বলতে হবে। টানা দুই বিশ্বকাপের দলে নাম লিখিয়েও বিশ্বকাপে একটি বল করার সুযোগ হয়নি তাঁর। ২০১৯ বিশ্বকাপের ঠিক আগে চোটের কারণে তাঁকে বাদ দেওয়া হয় দল থেকে। এবারও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে গিয়ে চোটে পড়েন নর্কিয়া। পিঠের চোটে পড়ে পরপর দুই বিশ্বকাপ থেকে নাম সরিয়ে নিতে হলো নর্কিয়াকে। দুর্ভাগ্য যেন তাঁর পিছু ছাড়ছে না।

অ্যাশটন অ্যাগার

নর্কিয়াকে যদি দুর্ভাগা বলো তবে অ্যাগারকে কোন বিশেষণে বিশেষায়িত করবে, তা জানা নেই। একটি নয়, দুটি নয়, পরপর তিন বিশ্বকাপে প্রাথমিক দলে জায়গা পেয়েও খেলার সুযোগ হয়নি অ্যাগারের। বিশ্বকাপের ঠিক আগমুহূর্তে চোটের কারণে তাঁকে বাদ দিয়ে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ফর্মের শীর্ষে থাকা মারনাস লাবুশেনকে।