বিপিএলের নতুন তারকা

শেষ হয়েছে বিপিএলের অষ্টম আসর। আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়ে মাঠে নামা অষ্টম আসরের শিরোপা তুলে নিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। ফরচুন বরিশালকে ১ রানে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছে ইমরুল কায়েস-মোস্তাফিজুর রহমানের দল।

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের উৎপত্তি হয়েছে নিজেদের প্রতিভাকে বহির্বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য। তাদের সান্নিধ্যে এসে নিজেকে আরও শাণিত করার জন্য। বিপিএলের প্রতিটি আসর থেকে তরুণ তারকার আবির্ভাব ঘটে। এ মৌসুমে বিপিএল থেকে উঠে আসা কয়েক তারকাকে নিয়েই আজকের লেখা।

মুনিম শাহরিয়ার (ফরচুন বরিশাল)

প্রথম নামটি নিয়ে খুব বেশি আলোচনার দরকার নেই। গত দেড় বছর ধরে বাংলাদেশের ওপেনিং স্লট নিয়ে চলছে পরীক্ষার পর পরীক্ষা। কেউই সে জায়গায় সফলতার দেখা পাচ্ছেন না। নাঈম শেখ, লিটন দাস, সৌম্য সরকার—সবাই ব্যর্থ। বিপিএল দিয়ে ফর্মে ফিরবেন, সে আশায় গুড়েবালি। সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে আশার আলো হয়ে এসেছেন মুনিম শাহরিয়ার।

বিপিএলে প্রথম দিকে সুযোগ পাননি। তবে যখনই সুযোগ এসেছে, দুহাত উজাড় করে দিয়েছেন। অন্য পাশে থাকা ইউনিভার্স বসের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে রান করেছেন। ছয় ম্যাচে ১৫২.১৩ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ১৭৮ রান। গড় প্রায় ৩০। এই ফর্ম ধরে রাখতে পারলে ঘরোয়া লিগের নিয়মিত মুখ অচিরেই জাতীয় দলে ডাক পেয়ে যাবেন।

মাহমুদুল হাসান জয় (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস)

অনেক দিন ধরেই জাতীয় দলের রাডারে ঘুরপাক খাচ্ছিলেন জয়। অনূর্ধ্ব-১৯ দলে ভালো করার সুবাদে জাতীয় দলে ঢোকাটা তার জন্য ছিল সময়ের ব্যাপার। আর সেই জায়গাটাই পাকাপোক্ত করছেন তিনি। ৯ ইনিংসে ১১৫ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ২৩৫ রান। কুমিল্লার হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। জাতীয় দলের ওপেনার সমস্যায় তিনি হতে পারেন নতুন আশা।

মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স)

টুর্নামেন্টের সারপ্রাইজ প্যাকেজ হিসেবে আবির্ভাব হয়েছিলেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। বাঁহাতি এই ফাস্ট বোলারের অভিষেক হয় এবারের বিপিএলে। আর প্রথম ম্যাচেই হ্যাটট্রিক। সবাই পড়িমরি করে লেগেছিল কে এই তারকা, তা খুঁজে বের করতে। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয় বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে বড় নাম অনেক দিন আগে থেকেই।

২০২০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য হতে পারতেন তিনি। শেষ মুহূর্তে চোটে পড়ায় বিশ্বকাপ জেতা হয়নি তাঁর। সে কারণে লাইমলাইটে আসাও হয়নি। বরং লাইমলাইটে না আসাই ভালো হয়েছে তাঁর জন্য। নিজেকে শাণিত করে এনেছেন সবার সামনে। আর তার ফলাফলটা তো সবার সামনেই। আট ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ১৫ উইকেট। একই সঙ্গে তিনি লোয়ার মিডল–অর্ডারে টুকটাক রানও করেছেন।

তানভির ইসলাম (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস)

বাংলাদেশকে বলা হয় বাঁহাতি স্পিনারদের স্বর্গ। একসময় তো জাতীয় দলে তিনজন বাঁহাতি স্পিনার নিয়েও খেলেছে বাংলাদেশ। কালক্রমে এখন সাকিব বাদে কেউই তেমন সুযোগ পান না, সীমিত ওভারের ফরম্যাটে বাঁহাতি স্পিনারদের জাতীয় দলে দেখাই যায় না বলতে গেলে। কিন্তু এবারের বিপিএলে বাঁহাতি স্পিন দিয়ে নজর কেড়েছেন তানভির ইসলাম। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে যৌথভাবে টুর্নামেন্টের সেরা স্পিনার ছিলেন তিনি। ১২ ম্যাচ খেলে পেয়েছেন ১৬ উইকেট।

নাহিদুল ইসলাম (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস)

এ মৌসুমে স্পিনারদের কথা এলে নাহিদুল ইসলামের কথা আসতেই হবে। টুর্নামেন্টের শুরুতে তাঁর বল যেন ছিল বিষের বাঁশি। কেউ ছুঁতেই পারছিলেন না তাঁর বল। যদিও শেষ দিকে মঈন আলীর আগমনে তানভির ইসলামের কাছে জায়গা হারিয়েছিলেন তিনি। তবে তার আগে ১০ ম্যাচে তুলে নিয়েছেন ১১ উইকেট